ঘুরে দাঁড়ানো ২০ নারীর গল্প
একে আজাদ || রাইজিংবিডি.কম
একে আজাদ, বগুড়া : যাপিত জীবনের কঠিন বাস্তবতায় পরনির্ভরতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন বগুড়ার ২০ জন নারী। নিজের জীবনের দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন নিজের হাতেই। এখন তারা স্বনির্ভর। দু মঠো খাবারের জন্য এখন আর কারো কাছে হাত পাততে হয়না তাদের। মেকানিক্যাল কাজ শিখে জীবনের মোড় ঘুরিয়েছেন তারা।
বগুড়ার সারিয়াকান্দির স্বামী পরিত্যাক্তা সুফিয়া খাতুন (২২)। সে এখন সংসারের বোঝা নয়। থ্রি-হুইলার (সিএনজি) চালাতে পারে। পাশাপাশি হালকা মোটরযান মেরামত করতেও পারদর্শী।
দুই বছর আগের ঘটনা। স্বামীর যৌতুকের দাবি মেটাতে না পেরে নির্যাতিত হতে হয়েছে সুফিয়াকে। শেষাবধি তালাকপ্রাপ্তা হয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। হতদরিদ্র বাবার পক্ষে ভরণ পোষনের সামর্থ্য না থাকায় মামার বাড়িতে আশ্রয় মেলে সুফিয়ার।
সুফিয়ার সাফল্যে জেলার আরও অন্তত ৪০ নারীকে স্বাবলম্বী হতে উৎসাহী করেছে। বগুড়ার বিভিন্ন এলাকার বেকার নারীদের কোমল হাতে এখন থ্রি-হুইলারের ষ্টিয়ারিং ও হাল্কা মোটর যান মেরামতের যন্ত্রপাতি। আর এ মাধ্যমটিই পাল্টে দিয়েছে তাদের ভাগ্য।
এই প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্রে যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তারা কোন না কোন ভাবে লাঞ্ছণা-গঞ্জণার শিকার হয়ে বিড়ম্বিত জীবন নিয়ে এখানে এসেছেন। স্বামী পরিত্যাক্তা ও বাল্য বিয়ের শিকার নারীরাও আছেন। এমনও আছেন, যারা কিছুদিন আগেও গৃহ পরিচারিকার কাজ করতেন।
আজ তারা ঘুরে দাড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি দেশের কল্যানে এক প্রতিবাদি কর্মী হয়ে উঠেছে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি রাইজিংবিডিকে মুঠোফোনে জানান, এ প্রকল্পের সাফল্যের ভিত্তিতে সারা দেশেই এ ধরনের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হবে। থ্রি-হুইলারদের চালকদের সহজ শর্তে এবং কম সুদে লোনের বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে।
রাইজিংবিডি/ বগুড়া /৫ নভেম্বর ২০১৪/টিপু
রাইজিংবিডি.কম