ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘দলের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার মাহমুদউল্লাহর’

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৩, ৫ মে ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘দলের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার মাহমুদউল্লাহর’

এক যুগেরও বেশি সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাটিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দীর্ঘ এ সময়ে প্রাপ্তির খাতায় যোগ হয়েছে একাধিক সাফল্য। তবে ব্যক্তিগত অর্জনের থেকে দলের অর্জনেই বেশি অবদান তাঁর। ফলে ব্যক্তিগত রেকর্ডবুক সমৃদ্ধ হয়নি। নামের পাশে যোগ হয়নি হাজার হাজার রান। লাইমলাইটেও আসা হয়নি সেভাবে। দলের কথা ভেবেই মাহমুদউল্লাহর এ বিসর্জন!

বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার মতে, দলের জন্য খেলতে গিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের অনেক রান হারিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তাঁর ভাষ্য,‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য মাহমুদউল্লাহর মতো ত্যাগ আর কেউ করেনি।’ নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের কন্ঠেও একই সুর,‘রিয়াদ ভাইয়ের ছোট্ট ৩০-৩৫ রানের ইনিংসগুলোর কারণে আমরা কতো ম্যাচ জিতেছি সেটা কেউ হিসেব করে না। দেখা যায় কেউ সেঞ্চুরি করলে উনার ইনিংসটা আড়াল হয়ে যায়।’

জাতীয় দলের দুই ক্রিকেটারের লাইভ আড্ডায় মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে দুজনই একমত, জাতীয় দলের জন্য মাহমুদউল্লাহর সার্ভিস কোনো দিনও ভুলবার নয় এবং দুজনের গর্ব মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে।

ব্যাটসম্যানদের চাওয়া থাকে ওপরের দিকে ব্যাটিং করা। কিন্তু ব্যাটিং কম্বিনেশন সাজাতে টিম ম্যানেজমেন্টকে পরিবর্তন করতেই হয়। মাহমুদউল্লাহর ক্ষেত্রেও ঘটেছে এমন কিছু। শেষ দিকে ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সামর্থ্য থাকায় তাকে ছয় কিংবা সাতে ব্যাটিং করতে হচ্ছে। অথচ ওপরের দিকে তাঁর ব্যাটিং পরিসংখ্যান ঈর্ষণীয়। ২০১৫ বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি তো বলছে সে কথাই। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দীর্ঘ সময় ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে তুলেছেন সেঞ্চুরি। পছন্দের পজিশনে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি ডানহাতি ব্যাটসম্যান। যখন ব্যাটিংয়ে আসেন তখন থাকে না পর্যাপ্ত সময়। দলের প্রয়োজন মেটাতে নিতে হয় বাড়তি ঝুঁকি। তাতে কখনো সফল হন কখনো হন না। কিন্তু তাঁর ছোট্ট ক্যামিও ইনিংসগুলো যথেস্ট কার্যকরী, গুরুত্বপূর্ণ- তা আড়াল হয়ে যায়। এজন্য খানিকটা আফসোস করলেন তামিম ও মাশরাফি।

মাশরাফি বলেছেন,‘রিয়াদ এমন একজন ব্যাটসম্যান...ও যদি চার-পাঁচ নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ পেত, ওর পরিসংখ্যান কিন্তু ভালো হতো। আজ ওর নামের পাশেও ৭-৮ হাজার রান থাকতে পারত। কিন্তু ওকে দলের জন্য খেলতে হয়েছে। দলের ভালোর জন্য ওকে আমাদের ছয়ে ব্যাট করাতে হচ্ছে। কারণ নিচের দিকে এরকম ব্যাটসম্যান নাই যে বিধ্বংসী খেলতে পারে। ওর কাজটা খুব কঠিন। সব দিন সফল হবে না। সফল না হলে দর্শক, মিডিয়া, সব জায়গায় সমালোচনা শুনতে হয় ওকে। তার পরও করে যাচ্ছে। অনেক সময়ই রিয়াদ মন খারাপ করেছে। আমি বুঝিয়েছি, সে হাসিমুখে মেনে নিয়েছে।’

এর আগে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে লাইভে তামিম বলেন,‘ আমাদের দেশে আমরা কেবল ৭০-৮০ বা সেঞ্চুরিকেই মূল্যবান মনে করি। কিন্তু আপনি (মাহমুদউল্লাহ) এদিক থেকে দুর্ভাগা। আপনার ৩০-৩৫ রানের যে ইনিংসগুলি আছে, হয়তো অতটা কৃতিত্ব পায় না।  কিন্তু আমরা যারা টিমমেট, আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে আপনার এই ৩০-৩৫ রানের ইনিংসগুলো কতটা মূল্যবান।’

১৮৮ ওয়ানডেতে ৪০৭০ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ক্যারিয়ার সেরা ১২৮ রান করেছেন নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপের ম্যাচে। ব্যাটিং গড় ৩৩.৬৩। আইসিসি ইভেন্টের তিন সেঞ্চুরি বাদে ওয়ানডেতে তাঁর তিন অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংস নেই, হাফ সেঞ্চুরি আছে ২১টি।

 

ঢাকা/ইয়াসিন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়