ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলন

বাধ্যতামূলক জবাবদিহিতাপূর্ণ ফোরাম গঠনের আহ্বান বাংলা‌দেশের

বি‌শেষ প্রতি‌বেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৫, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫  
বাধ্যতামূলক জবাবদিহিতাপূর্ণ ফোরাম গঠনের আহ্বান বাংলা‌দেশের

সমাজকল‌্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

বিশ্বব্যাপী বাধ্যতামূলক জবাবদিহিতাপূর্ণ ফোরাম গঠনের আহ্বান জানি‌য়ে‌ছে বাংলা‌দেশ।

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনের ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সমাজকল‌্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এ আহ্বান জানান।

বুধবার সমাজকল‌্যাণ মন্ত্রণাল‌য়ের এক প্রেস‌ বিজ্ঞ‌প্তি‌তে এ তথ‌্য জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে।

এ‌তে বলা হয়, জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনের ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলা‌দে‌শের প‌ক্ষে সমাজকল‌্যাণ মন্ত্রণাল‌য়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে।

উ‌পদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে, জলবায়ু সংকটে এবং নারীর অর্থনৈতিক অংশগ্রহণে সাফল্য যেমন দেখেছি, ঠিক তার বিপরীত অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়েও যেতে দেখেছি। সমস্যাটি দৃষ্টিভঙ্গির নয়, বরং অসম জাতীয় অগ্রাধিকারের। তাই আমাদের বিবেক এবং হৃদয়ের ভালোবাসা দিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি যত্নশীল সভ্যতার সমাজ গড়ে তোলার দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’’

বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষায় লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা, লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতি, নারীর শ্রমশক্তির বাজারে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন স্কোর অর্জন অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। তবুও আমরা জানি যে এটি যথেষ্ট নয়। সামাজিক রীতিনীতি, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং বিশ্বব্যাপী নারীর ভাষাজ্ঞান ও স্কীলের সংকট এখনও নারীদের পিছিয়ে রাখে। আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো রূপান্তর- স্বেচ্ছাসেবী অঙ্গীকার থেকে বাস্তবায়নযোগ্য অঙ্গীকারে স্থানান্তর।’’

শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘‘নারীরা বাংলাদেশের ইতিহাসকে রূপ দিয়েছেন। আমাদের ১৯৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত যা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সংস্কারের পথ প্রশস্ত করেছে। এই চেতনার দ্বারা পরিচালিত বাংলাদেশ ২০২৫-২০৩০ সালের জন্য চারটি প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করতে পেরে গর্বিত: ১. নারী ও শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে  ২০২৫ সালের মধ্যে একটি যৌন হয়রানি প্রতিরোধ অধ্যাদেশ প্রণয়ন, ২. ২০২৭ সালের মধ্যে একটি গৃহস্থালি উৎপাদনমূলক স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট প্রতিষ্ঠা করা যাতে অবৈতনিক সেবামূলক কাজের মূল্য নির্ধারণ করা যায়, ৩. ক্ষমতার টেবিলে নারীর সমান আসন নিশ্চিত করা, ৪.জবাবদিহিতার সাথে সমতাভিত্তিক অর্থায়ন। এই চারটি নিরাপত্তা, স্বীকৃতি, সমতা এবং জবাবদিহিতা প্রকৃত পরিবর্তনের জন্য আমাদের এজেন্ডা গঠন করে। কিন্তু কোনো দেশ একা সফল হতে পারে না। বাংলাদেশ একটি বাধ্যতামূলক বিশ্বব্যাপী জবাবদিহিতা কাঠামোর আহ্বান জানাচ্ছে।’’

তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, ‘‘বাংলাদেশ গর্বিত যে, দক্ষিণ এশিয়ায় উদীয়মান নেতৃত্ব হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। টেকসই নীতিগত ব্যবস্থা, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কেয়ারগিভিং ব্যবস্থা এবং পরিসেবাগুলোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কর্মসূচি শুরু করেছি। বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো তরুণদের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতার বিকাশ ঘটানো এবং দক্ষতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান নিশ্চিতের জন্য কাজ করা।’’

কর্মশক্তির উন্নয়ন এবং সকলের জন্য মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করার জন্য সেবাখাতের ব্যাপক প্রচার অপরিহার্য বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

উপদেষ্টা মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গতিশীলতা রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক পরিবর্তনের মধ্যে বিদ্যমান উদ্যোগ বাস্তবায়নে এবং রূপান্তরমূলক সেবা ব্যবস্থাপনার দিকে দেশের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
প্রতিনিধি দলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ফিরোজ উদ্দিন খলিফা, যুগ্মসচিব দিলারা বেগম, উপসচিব তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া প্রমূখ।   

ঢাকা/নঈমুদ্দীন//

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়