ঢাকা     সোমবার   ০৬ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

উপকূলে ঈদ : সংকটেও আনন্দ ভাগাভাগি

রফিকুল ইসলাম মন্টু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৩, ২২ এপ্রিল ২০২৩   আপডেট: ১১:৩৩, ২২ এপ্রিল ২০২৩
উপকূলে ঈদ : সংকটেও আনন্দ ভাগাভাগি

ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। বছরের ৩৬৫টি দিন থেকে এটি যেন পৃথক একটি দিন। এই দিন ঘিরে রাষ্ট্র থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে থাকে নানা আয়োজন। ঈদ ঘিরে শহর-নগর-গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের বর্ণিল ছোঁয়া। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো উপকূলও মিলিত হয় ঈদ-আনন্দে। সারা বছর হাজারো সংকটের মধ্যে ডুবে থাকা বাংলাদেশের উপকূলের মানুষেরও ঈদের দিনের জন্য থাকে নিজস্ব পরিকল্পনা। সাধ্য অনুযায়ী নতুন কাপড়, নতুন জুতা, একবেলা ভালো খাবার আয়োজনের মধ্য দিয়ে তারা দিনটি পালন করেন। এভাবেই একদিকে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, অন্যদিকে আনন্দে কেটে যায় ঈদ।  

‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ — ঈদের চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা এই গানের সুরধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। এই গানের সুরধ্বনি উপকূলের প্রান্তিকের মানুষদেরও উৎসবে উজ্জীবিত করে। উপকূলের নারী মৎস্যজীবী আলেকজান বিবি, সাবেকুন নাহার কিংবা শ্রমজীবী চান মিয়া, নুরুদ্দিনদের মতো মানুষদের যুক্ত করে ঈদ-আনন্দে। এই শ্রমজীবী মানুষগুলো হাজারো সংকটের মধ্যেও ঈদের দিন পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেন।  

বিভিন্ন পেশায় কর্মব্যস্ত উপকূলের মানুষের মধ্যে ঈদের আমেজ শুরু হয় ঈদের আগের দিন থেকেই। তারা নিজ নিজ কাজ থেকে বিরতি নেন; যারা অন্যের অধীনে কাজ করেন, তারা ছুটি নেন। সবারই একটি লক্ষ্য থাকে পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদের খুশি ভাগ করে নেয়ার। ঈদের দিনের কর্মসূচির মধ্যে ভোরে জামাতে ঈদের নামাজ আদায়, প্রয়াত স্বজনদের কবরস্থান জিয়ারত, আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করা, যুবক-শিশুদের খেলাধুলা, আড্ডা ইত্যাদি প্রধান হয়ে ওঠে। একটি কর্মহীন দিনে উপকূলের শ্রমজীবী মানুষেরা উৎসবে-অবসরে কাটিয়ে দেন দিনটি।      

হাজারো সংকটেও ঈদ আসে 

‘উপকূল’ শব্দটি কল্পনায় এলেই এক বিপন্ন জনপদের চিত্র ভেসে ওঠে। ভৌগোলিক কারণেই এই জনপদের মানুষ ডুবে থাকে বহুমূখী সমস্যায়। কিন্তু ঈদের এই বিশেষ দিনটিতে তারা যুক্ত হন আনন্দ-উৎসবে। যার যতটুকু সাধ্য, তা নিয়ে ঈদের আয়োজন করেন তারা। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের আলেকজান বিবি মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঈদের দিনে তারও যেন আনন্দের কমতি নেই। মৎস্যজীবী কার্ডে পাওয়া সরকারি চালের কিছুটা বিক্রি করে তিনি কিনেছেন সেমাই-চিনি ইত্যাদি। মেয়ের জামাইকে কিনে দিয়েছেন শার্ট এবং লুঙ্গি। আলেকজানের সাধ অনেক; কিন্তু সাধ্য সীমিত। তবুও ঈদের আনন্দ এসেছে তার ঘরে। একই গ্রামের সাবেকুর নাহার ঘুটে (গরুর গোবরে তৈরি জ্বালানি) বিক্রি করে সামান্য অর্থ উপার্জন করেন। সেখান থেকে অর্থ জমিয়ে এবারের ঈদের চিনি, সেমাই এবং ছেলেমেয়েদের জন্য নতুন কাপড় কিনেছেন। 

ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন ঢালচরের বাসিন্দা নুরুদ্দিন হাজারো সংকটের মধ্যেও ঈদ  আনন্দ-উৎসবে যুক্ত হন। মৎস্যজীবী পেশায় প্রতি বছর একভাবে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা থাকে না নুরুদ্দিনের। বর্তমানে তিনি লক্ষাধিক টাকা দেনার বোঝা নিয়ে চলছেন। পহেলা মে থেকে ইলিশ ধরার মৌসুম শুরু হবে। এই সময়ে মৎস্যজীবী পেশার মানুষেরা সংকটকাল অতিক্রম করছেন। নুরুদ্দিন তাদেরই দলে। কিন্তু ঈদের প্রস্তুতি নিয়ে আলাপকালে তিনি জানান, অন্যান্য বারের মতো এবারও তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদ করবেন। নুরুদ্দিনের ছেলে মো. ইউসুফ শহরে হার্ডওয়্যারের দোকানে কাজ করেন। ছেলে বাড়ি আসার সময় বাবা-মা এবং ভাই বোনদের জন্য নিয়ে এসেছেন নতুন কাপড়। নুরুদ্দিন খাবার সামগ্রী কিনেছেন ঈদের দিনের জন্য। ঈদের এই পরিবারে ব্যয় হবে প্রায় দশ হাজার টাকা।
নুরুদ্দিন বলেন, ‘ঈদ পবিত্র দিন। আনন্দের দিন। আমরা যতই সংকটে থাকি না কেন, ঈদ পালন করতে হয়। হয়ত যতটা দরকার ততটা খরচ আমরা করতে পারি না। সীমিত সাধ্যের মধ্যে আমরা পরিবারের সদস্যদের মাঝে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই।’  

দুর্যোগের ক্ষত নিয়ে ঈদ 

উপকূলের কোনো কোনো এলাকা প্রাকৃতিক দুর্যোগে খুব বেশি ক্ষত-বিক্ষত হয়। দুর্যোগপ্রবণ ওইসব এলাকাগুলোতে ঈদের আনন্দ কিছুটা ম্লান হয়; তবুও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরাও দুর্যোগের ক্ষত নিয়ে ঈদ করে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা অঞ্চল তেমনই দুর্যোগপ্রবণ। ওই অঞ্চলের মানুষদের কাছে ঈদ  আসে ব্যতিক্রমীভাবে। একদিকে তাদের সংসার চালানোর কষ্ট, অন্যদিকে ঈদের আনন্দের সাথে যুক্ত হওয়ার তাগিদ।   

সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর এলাকাটি ২০২০ সালে সাইক্লোন আম্ফানের পর থেকে প্রায় এক বছর লবণ পানির তলায় ছিল। সাইক্লোনে বহু মানুষের বাড়িঘর ভেসে গিয়েছিল। সাইক্লোনের মাত্র তিনদিন পরে ছিল ঈদুল ফিতর। ফলে সংকটাপন্ন মানুষেরা খুব বিপদে পড়েন। প্রতাপনগরের কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের আবদুস সামাদ হাওলাদার বলেন, ‘গত দুই বছর আমাদের ঈদের আনন্দ ম্লান করে দিয়েছিল সাইক্লোন আম্ফান। এবছর সংকট অনেকটা কেটেছে। এবছর হয়তো আমাদের ঈদ আরেকটু ভালো হবে।’

