ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

অপেক্ষা করতে চান ক্রিকেটাররাও

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪১, ৩০ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
অপেক্ষা করতে চান ক্রিকেটাররাও

স্থবির হয়ে থাকা ক্রিকেটাঙ্গনে কবে ফিরবে প্রাণ? ২২ গজে কবে শোনা যাবে ব্যাট-বলের ঠুকঠাক শব্দ। কবে গ্যালারিতে হই-হুল্লোড় হবে?

ক্রিকেটারদেরও একই প্রশ্ন, ‘কবে আমরা মাঠে ফিরতে পারব?’ প্রশ্নের উত্তর আছে তাদের কাছে-ই। এই যেমন মুমিনুল হক বললেন, ‘পরিস্থিতি তো ভালো না। এভাবে খেলা শুরু হলে ঝুঁকি বাড়বে।’ ৩০ মের পর দেশে সাধারণ ছুটি বাড়ছে না। তবে ১৫ জুন পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচল হবে সীমিত। এজন্য মাঠে ক্রিকেট ফেরাতে একটু অপেক্ষা করতে চায় বিসিবি। পাশাপাশি সরকারের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় আছে বিসিবি। ক্রিকেটাররাও চান অপেক্ষা করতে।

জাতীয় দলের টেস্ট দলপতি অপেক্ষা করতে চান আরও দুই মাস! মুঠোফোনে এ ক্রিকেটার বললেন, ‘পরিস্থিতি এখন কেমন তা আমি, আপনি সবাই বুঝতে পারছি। এখন তাড়াহুড়ো করা মোটেও উচিত হবে না। এ মুহূর্তে একটু বাড়তি সচেতন থাকলে ভবিষ্যতে আমাদের জন্য ভালো। বিসিবি আছে। উনারা তো আমাদের ভালোটা বুঝবেনই। বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি আরও দুই মাস অপেক্ষা করে তাহলে খুবই ভালো হয়।’

জাতীয় দলের আরেক ক্রিকেটার রুবেল হোসেন করোনার শুরু থেকেই মানুষকে সচেতন করে আসছেন। সাধ্যমতো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দ্রুতগতির এ বোলারও চান আরোও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে, ‘খেলা তো দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ। আমরা সবাই চাই মাঠে ফিরতে। এজন্য তো বলতে পারি না, কালকেই মাঠে ফিরব। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। মাঠে ফিরলে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

জাতীয় দলের টেস্ট দলে ফিরে নিজের জায়গা পাকাপাকি করার প্রক্রিয়ায় ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। করোনা তার প্রক্রিয়া ও পরিকল্পনায় বিরাট ধাক্কা দিয়েছে। তবে এ ক্রিকেটার মহামারির সময়ে সুস্থ আছেন, স্বস্তিতে শ্বাস নিতে পারছেন এজন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ। শান্ত বিশ্বাস করেন বেঁচে থাকলে সামনে প্রচুর খেলতে পারবেন। জাতীয় দলের জার্সিতে দেশকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারবেন।

‘খেলাধুলা আগে নয়, জীবন আগে। এখন বেঁচে আছি এটাই অনেক। খেলাধুলার চিন্তা তো আমাদের করতেই হবে। আইসিসি ও বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা যে স্বাস্থ্যবিধি দেবে, সেগুলো মেনে খেলা শুরু করে দেওয়া উচিত। দীর্ঘদিন খেলার বাইরে থাকায় স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের পরিকল্পনায় ধাক্কা এসেছে। সামনে সেগুলো পুষিয়ে নিতে হবে।’

এরই মধ্যে ইংল্যান্ডের বোলাররা ট্রেনিংয়ে ফিরেছেন। মধ্য জুনে শিষ্যদের নিয়ে ট্রেনিংয়ে ফিরবেন শ্রীলঙ্কান কোচ মিকি আর্থারও। পাকিস্তান ক্রিকেটের দরজাও খোলার অপেক্ষায়। তবে একেক দেশের করোনা পরিস্থিতিও একেক রকম। বাংলাদেশে দিনকে দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। উর্ধ্বগামী এ সূচক স্থিতিশীল কিংবা নিম্নগামী না হলে করোনা সংক্রমণের ভয় থেকেই যাচ্ছে।

গত ১৫ মার্চ ঢাকা লিগের পর্দা উঠেছিল। এক রাউন্ডের পর বন্ধ হয় লিগের খেলা। এরপর করোনার কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয় দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট এই টুর্নামেন্ট। বিসিবির ইচ্ছা ঢাকা লিগ দিয়েই ক্রিকেটারদের আবার মাঠে ফেরাতে। এ লিগের মাধ্যমে স্থানীয় অনেক ক্রিকেটারের রুটি-রুজি নির্ভর করে। সেজন্য ১৫ জুনের পর লিগের খেলা শুরু করার প্রস্তাব দিলেন দুই সিনিয়র ক্রিকেটার শামসুর রহমান শুভ ও মার্শাল আইয়ুব।

‘সাধারণ ছুটি শেষ হয়েছে। এখন বিসিবি চাইলে ক্রিকেট ফেরাতে পারে। আইসিসি, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে ক্রিকেট শুরু করা যায়। ক্লোজডোরে ম্যাচ আয়োজন করলেও সমস্যা নেই। আশা করি বিসিবি আমাদের জন্য ভালোটাই ভেবে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রিমিয়ার লিগ দিয়েই আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হোক।’ - বলেছেন শামসুর।

মার্শাল বলেছেন, ‘আমাদের অনেকের রুটি-রুজি যেহেতু ক্রিকেট, সমস্যা তো আমাদের হচ্ছেই। তারপরও আগে বেঁচে থাকা। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করে তবেই মাঠের ক্রিকেটে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে।’

জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোহাম্মদ মিথুনও চান ২২ গজে ফিরতে, ‘সব-ই তো খুলে যাচ্ছে! স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এখন বন্ধ। ক্রিকেট তো অনেক নিরাপদ খেলা। উদযাপন ছাড়া তো ক্রিকেটে ক্লোজ হয় না কেউ। সচেতনতার জন্য উদযাপন না করলেও সমস্যা নেই। আইসিসির গাইডলাইন অনুযায়ী বিসিবি নিয়ম করে দিলে সবাই সেভাবেই চলবে। এখন অনেক কিছুই শিথিল করা হচ্ছে সেজন্য ক্রিকেট না ফেরানোর কারণ দেখি না। হ্যাঁ, আরও কিছুদিন অপেক্ষার পর শুরু করলেই ভালো।’


ঢাকা/ইয়াসিন/কামরুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়