ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

শততম ম্যাচ বড় জয়ে রাঙাল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ২২ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৪:৫৮, ২৩ জুলাই ২০২১
শততম ম্যাচ বড় জয়ে রাঙাল বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টিতে শততম ম্যাচ বড় জয়ে রাঙাল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে হারারেতে ৮ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান করেছিল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ ৭ বল আগে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে। 

প্রায় একপেশে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে লড়াই করে ফিরে আসার চেষ্টা চালালেও বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের দারুণ পারফরম্যান্সে টিকেনি তাদের লড়াই। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লক্ষ্য নাগালে রেখেছিল বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে রেকর্ড ১০২ রান তোলে সৌম্য ও নাঈম। 

ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি পেয়ে সৌম্য সাজঘরে ফিরলেও নাঈম ৬৩ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। ৫১ বলে ৬টি চার মারেন নাঈম। সৌম্যর ৫০ রানের ইনিংসটি ছিল ৪৫ বলে। ৪টি চার ও ২ ছক্কায় সাজান ইনিংসটি। শেষে ৮ বলে ১৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে জয়ে অবদান রাখেন কাজী নুরুল হাসান সোহান।    

 

স্কোর: বাংলাদেশ ১৫৬/২, ওভার: ১৮.৫

জিম্বাবুয়ে ১৫২/১০, ওভার: ২০

 

বাংলাদেশের তিনে তিন!

টেস্টের শততম ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এবার জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টির শততম ম্যাচ জিতল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এর আগে ওয়ানডের শততম ম্যাচও জিতেছিল বাংলাদেশ। জিতেছিল ভারতের বিপক্ষে ঢাকার মাঠে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন কীর্তি আছে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার। 

নাঈমের ফিফটির পর মাহমুদউল্লাহ রান আউট

রায়ান বার্লের সরাসরি থ্রোতে রান আউট মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর মাহমুদউল্লাহ নিজেকে তিনে উঠিয়ে আনেন। কিন্তু ইনিংসটি বড় করতে পারেননি। ১২ বলে ১৫ রান করে ফেরেন সাজঘরে। তার ফেরার আগে নাঈম তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি।

উদ্বোধনী জুটির রেকর্ড

সৌম্য ও নাঈম ১০২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। যা টি-টোয়েন্টিতে উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের রেকর্ড। এর আগে তামিম ও লিটন ৯২ রান করেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। 

ফিফটির পর সাজঘরে সৌম্য

৪৯ রানে থেকে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হলেন সৌম্য সরকার। ক্যারিয়ারের চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ফিফটি পেয়েছেন। কিন্তু দ্বিতীয় রান পূর্ণ করতে পারেননি। উইকেট কিপার চাকাবা অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছেন। একহাতে বল নিয়ে পেছনে না তাকিয়ে স্টাম্পে বল ছুঁড়ে দেন। দলীয় ১০২ রানে বাংলাদেশ হারালো প্রথম উইকেট। সৌম্য ৪৫ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।  

সৌম্য-নাঈমের ব্যাটে দুর্দান্ত বাংলাদেশ

১৫৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা সাবধানী হলেও পরে আগ্রাসন বাড়িয়েছেন দুই বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য ও নাঈম। ১১ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৩৫। প্রথম ৩ ওভারে রান ছিল মাত্র ৯। পরের দুই ওভারে তুলেছে ২৬ রান। পাওয়ার প্লে’তে বাংলাদেশের রান পৌঁছে যায় ৪৩ রানে।  

প্রথম বাউন্ডারি পেতে অপেক্ষা করতে হয় ২১ বল। রিচান্ড নাগাবারার করা চতুর্থ ওভারে তিন বাউন্ডারি মেরে নাঈম রান রেট ঠিক রাখেন। পরের ওভারে সৌম্য লুক জংওয়েকে স্বাগত জানান ছক্কায় উড়িয়ে। এরপর সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আগ্রাসনও বাড়ে দুই ব্যাটসম্যানের। 

মোস্তাফিজের ৩ উইকেট, চাকাবা করলেন সর্বোচ্চ রান এবং শামীমের দুর্দান্ত ক্যাচ

নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ের অসাধারণ প্রদর্শনীতে লক্ষ্য নাগালে রাখল বাংলাদেশ। হারারেতে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে জিম্বাবুয়ে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান তুলেছে। শততম টি-টোয়েন্টি জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১৫৩ রান।

