বিজ্ঞানীদের ক্যামেরায় বিদ্যুৎ চমকানো
মোখলেছুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম
মোখলেছুর রহমান : বজ্রপাত, আমরা প্রায় সবাই এই শব্দটির সঙ্গে পরিচিত। বৃষ্টিপাতের পূর্ব মুহূর্তে এবং বৃষ্টি পড়ার সময় প্রায়ই বজ্রপাত দেখা মিলে। বৃষ্টি পড়ার সময় বা মেঘযুক্ত আকাশেও প্রায়ই নাটকীয়, ভয়ানক এবং বৃহদাকারের বিদ্যুৎ চমকাতে দেখা যায়।
কিন্তু এটা জেনে হয়তো আশ্চর্য হবেন যে যদিও বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরে বজ্রপাত নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে তথাপি এখনো পর্যন্ত বজ্রপাতের ফর্মুলা বের করতে পারেনি।
তবে আশার কথা হলো মে মাসে ফ্লোরিডা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকরা ভিডিও ধারণ করেন। এ কাজে তারা একটি উচ্চ গতির ক্যামেরা ব্যবহার করেছেন। এসব ক্যামেরায় আশ্চর্যজনক বজ্রপাত (মেঘ থেকে নিম্নগামী বিদ্যুৎ চমকানো বেশি, সেইসঙ্গে বিরল উর্ধ্বগামী বিদ্যুৎ চমকানো) ধারণ করা হয়।
এই আকর্ষণীয় ভিডিওটিতে, যেখানে তাদের রিয়েল টাইম গতির চাইতে একটু কম গতিতে দেখানো হয়েছে, দেখা যাচ্ছে যে বাজগুলো একটি উৎস থেকে উৎপন্ন হয়ে মাল্টি বিস্ফোরণ আকারে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে বা ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। বিপুল বৈদ্যুতিক বিস্ফোরণের পর একটি বোমা সদৃশ্য ইমেজ তৈরি করছে। তবে ভিডিওটিতে প্রতিটি বজ্রের স্থায়িত্বকাল ছিল ১ সেকেণ্ডেরও কম সময়।
ফ্লোরিডার মেলবোর্নের এফআইটি জিওস্পেস পদার্থবিদ্যা ল্যাবরেটরির পদার্থবিজ্ঞানী এবং প্রধান তদন্তকারী নিনজু লিউ বলেন, ‘আমরা জানি বাজ বিদ্যমান, কিন্তু বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য এর স্থায়িত্বকাল পর্যাপ্ত বলে আমার মনে হয় না।’
লিউ হাফিংটন পোস্টকে জানান, ‘বজ্র একটি ইলেকট্রিকাল ডিসচার্জ প্রসেস এবং আমরা জানি, বজ্র উৎপন্ন করার জন্য করার জন্য আমাদের একটি খুব বড় বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র দরকার যা মেঘের ভেতরে বিনা মূল্যে ইলেকট্রন ত্বরান্বিত করতে পারে। কিন্তু এ পর্যন্ত পরিমাপ থেকে যা বুঝা গেছে তাতে আমার মনে হয় বজ্রধ্বনি উৎপন্ন করা মেঘের ভেতরের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র আসলে তত বড় নয়। নিশ্চিতভাবেই তা বৈদ্যুতিক ভাঙ্গন শুরু করতে থ্রেশহোল্ডের মান অতিক্রম করে না।’
লিউ ব্যাখ্যা দিয়েছে যে, কীভাবে বাজ শুরু হয় তা কেন এখনো একটি রহস্যই রয়ে গেছে।
লিউ বলেন, ‘এটি একটি খুব জটিল প্রক্রিয়া, কারণ সঠিক মুহূর্তে সঠিক অঞ্চলে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের সেন্সর পাঠানোটা বস্তুত অনেক কঠিন। মূলত আমরা বজ্রপাতের ঠিক আগ মুহূর্তে একটি সেন্সর তড়িত্বান লাগাতে চেয়েছিলাম মেঘের ভেতরে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পরিমাপ করার জন্য। কিন্তু এটা খুব কঠিন, কারণ আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি না যে ঠিক কখন বজ্রপাত শুরু হবে, কখন এটা সঞ্চারিত হবে এবং ভূমির কোন স্থানে এটি আঘাত করবে।
নিচের ভিডিওটিতে লিউ এবং তার দল কর্তৃক ধারণকৃত দুর্লভ উর্ধ্বগামী বাজ দেখা যাচ্ছে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জুন ২০১৬/ফিরোজ
রাইজিংবিডি.কম