ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যু কমছে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

মেসবাহ য়াযাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪৭, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৯:৪৯, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১
করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যু কমছে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

ফাইল ছবি

৯২ দিন পর ৪ সেপ্টেম্বর করোনা শনাক্তের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমেছে। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের হার ছিল ৯.৮২ শতাংশ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৭.৪৬ শতাংশ। মৃতের সংখ্যা ৫১ জন। কিন্তু এই আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিমাণ কম দেখে আমাদের খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।

তিনি বলেন, রূপান্তরের মাধ্যমে করোনার নতুন ধরন দেখা দেওয়ার আশঙ্কা সব সময় থাকে। তাই আগের মতোই বাসার বাইরে বের হলে সবাইকে সর্বাত্মক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।  মাস্ক পরতে হবে।  সময় মতো টিকা নিতে হবে। পর্যাপ্ত টিকা মজুত  রয়েছে। সবাইকে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিতে হবে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মঞ্জুর বলেন, এটা নিঃসন্দেহে আনন্দের খবর যে, করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমছে। তাই বলে খুশিতে স্বাস্থ্যবিধি মানা বন্ধ করা যাবে না। তাহলে পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। সবাইকে আগের মতোই বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, সমাবেশ এড়িয়ে চলাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। দ্রুত টিকা নিতে হবে।  টিকা নেওয়ার পরও সতর্ক থাকতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মৃত্যুর সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। আক্রান্ত বাড়লে মৃত্যু বাড়বে। আক্রান্ত কমলে মৃত্যুও কমবে। যদিও গত এক মাস ধরে বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে। আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এলাকার দেশগুলোতে সংক্রমণের হার কমেছে। 

অপরদিকে, ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগর এলাকার সংক্রমণ একই পরিস্থিতিতে রয়েছে। কেবল উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে সংক্রমণ আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেড়েছে বলেও জানায় সংস্থাটি।

শনাক্ত ও মৃত্যু কমে আসাকে ভালো লক্ষণ বলছেন স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ ও রোগতত্ত্ববিদরা। শনাক্ত ও মৃত্যুহার কমার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলেও ধারণা করছেন এই বিশেষজ্ঞরা। ইতোমধ্যে দেশে ২ কোটি মানুষকে প্রথম ডোজ এবং ১ কোটিরও বেশি মানুষকে ডাবল ডোজ করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। এসব মানুষরা পুনরায় আক্রান্ত হলেও রোগের তীব্রতা কম হবে। হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনও পড়বে না বলে এই বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।

সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে সংক্রমণ বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে বলেও মনে করছেন আইআইডসিআর পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন। 

তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কারণে জনসমাগম বাড়বে।  তাতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে। বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগের চিন্তার মধ্যে আছে বলেও জানান এই পরিচালক।

অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, করোনার অন্য আরেকটি ঝুঁকিও রয়েছে। সেটি হচ্ছে ভাইরাসটির রুপান্তর। এখনও এই বিষয়ে রোগতত্ত্ববিদেরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।  রুপান্তরের মাধ্যমে নতুন ধরন দেখা দেওয়ার আশঙ্কা সব সময়ই থাকে। যেমন, সর্বশেষ ডেল্টা ধরন কয়েক দিন আগেও বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ ও মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল।

প্রসঙ্গত, গত ১২ সেপ্টেম্বর ২৫ হাজার ৭৪ জনের পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৭১ জন। আক্রান্তের হার ৭.৪৬ শতাংশ। এই নিয়ে করোনায় মোট আক্রান্ত হলেন ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪১৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ৫১ জন। এ পর্যন্ত সারা দেশে করোনায় প্রাণহানি ঘটেছে ২৬ হাজার ৯৩১ জনের।

গত ২৮ আগস্ট থেকে দেশে করোনার সংক্রমণের হার কিছুটা নিম্নমুখী। কমছে মৃত্যুও। সর্বশেষ গত ২৮ জুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে মারা গেছেন ১০৪ জন। এর ৬০ দিন পরে ২৮ আগস্ট করোনায় মৃত‌্যু একশ’ জনের নিচে নেমে আসে। সেদিন মারা যান ৮০ জন। ২৮ আগস্ট থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা আর ১০০ ছাড়ায়নি। নিম্নমুখী হয়েছে। 

ঢাকা/মেয়া/এমএম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়