ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

১৫ জনের দলেও জায়গা হয়নি লিটনের

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ২৮ মে ২০২১   আপডেট: ১৪:১১, ২৮ মে ২০২১
১৫ জনের দলেও জায়গা হয়নি লিটনের

লিটন দাশ যে বাদ পড়তে যাচ্ছেন, এমন একটা ফিসফাস শোনা গেছে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগেই। তারপরও সুযোগ মিলেছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ম্যাচে। কিন্তু নিজেকে প্রমাণ করার ‘শেষ সুযোগ’ কাজে লাগাতে পারেননি। যার কারণে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্যে মাঠে নামা বাংলাদেশের একাদশে জায়গা হলো না এই ওপেনারের। শুধু তাই নয়, একাদশ ঘোষণার আগে ১৫ জনের যে স্কোয়াড দেওয়া হয় তাতেও ছিল না ডানহাতি ব্যাটসম্যানের নাম।

তামিম ইকবালের সঙ্গী হিসেবে ওপেনিংয়ে লিটন জায়গা পাকাপাকি করে ফেলেছিলেন। ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতা থাকায় তার ওপর আস্থাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই আস্থাই ‘বোঝা’ হয়ে দাঁড়ায় একের পর এক দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ে। জানা গেছে, এরই মধ্যে টিম হোটেল ছেড়েছেন লিটন। ৩১ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া ঢাকা লিগে অংশ নিতে শনিবার (২৯ মে) আবার জৈব সুরক্ষা বলয়ে ঢুকবেন তিনি।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের পরপরই তার বাদ পড়া অনেকটাই নিশ্চিত ছিল। তবুও টিম ম্যানেজমেন্ট দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সুযোগ দেয়। কিন্তু ৪৩ বলে ২৫ রানের একাঘেয়েমি ইনিংসে লিটন তার বাদ পড়া ঠেকাতে পারেননি। তৃতীয় ওয়ানডেতে তার জায়গায় খেলছেন মাত্র একটি ওয়ানডে খেলা নাঈম শেখ। বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজার বিদায়ী ম্যাচে ওয়ানডে ক্যাপ পান। গত বছর সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই ম্যাচে লিটন করেন ১৭৬ রান। পাঁচ নম্বরে অপেক্ষমাণ নাঈমকে ব্যাটই করতে হয়নি। লিটনের ওই দুর্দান্ত ইনিংসের পর পরের ৮ ইনিংসে মোট রান ১০১, নামের পাশে তিনটি শূন্য।

লিটনের পারফরম্যান্স নিয়ে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন প্রথম ওয়ানডের পর বলেছিলেন, ‘ও সব সময় পাঁচ-ছয় নম্বরের ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টিতে ওপেন করতে পারে, তবে এমনিতে পাঁচ-ছয় নম্বরের।’   ক্যারিয়ারে তিনটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি হাঁকানো লিটনের ৪৪ ইনিংসে রান ১১৮০, ব্যাটিং গড় ২৮.৭৮। পঞ্চাশ বা শতকের ৬ ইনিংস মিলিয়ে তার রান ৬৭৬। বাকি ৩৮ ইনিংসে মাত্র ৫০৪! তাতে ব্যাটিং গড় ১৩.৩ ছুঁইছুঁই।

ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির জন্য ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৮ ইনিংস। সেই ইনিংসটি তিনি আবার সেঞ্চুরিতে রূপ দেন। ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপের ফাইনালে লিটনের হাঁকানো ১২১ রানের ইনিংস আজও চোখে লেগে আছে অনেকের। তেমনি বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার অপরাজিত ৯৪ এবং সিলেটে বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ১৭৬ রানের ইনিংস মুগ্ধ করেছে সবাইকে। সঙ্গে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আরেকটি ১২৬* ও ৮৩ রানের ঝকমকে ইনিংস এবং আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৬ রানের ইনিংস লিটনকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখায়। কিন্তু ধারাবাহিক ব্যর্থতায় তার নামের পাশে প্রশ্নবোধক চিহ্নও এঁকে দিচ্ছেন।

নতুন বলে ইনিংসের শুরুতে উইকেট ছুঁড়ে আসার প্রবণতা বেশি তার। ৪৩ ইনিংসের ৭টিতে রানের খাতা খুলতে পারেননি। এক অঙ্কের ঘরে আউট হয়েছেন ১৩ ইনিংসে। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানরা ইনিংস বড় করার যথেষ্ট সময় পান। বৃত্তের সুবিধাও পান। লিটন পূর্ণ স্বাধীনতাও পেয়েছিলেন নিজের মতো করে খেলার। কিন্তু সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পেরেছেন সামান্যই। প্রতিভাবান, সামর্থ্যবান হয়েও সবটুকু দিতে না পারায় লিটন ছিটকে গেলেন বহুদূর।

ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়