ঢাকা     শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ ||  শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

দেশে বায়ুদূষণে বছরে ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৬, ৪ ডিসেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৫:৫৮, ৪ ডিসেম্বর ২০২২
দেশে বায়ুদূষণে বছরে ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু

দেশে প্রতি বছর উচ্চমাত্রার বায়ুদূষণের কারণে আনুমানিক ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে মানুষের শ্বাসযন্ত্র, যার প্রভাবে শ্বাসকষ্ট, কাশিসহ নানা জটিলতা তৈরি হয়ে থাকে। বায়ুদূষণে বছরে জিডিপির ক্ষতি হচ্ছে ৩.৯ থেকে ৪.৪ শতাংশ।

রোববার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী এবং স্বাস্থ্য সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংকের হেলথ স্পেশালিস্ট ওয়ামেগ আজফার রাজাসহ অনেক।

বিশ্বব্যাংকের ‘ব্রিদিং হেভি : নিউ ইভিডেন্স অন এয়ার পলিউশন অ্যান্ড হেলথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ঢাকা ও সিলেটের শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বহিরাঙ্গন বায়ুদূষণের প্রভাব মূল্যায়ন করা হয়েছে।

এতে দেখা গেছে, ঢাকা শহরে বড় নির্মাণ এবং ক্রমাগত যানবাহন চলাচলের এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। ঢাকায় বায়ুদূষণের অবস্থা হচ্ছে এয়ার কোয়ালিটি নির্দেশিকা থেকে গড়ে ১৫০ শতাংশ বেশি, যা প্রতিদিন প্রায় ১.৭ শতাংশ ধূমপানের সমতুল্য। মাত্রার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘনত্ব বৃহত্তর ঢাকার ইটভাটার কাছে পাওয়া যায়, যা সহনীয় মাত্রার চেয়ে ১৩৬ শতাংশ বেশি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইটভাটাসহ দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় প্রধান নির্মাণ এবং যানজটের কাছাকাছি বসবাসকারী শিশুদের মধ্যে নিম্ন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এ ছাড়া সিলেট বিভাগ, যেখানে দেশের সবচেয়ে বিশুদ্ধ বায়ু রয়েছে; সেখানেও ডব্লিউএইচও নির্দেশিত জিআই এম ডব্লিউ পিএম-২ ঘনত্বের মাত্রা ৮০ শতাংশ বেশি। এটি প্রতিদিন ১২টি সিগারেট খাওয়ার সমান।

ডব্লিউএইচও নির্দেশিত মাত্রার তুলনায় পিএমএএসএ’র সংস্পর্শে এক শতাংশ বৃদ্ধির ফলে একজন ব্যক্তির শ্বাসকষ্টের সম্ভাবনা ১২.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। ভেজা কাশি হওয়ার সম্ভাবনা ১২.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং নিম্ন শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৮.১ শতাংশ বেশি হতে পারে। বায়ুদূষণ মানসিক স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ডব্লিউএইচও নির্দেশিত মাত্রার উপরে পিএম-২এর সংস্পর্শ এক শতাংশ বাড়লেই হতাশাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ বেড়ে যায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জরুরি পদক্ষেপগুলোর মধ্যে নিরাময়মূলক যত্ন দেওয়ার জন্য জনস্বাস্থ্য পরিষেবা প্লাটফর্মের উন্নতি এবং প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রচার অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। বায়ুমানের ডেটার নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং আরও গবেষণা বায়ুদূষণের স্বাস্থ্যের প্রভাবগুলো মোকাবিলা করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা তৈরি করতে সহায়তা করবে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চেন বলেন, বায়ুদূষণ শিশু থেকে বয়স্ক সবাইকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলে। ২০১৯ সালে বায়ুদূষণ ছিল বাংলাদেশে মৃত্যু ও অক্ষমতার দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ। ওই বছর মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ৯ থেকে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ খরচ করার পরেও সে বছর দেশে অন্তত ৭৮ হাজার ১৪৫ জন মারা গেছেন।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়