ঢাকা     বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

ইসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন: সিইসি  

নিজস্ব প্রতিবেদক  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৩, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ০৬:০৬, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০
ইসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন: সিইসি  

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব‌্য রাখছেন সিইসি কে এম নূরুল  হুদা

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ ছাড়াই ৪ কোটি ৮ লাখ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল  হুদা। তিনি বলেন, ‘এই অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।’ 

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ইসি সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিইসি এই দাবি করেন। 

সিইসি বলেন, ‘ইসির নিয়োগ-প্রক্রিয়া ছিল শতভাগ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো দুর্নীতি হয়নি।’ 

নির্বাচন প্রশিক্ষণের জন্য বক্তব‌্য না দিয়ে বিশেষ বক্তা হিসেবে সম্মানী গ্রহণ ইস‌্যুতে  রাষ্ট্রপতির কাছে ৪২ নাগরিকের দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও ফল ঘোষণা নিশ্চিতের জন্য এক যুগের অভিজ্ঞতার আলোকে সব স্তরের প্রায় ৭ লাখ জনবল সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৫ জন বিশেষ বক্তা, উপদেষ্টা ও অন্যান্য প্রশিক্ষণসহ নির্বাচনি প্রশিক্ষণ কর্মপরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়ন করা হয়, যা কমিশন অনুমোদন করে।’  

ইভিএম নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন প্রক্রিয়াকে গতিশীল ও ত্রুটি মুক্ত করার লক্ষ্যে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। তাতে ভোটদান সহজ হয়েছে। দ্রুত ফল প্রকাশও সম্ভব হচ্ছে। ভোটদান পদ্ধতি সহজ স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য করার জন্য বর্তমানে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ সফলতার সঙ্গে ইভিএম ব্যবহার করছে।’

নূরুল  হুদা বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সব ব্যয় অডিটযোগ্য। অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি না হলে ব্যয় করা অর্থ কোষাগারে ফেরত যাবে। সব প্রক্রিয়া দালিলিক প্রমাণভিত্তিক। এই ক্ষেত্রে অনিয়মের কোনও সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, ‘একাদশ সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ১৫ জন বিশেষ বক্তার জন্য কর্ম পরিকল্পনায় দুই কোটি টাকা বরাদ্দই ছিল না। সেখানে নির্বাচন কমিশনারদের বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তৃতা দেওয়ার নামে দুই কোটি টাকার মতো আর্থিক অসাধারণ অনিয়ম মর্মে অভিযোগ অসত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।’ 

নিয়মবহির্ভূতভাবে বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করার অভিযোগ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তাদের প্রাধিকারভুক্ত একটি জিপ, একটি কার ও তার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ জ্বালানি ব্যবহার করে। নতুন গাড়ি বিলাসবহুল তো নয়ই, অতি সাধারণ মানের। নির্বাচন কমিশন গাড়িবিলাস করেনি, বরং তিন বছর ছয় মাস প্রাধিকারভুক্ত গাড়ি পায়নি। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা প্রকল্প থেকে সচিবালয়ের জন্য দেওয়া গাড়ি শেয়ার করে ব্যবহার করেছেন মাত্র। কাজেই নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

ইভিএম ক্রয় ও ব্যবহারে অসদাচরণ ও অনিয়মের অভিযোগের জবাবে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ইভিএম আমদানি করেনি। পিপিআর অনুসরণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তা কেনা হয়েছে। ইভিএম কেনার কোনো বিল কমিশনের কাছে ন্যস্ত হয় না।  এই কাজে নির্বাচন কমিশন কোনো আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকে না। এখানে দুর্নীতির কোনো প্রশ্ন ওঠে না।’

জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ অনিয়মের অভিযোগের জবাবে সিইসি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশন।  বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। নির্বাচন নিয়ে তারা কোনো অভিযোগ তোলেননি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ দল সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছে। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রচারেও কোনো গুরুতর অনিয়ম ও অসদাচরণের খবর আসেনি। নির্বাচন কমিশন ভোটে অনিয়ম সংক্রান্ত যেকোনও অভিযোগ আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়।’

সংবাদ সম্মেলনে আর উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদত হোসেন চৌধুরী।  

হাসিবুল/এনই 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়