২০০৯ সালের সাইক্লোন আইলা দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের অনেক স্থানের মানুষের ঈদের আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে। আইলার আঘাতে বিপন্ন খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগি ঝুলন্ত গ্রাম। সেখানকার সারিবদ্ধ বাড়িগুলো শিবসা নদীর তীরে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। এই গ্রামের মানুষেরা প্রতিবছরই ঈদ আনন্দে মিলিত হয় দুর্যোগের ক্ষত নিয়ে। কালাবগি গ্রামের বাসিন্দা হালিমা বেগম বলেন, ‘ইদ মানে আনন্দের দিন। আমরা সারা বছর সংকটে থাকি। টানাটানির সংসারেও ঈদের দিনের জন্য আয়োজন করি। ছেলেমেয়েদের জন্য নতুন কাপড় যতটা সম্ভব কিনি। ঈদে ছেলেমেয়ের আবদার হয়তো পূরণ করতে পারি না। কিন্তু সাধ্যমত ওদের দেওয়ার চেষ্টা করি।’ 

সকালে সেমাই-ফিরনি, বিকালে পোলাও-খিচুরি 

উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় ঈদের দিন ভোরে সেমাই এবং ফিরনির প্রচলন যুগ যুগ ধরে। দুপুরে খাবারের তালিকায় যোগ হয় পোলাও এবং খিচুরি। ঈদের দিনের খাওয়া দাওয়া পূর্ব, মধ্য এবং পশ্চিম উপকূলে প্রায় একই ধরনের। তবে এলাকা ভেদে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নতা আছে। পূর্ব উপকূলের চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ইত্যাদি এলাকায় ঈদের দিনের খাবারের বড় অংশ জুড়ে ছিল রকমারী পিঠা। কিন্তু কালের পরিক্রমায় ঈদের দিনের সেই পিঠা আর নেই। অন্যদিকে মধ্য উপকূলে সেমাই এবং ফিরনির পাশাপাশি ‘মলিদা’ নামে একটি খাবারের প্রচলন ছিল। পানীয় জাতীয় খাবারটি তৈরি হতো চালের গুঁড়া, নারিকেল, চিরা, মুড়ি ইত্যাদির সমন্বয়ে। মলিদা এখন আর অনেক বাড়িতেই তৈরি হয় না। এক সময় উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় আখের গুড় অথবা খেজুরের গুড়ের শিননি রান্না করা হতো ঈদের দিন। কিন্তু সেই প্রচলন এখন আর নেই। উপকূলের অনেক স্থানে এক সময় হাতে তৈরি সেমাইয়ের প্রচলন ছিল। অধিকাংশ বাড়িতে হাতে তৈরি সেমাইয়ের জন্য ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে কাজ শুরু হতো। সেমাই তৈরি করে তা শুকানো হতো। ঈদের দিনে সেই সেমাই ছিল খুব মজাদার। এখন হাতে তৈরি সেমাই প্রায় বিলুপ্ত।      

সম্প্রীতির বন্ধন    

উপকূলের ঈদ  সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দেয়। অবস্থাপন্ন মানুষ ঈদের জাকাত-ফিতরায় তাদের প্রতিবেশী কিংবা নিকট আত্মীয়দের কথা মনে রাখেন। অনেক এলাকায় প্রচলন আছে নিকট আত্মীয়দের জন্য ঈদে নতুন কাপড় এবং খাদ্যসামগ্রী কিনে দেওয়ার। অনেকে জাকাত-ফিতরার অর্থ দিয়ে দরিদ্র মানুষদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেন। কেউ হয়ত অসচ্ছল পরিবারের কাউকে অর্থ সহায়তা করেন যাতে সেই টাকায় তিনি কিছু একটা করে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ পান। কেউ হয়তো একটি পরিবারের জন্য রিকশা কিনে দেন। অনেকে ঈদ উপলক্ষে ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য প্রতিবেশীকে সাহায্য করেন। চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী অঞ্চলে এগুলো বেশি প্রচলিত। সম্প্রীতির বন্ধন আরো দৃঢ় করা কিংবা সামাজিক দায়িত্ব পালনের চেষ্টা রমজানের শুরু থেকে শুরু হয়ে ঈদে এসে শেষ হয়।    

