ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ব্যাটিংয়ে আশার আলো

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ব্যাটিংয়ে আশার আলো

তিন ব্যাটসম্যান একই দিনে ছুঁলেন তিন মাইলফলক। কিন্তু দুজন মাইলফলক ছোঁয়া ইনিংস বড় করতে পারেননি। আপাতত অপরজনের দিকে তাকিয়ে পুরো বাংলাদেশ।

তামিম, শান্ত, মুমিনুল তিনজনের ব্যাটই হাসল মিরপুর শের-ই-বাংলায়। তিন বাঁহাতির ব্যাটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দারুণ লড়ল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের করা ২৬৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ দ্বিতীয় দিন শেষে তুলেছে ৩ উইকেটে ২৪০ রান। মাত্র ২৫ রানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ আশায় রয়েছে বড় লিডের।

তামিম ইকবাল প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছুঁলেন ১৩ হাজার রানের মাইলফলক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৩ বছর কাটানো এ ব্যাটসম্যান মাইলফলক থেকে ২৭ রান দূরে থাকতে নেমেছিলেন ব্যাটিংয়ে। খুব সহজেই পৌঁছে যান মাইলফলকে। কিন্তু বড় করতে পারেননি নিজের ইনিংস। ৪১ রানে ফেরেন সাজঘরে।

এর আগে তিন টেস্ট খেলা নাজমুল হোসেন শান্ত টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন আজ। দৃষ্টিনন্দন শটে মাতিয়ে রাখেন মিরপুর। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ এ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। ৭১ রানে আউট শান্ত।

মুমিনুল অধিনায়ক হিসেবে পেয়েছেন প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। দিন শেষে অপরাজিত ৭৯ রানে। তার ব্যাটে দ্যুতি ছড়ানো মানেই রানের ফুলঝুরি। তাতে ওলটপালট প্রতিপক্ষের আক্রমণ। মুমিনুলের সঙ্গে ৩২ রান নিয়ে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন মুশফিকুর রহিম। তাদের ৬৮ রানের জুটিতে শেষ বিকেলে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ।

এর আগে প্রথম সেশন ছিল বাংলাদেশের। জিম্বাবুয়ের অবশিষ্ট ৪ উইকেট নিতে মাত্র ৩৭ রান খরচ করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন দুটি করে উইকেট নিয়েছেন রাহী ও তাইজুল।

রাহী ৪ উইকেট নিয়ে পাঁচের অপেক্ষায় ছিলেন। নাঈম আগের দিনই তো পেয়েছিলেন ৪টি। ২২ গজে হাত ঘুরিয়েছেন নাঈমও। কিন্তু নাঈম, রাহী কেউই পাননি ফাইপারের স্বাদ।

ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো ছিল না। উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায় ১৮ রানে। সাইফ হাসান পেসার নাউচির লাফিয়ে ওঠা বলে ব্যাট সরাতে না পেরে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। এরপর আধিপত্য বিস্তার করেন তামিম ও শান্ত। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে থিতু হন দুজন।

বিরতির পর প্রথম বলেই বাউন্ডারি। ব্যাকফুট পাঞ্চে বল সীমানায় পাঠান শান্ত। এরপর প্রায় প্রত্যেক ওভারেই এসেছে বাউন্ডারি। পেসারদের সামলাছেন তামিম। স্পিনার সিকান্দার রাজাকে শান্ত। দুজনের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে ৯১ বলে আসে জুটির পঞ্চাশ রান।

পায়ের ওপরের বলে কোনো ছাড় দেননি তামিম। পেসারদের মিড অন ও মিড উইকেটের মাঝ দিয়ে তামিম বাউন্ডারি মেরেছেন চারটি। শান্তও কম যাননি, পেসারদের বল ফ্রন্ট ফুটে পাঠিয়েছেন সীমানার বাইরে। আবার স্পিনার রাজাকে পেছনের পায়ে ভর করে কাট শটে মেরেছেন চার।

দ্রুত রান তুলে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আগ্রাসন দেখালে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ফিল্ডিং ছড়িয়ে দেন। তাতে বাউন্ডারি আসা বন্ধ হয়। পরের ৪৭ বলে তামিম ও শান্তর ব্যাট থেকে আসেনি কোনো বাউন্ডারি। অবশ্য স্ট্রাইক রোটেট করেছেন স্বাচ্ছন্দ্যে।

তামিমের ভালো ইনিংসের শেষ হয় আলগা শটে। টিরিপানোর বলে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন। ব্যাট হাত থেকে ছুঁটে যায়। আলতো ছোঁয়া পেয়ে বল যায় চাকাবার হাতে। শান্ত ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস সাজিয়েছেন ধ্রুপদী কয়েকটি শটে। বলের ওপর শেষ পর্যন্ত চোখ রেখে একের পর এক দারুণ ডিফেন্স করছিলেন।

কিন্তু ৭১ রানে ভুল করে বসেন। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। এরপর মুশফিক ও মুমিনুল শেষ বিকেলে নিখুঁত ব্যাটিং করে রান তুলেছেন অনায়াসে।

তাদের ব্যাটে তাকিয়ে বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন ধরেই বড় ইনিংস নেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। মুমিনুল-মুশফিক যদি প্রত্যাশার চেয়েও বড় কিছু করেন তাহলে অবাক হওয়ার থাকবে না।


ঢাকা/ইয়াসিন/কামরুল 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়