দ্বিতীয় ওভারে মোস্তাফিজের বলে মারুমানি সাজঘরে ফিরলেও দারুণ দাপট দেখায় জিম্বাবুয়ে। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৫০ রান তুলে নেয় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় উইকেটে মাত্র ৩২ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েন চাকাবা ও মাধভেরে। সাকিব তাদের ৬৪ রানের জুটি ভাঙার পর দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিণে নেয় বাংলাদেশ। 

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নেয় মাহমুদউল্লাহর দল। ফিল্ডিং ছিল তুখোড়। সীমানায় কয়েকটি রান বাঁচানো ও অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা শামীম পাটোয়ারির উড়ন্ত ক্যাচ মুগ্ধ করেছে সকলকে। শেষদিকে ৮ রান কম হতো যদি মোস্তাফিজের ইয়র্কারে মুজারাবানির ক্যাচ নিতে পারতেন সোহান। অবশ্য তার সরাসরি থ্রোতেই বাংলাদেশ বিপজ্জনক চাকাবারে ফেরায়। ২২ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন চাকাবা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন অভিষিক্ত ডিয়োন মায়ার্স। 

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৩ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ। সাইফ উদ্দিন ও শরিফুলের শিকার ২টি করে উইকেট। 

শেষ ৫ ওভারে কতো করবে জিম্বাবুয়ে?

সৌম্য সরকার নিজের দ্বিতীয় ওভারে পেলেন উইকেটের স্বাদ। শরিফুল তৃতীয় ওভারে আবার পেলেন উইকেট। বাংলাদেশের বোলাররা ধারাবাহিক উইকেট তুলে নেওয়ায় জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা হাত খুলে খেলতে পারছেন না।

বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরুতে লড়াই করলেও ইনিংসের মাঝে পথ হারায় তারা। সৌম্য সরকার এলবিডব্লিউ করেন মারিসাই মুসাকান্দাকে। শরিফুল অভিষিক্ত ডিয়োন মায়ার্সের উইকেট উপচে ফেলেন। শেষ ৫ ওভারে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা কতো রান তোলেন সেটাই দেখার।   

শরিফুলের ওভারে জোড়া আঘাত

বিপজ্জনক হয়ে ওঠা রেগিস চাকাবাকে বিদায় করলো বাংলাদেশ। ১১তম ওভারে শরিফুল ইসলামের প্রথম বলে নুরুল হাসান সোহান তাকে রান আউট করেন। ২২ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ৪৩ রান করেন জিম্বাবুয়ান ওপেনার। শরিফুলের ওভারে চার বলের ব্যবধানে সিকান্দার রাজাও আউট হন। তিন বল খেলে রানের খাতা না খুলে সোহানকে পেছনে ক্যাচ দেন স্বাগতিক অধিনায়ক।

শক্ত জুটি ভাঙলেন সাকিব

১০ রানে জিম্বাবুয়ে প্রথম উইকেট হারানোর পর ওয়েসলি মাধেভেরে ও রেগিস চাকাবা শক্ত অবস্থান নেন। অবশেষে এই জুটি ভাঙলেন সাকিব আল হাসান। তাদের ৬৪ রানের জুটি ভেঙে দিয়েছেন তিনি ফিরতি ক্যাচে। মাধেভেরে ২৩ বলে ২৩ রানে আউট হন।

মোস্তাফিজের বলে সৌম্যের দুর্দান্ত ক্যাচে প্রথম উইকেট

মোস্তাফিজুর রহমান বল হাতে নিয়ে প্রথম ওভারেই পেলেন জিম্বাবুয়ের উইকেট। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে ৭ রানে মাঠছাড়া করেন বাংলাদেশি পেসার। ডিপ মিডউইকেট থেকে দৌড়ে এসে দুর্দান্ত ড্রাইভে সৌম্য সরকার ক্যাচটি ধরেন। তাতে ১০ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।

শততম টি-টোয়েন্টিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ফিল্ডিং করছে বাংলাদেশ। টস জিতে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাংলাদেশের এটি শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস, নাঈম শেখ, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, কাজী নুরুল হাসান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শেখ মেহেদী হাসান, সাইফ উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।  

বাংলাদেশের সেঞ্চুরি

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৬ সালে প্রথম ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। সেটি জিম্বাবুয়েরও প্রথম ম্যাচ ছিল। আজ জিম্বাবুয়ে খেলছে ৮৬তম ম্যাচ। বাংলাদেশ নিজেদের ৫০তম ম্যাচও খেলেছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

এর আগে দুই দলের ১৩ বারের মুখোমুখিতে বাংলাদেশ জিতেছে ৯টি। জিম্বাবুয়ে জিতেছে ৪টি। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ ভালোভাবে শুরুর অপেক্ষায় মাহমুদউল্লাহর দল।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়