ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বন্ধ থাকছে দূরপাল্লার বাস, আন্দোলনের পরিকল্পনা পরিবহন শ্রমিকদের

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ১৬ মে ২০২১   আপডেট: ১৬:১৯, ১৬ মে ২০২১
বন্ধ থাকছে দূরপাল্লার বাস, আন্দোলনের পরিকল্পনা পরিবহন শ্রমিকদের

ফাইল ফটো

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। ১৬ মে মধ‌্য রাত থেকে ২৩ মে পর্যন্ত চলমান বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। এ সময়ে চলবে না দূরপাল্লার বাস। দূরপাল্লার বাস চলাচলের অনুমতির দাবিতে আন্দোলনের পরিকল্পনা করছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

রোববার (১৬ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে লকডাউন বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর আগে লকডাউন বাড়ানোর বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আন্তঃজেলা বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল করবে না লকডাউনের মধ্যে। কখন থেকে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করবে, সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘ঈদের দিন আমরা দূরপাল্লার বাস চালানোর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম, সরকার এবার লকডাউন না বাড়িয়ে ঈদে বাড়ি যাওয়া যাত্রীদের ঢাকায় ফেরার জন্য দূরপাল্লার বাস চালু করা উচিত ছিল। তা না করায় আমরা আবার আন্দোলনে যাব।’

তিনি বলেন, ‘আগামী সোমবার সড়ক পরিবহনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রীর কাছে আমাদের পাঁচটি দাবি সম্বলিত চিঠি দেব। কাজ না হলে আমরা প্রতীকী অনশন, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করব সারা দেশে।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ঈদের আগে দূরপাল্লার বাস চলাচল করতে দেয়নি। এখন আবার প্রজ্ঞাপন দিয়ে লকডাউনের সময় বাড়িয়েছে। এখনও দূরপাল্লার বাস চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আমরা পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা খুব কষ্টে আছি। বাস বন্ধ থাকায় প্রতিদিনই আমাদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। আমরা অনেকেই শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছি না। তাই, শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে হলেও বাস চলাচল করতে দেওয়া উচিত ছিল। দূরপাল্লার বাসে সাধারণত স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়ে থাকে। তাই, সংক্রমণের ঝুঁকি কম দূরপাল্লার বাসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে ঈদের দিন আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। আগামীকাল পাঁচ দফা দাবি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানাব। তার পরে পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী কর্মসূচিতে যাব।’

ঢাকা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সম্পাদক ও ঢাকা জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্বাস উদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘করোনায় বিধিনিষেধের মধ্যেও মার্কেট, শপিংমলসহ সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গণপরিবহন চালুর ক্ষেত্রে নানা টালবাহানা চলছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ৫০ লাখ পরিবহন শ্রমিক। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি। সরকার দূরপাল্লার গণপরিবহন চালু না করলে জনভোগান্তি বাড়বে। বাস না ছাড়লে ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহনে তারা গাদাগাদি করে ঢাকায় ফিরবে। তাতে কি করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে?’

তিনি বলেন, ‘সড়ক পরিবহন খাতে আমাদের পাঁচ দাবি হচ্ছে—স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার পরিবহনসহ সব গণপরিবহন এবং পণ্যবাহী পরিবহন চলাচলের সুযোগ দিতে হবে। লকডাউনের কারণে কর্মহীন সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা এবং লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মালিকদের যানবাহন মেরামত, কর্মচারী ও শ্রমিকের বেতন, ভাতা ও বোনাস ইত্যাদি দেওয়ার জন্য নামমাত্র সুদ ও সহজ শর্তে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিতে হবে। সারা দেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোয় পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকায় ওএমএসের চাল বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। করোনার কারণে গণপরিবহন ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগের বিপরীতে সব ব্যাংক ঋণ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ মওকুফসহ কিস্তি চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করতে হবে। ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে শ্রেণিকৃত ঋণগুলো নিয়মিত করার সুযোগ দিতে হবে এবং বিধিনিষেধে বন্ধ থাকার সময় গাড়ির ট্যাক্স-টোকেন, রুট পারমিট ফি, আয়করসহ সব ধরনের ফি, কর ও জরিমানা মওকুফ করে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাগজপত্র হালনাগাদের সুযোগ দিতে হবে।

ঢাকা/হাসিবুল/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়