ঈদের চাঁদ দেখা এবং আতশবাজি

উপকূলে ঈদের আনন্দ শুরু হয় ঈদের চাঁদ দেখার মধ্য দিয়ে। সব শ্রেণীর মানুষ অপেক্ষায় থাকেন — পশ্চিম আকাশে কখন দেখা যাবে ঈদের চাঁদ! রমজান শেষ হওয়ার আগে সর্বত্রই যেন ঈদের সেই শুভ ক্ষণের জন্য অপেক্ষা, কখন দেখা যাবে চাঁদ। উপকূলের খোলা মাঠে, নদী-সমুদ্রের ধারে ঈদের চাঁদ দেখার সেই পুরানো ধারা এখনো আছে। আজকাল আধুনিক প্রজন্মের চন্দ্র দর্শন ট্যুর দেখা যায় নদীতে। শেষ রমজানের ইফতারির পসরা নিয়ে সপরিবারে অথবা বন্ধু মহল মিলে নৌকা কিংবা ট্রলারে চন্দ্র দর্শন ট্যুরে বের হয়। ইদের চাঁদ আরো ভালোভাবে দেখার প্রত্যাশা নিয়ে তারা এই আয়োজন করে। সারাদেশের মতো উপকূলের জনপদেও চাঁদ দেখার মধ্য দিয়ে ঈদের মূল আনন্দের সূচনা ঘটে। ঈদের চাঁদ দেখার পরে বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় আতশবাজি। এর মধ্য দিয়ে জেগে ওঠে চাঁদরাত — এই রাত পোহালেই আসবে বহু আকাঙ্খিত ঈদ!

সামাজিক মাধ্যমের প্রভাব

সামাজিক মাধ্যমের যে ঢেউ পৃথিবীজুড়ে বহমান; তার ধাক্কা লেগেছে উপকূলের ঈদেও। ঈদ কার্ডের মতো জনপ্রিয় ঈদ-শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যম এখন প্রায় বিলুপ্ত। উপকূলের পাড়া-মহল্লায় ঈদের বেশ কয়েকদিন আগে থেকে দেখা যেত ঈদ কার্ড কেনার হিড়িক। প্রিয়জনকে ঈদ কার্ড প্রেরণ ছিল নতুন কাপড় উপহারের চেয়েও মূল্যবান। অনেকে ঈদ  কার্ড সংরক্ষণ করতেন। রাস্তার ধারে বসত ঈদ কার্ডের অস্থায়ী দোকান। ঈদ কার্ড বিক্রয়, ক্রয় এবং বর্ণিল খামে ভরে প্রিয়জনের কাছে পৌঁছানো সবই ছিল ঈদ উৎসবের অংশ। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাবে ঈদ-শুভেচ্ছা বিনিময়ের ধরন বদলে গেছে। মোবাইল যুগে প্রবেশের সাথে সাথে সারাদেশের মতো উপকূলের মানুষেরাও ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে ঈদ-শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করেন। কিন্তু সেই যুগও অনেক আগে অতীত হয়েছে। উপকূলের গ্রাম অবধি এখন ঈদ-শুভেচ্ছা বিনিময় হয় সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে। 

বেড়ানো এবং পুনর্মিলনী 

স্বজনদের নিয়ে পর্যটন স্পটে বেড়ানো এবং ঈদ পুনর্মিলনী উপকূল অঞ্চলে পুরানো রেওয়াজ। চাকরিজীবী এবং কর্মজীবী পরিবারগুলো ছুটির উপর নির্ভর করে বেড়ানোর পরিকল্পনা করেন। কক্সবাজার এবং কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের ঢল নামে। দেশের অন্যতম প্রধান এই দুটি পর্যটনকেন্দ্রই বাংলাদেশের উপকূলে অবস্থিত। এছাড়াও উপকূলজুড়ে রয়েছে আরো অনেক পর্য়টনকেন্দ্র। উপকূল এবং দেশের অন্যান্য স্থান থেকে পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে ভিড় করেন বহু মানুষ। হয়তো অনেকেই সারা বছর বেড়ানোর মতো লম্বা ছুটি পান না। ঈদের লম্বা ছুটিকেই তারা বেড়ানোর জন্য বেছে নেন। উপকূলের অনেক স্থানে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের রেওয়াজ আছে। তরুণ-যুবক এবং বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই ঈদ আনন্দের সমাপ্তি ঘটে।    

তারা//

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়