ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মনিপুর স্কুলে নিয়ম ভেঙে নিয়োগের চেষ্টার অভিযোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫২, ১৮ জুলাই ২০২৫   আপডেট: ১৫:৪৬, ১৮ জুলাই ২০২৫
মনিপুর স্কুলে নিয়ম ভেঙে নিয়োগের চেষ্টার অভিযোগ

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। প্রতিষ্ঠানের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অ্যাডহক কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা ও বোর্ডের বিধান উপেক্ষা করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবক ও সচেতন মহল।

জানা গেছে, বর্তমানে মনিপুর স্কুল পরিচালনা করছে অ্যাডহক কমিটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক তাহমিনা আক্তার গত ৩০ এপ্রিল ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চিঠির মাধ্যমে এ দায়িত্ব পান। এরপরই তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেন, যা বোর্ডের প্রবিধান অনুযায়ী অবৈধ।

শিক্ষা বোর্ডের প্রণীত প্রবিধান অনুযায়ী, কোনো অ্যাডহক কমিটি অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সহকারী শিক্ষক, গ্রন্থাগারিক, সুপারিনটেনডেন্ট বা অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারবে না। শুধু বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)-এর সুপারিশপ্রাপ্ত তালিকাভুক্ত প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

এসব বিধি-বিধান উপেক্ষা করে মনিপুর স্কুল সম্প্রতি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে বাংলা মিডিয়ামে ৭ জন, ইংরেজি ভার্সনে ৫ জন সহকারী শিক্ষক, কলেজ শাখায় ৩ জন শিক্ষক, ২ জন ল্যাব সহকারী ও ৬ জন কম্পিউটার ল্যাব সহকারী নিয়োগ দেওয়া হবে। আবেদনপত্র জমার শেষ তারিখ ২০ জুলাই, পরীক্ষা হবে ২৬ জুলাই।

বিদ্যালয়ের একাধিক অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, স্কুলে কোনো শিক্ষক সংকট নেই। বরং গত কয়েক বছরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে, ফলাফলেও অবনতি হয়েছে। সে অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ‘পর্যাপ্ত’ বলছেন তারা। 

এদিকে অভিভাবকরা অভিযোগ তুলেছেন, বিদ্যালয়ের প্রয়োজনে কেনা গাড়ি বর্তমানে কমিটির সভাপতি ব্যক্তিগত হিসেবে ব্যবহার করছেন। যেখানে গাড়ির গায়ে ‘স্কুল গাড়ি’ লেখা থাকার কথা, সেখানে সাঁটানো রয়েছে অধ্যাপক তাহমিনা আক্তারের নাম।

নাম না প্রকাশের শর্তে এক অভিভাবক বলেন, “বিদ্যালয়ের সম্পদ এখন ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে। শিক্ষার্থীর উন্নয়নের বদলে চলছে পদ-পদবির অপব্যবহার।”

সালাউদ্দীন নামে এক অভিভাবকের ভাষ্য, ‘‘শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি যেখানে শিক্ষার উন্নয়নে ব্যয় হওয়ার কথা, সেখানে এখন চলছে সম্মানির নামে অনিয়মের উৎসব।’’

অভিভাবকরা বলছেন, “মনিপুর স্কুল যেন কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।” তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডকে এই অনিয়ম তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে তাহমিনা আক্তার বলেন, “ইমার্জেন্সি প্রয়োজনে নিয়োগ দেওয়া যায়। তবে আপাতত নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়েছে। এছাড়া মিটিং হলে সবাই সম্মানি পান, আমাকেও দেওয়া হয়। এটি ব্যতিক্রম কিছু নয়। আর নিরাপত্তার কারণেই গাড়িতে আমার নামের স্টিকার লাগানো হয়েছে। কারণ, আমি প্রায় সময়ই এই গাড়ি ব্যবহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করি। যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে, তাই চিহ্নিত করা জরুরি মনে হয়েছে।”

ঢাকা/এএএম/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়