ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

করোনায় আবাসিকে লোডশেডিং, ডিপিডিসি বলছে ‘না’

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২১, ৫ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
করোনায় আবাসিকে লোডশেডিং, ডিপিডিসি বলছে ‘না’

মহামারি করোনার সংক্রমণ রোধে দেশে চলছে টানা ২১ দিনের সাধারণ ছুটি।  এ কদিনে বেড়েছে বাসাবাড়িতে অবস্থানকারী মানুষের সংখ্যা। তারা ব্যবসায়িক-বাণিজ্যিক-পেশাগত অনেক কাজও বাসায় বসে করছেন। এতে অফিস-আদালত ও শিল্প কারখানায় বিদ্যুতের চাহিদা কমলেও আবাসিক এলাকায় বেড়েছে কয়েকগুণ।  গত দুই-তিন দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিন নির্দিষ্ট সময় পরপর লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে। অথচ, আবাসিকে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ার কথা স্বীকার করলেও লোড-শেডিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকাল ৬টার দিকে রামপুরার ওমর আলী লেন এলাকায় লোডশেডিং শুরু হয়। এ সময় পর ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে দায়িত্ব কর্মকর্তা জানান, ট্রান্সমিশন জটিলতার কারণে সমস্যা হয়েছে।  ৩০ মিনিট পর বিদ্যুৎ চলে আসবে।পরদিন শনিবারও একই ঘটনা। এদিন একই এলাকায় বিকাল সাড়ে ৪টা  থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত লোডশেডিং চলে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে  ডিপিডিসি’র নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) এটিএম হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ওই এলাকায় বৈদ্যুতিক স্পার্কের খবর পেয়েছিলাম। সেটা ঠিক করার জন্য কিছুক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকতে পারে।  তবে লোডশেডিং নেই রাজধানীতে।’

কিন্তু খোঁজ নিয়ে ধানমন্ডি, শংকর, মুগদা, বাসাবো, উত্তর কাফরুল, মিরপুর-১০সহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় শনিবার (৫ এপ্রিল) সারাদিনে কয়েক দফা লোডশেডিংয়ের খবর পা্ওয়া গেছে। এর মধ্যে কয়েক জায়গায় একাধিকবার লোডশেডিং  খবর জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিপিডিসি’র ডিপিডিসি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বিষয়গুলোর খোঁজ নিতে হবে।’এদিকে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড দাবি করছে, দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ভালো। ঘাটতি নেই। লোডশেডিং হলেও তা ট্রান্সমিশন বা অন্য কোনো কারণে হতে পারে।বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিকল্প ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা এবং বোর্ডের সচিব সাইফুল ইসলাম আজাদ বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি নেই।’

তাহলে ঢাকায় লোডশেডিং কেন হচ্ছে—জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘লোডশেডিং-এর সংবাদ আমরা পাইনি। তবে বিতরণের দায়িত্ব পালন করে ডিপিডিসি ও ডেসকো। তারা ভালো বলতে পারবে। ’ তিনি  আরও বলেন, ‘করোনার সময়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।’ সাইফুল ইসলাম আজাদ আরও বলেন, ‘খাতা-কলমে হয়তো দেখা যাবে চাহিদার থেকে কিছু বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতচিত্র তা নয়। আমাদের সক্ষমতা আরও অনেক বেশি, এমনকি কয়েকদিন আগেও আরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন হতো। এখন চাহিদা নেই, তাই উৎপাদনও কমানো হয়েছে। জ্বালানিসহ অন্যান্য খরচ কম রাখা হচ্ছে।’

এদিকে, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) পরিচালক (ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অপারেশন) মো. মুকুল হোসেন জানান, শহরের মতো পল্লী অঞ্চলের গ্রাহকরাও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘একসময় বলা হতো, শহরে বিদ্যুতে স্বস্তি থাকলেও পল্লী অঞ্চলে বিদ্যুতের দুর্ভোগ রয়েছে। এ কথা এখন আর শোনা যায় না। কারণ বিদ্যুতের আওতাধীন সবাই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছেন।’ উল্লেখ্য, গত ২ মার্চের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ১১০টি। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৭ হাজার ৮৪৫ মেগাওয়াটের বেশি। এর মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ৯ হাজার ৬২৫ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৫৬ লাখ, এবং সেচ সংযোগ সংখ্যা ১ লাখ ৯০ হাজার।


ঢাকা/হাসান/এনই

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়