ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

দক্ষিণ আফ্রিকায় ইতিহাস গড়তে চান জ্যোতিরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৯:৩২, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩
দক্ষিণ আফ্রিকায় ইতিহাস গড়তে চান জ্যোতিরা

প্রথম যে কোনো কিছু আনন্দের। নিগার সুলতানা জ্যোতি সেই আনন্দেই বুদ হয়ে আছেন। প্রথমবার যে দক্ষিণ আফ্রিকা দূর্গ যে জয় করেছে তার দল। রোববার দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমবার তাদের মাটিতে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টিতে জয় পেয়েছে ১৩ রানে। যে জয়ের রূপকার অলরাউন্ডার স্বর্ণা আক্তার। ২৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে লেগ স্পিনার বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন।

নিজের বোলিংয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত স্বর্ণা, ‘আমাদের প্রস্তুতি খুব ভালো ছিল বিধায় ভালো শুরু করতে পেরেছি। সব কিছু মিলিয়ে আলহামদুলিল্লাহ। আমার পরিকল্পনা ছিল উইকেট টু উইকেট ডট বল দেয়া। কিভাবে বের করা যায় খেলাটা।  পরবর্তী পরিকল্পনা একই থাকবে। যেহেতু আমি একজন অলরাউন্ডার। গতকাল ব্যাটিংয়ে সুযোগ পাইনি। বোলার হিসেবে শুধু অবদান রাখতে পেরেছি সেজন্য খুশি। সামনে যদি সুযোগ পাই আরো ভালো কিছু করবো।’

আরো পড়ুন:

দেশের বাইরে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোয় খুশি অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি, ‘আমরা কখনো বাইরে এসে ম্যাচ জিততে পারিনি। ফুল ক্রেডিট দলের। ম্যানেজমেন্টকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। তারাও আমাদের ওপর বিশ্বাস রেখেছে। এই টিমটা আসলে সবাই সবাইকে সাপোর্ট করে। আমরা সব সময় একটা কথা বলি, হারলেও আমরা একসাথে। জিতলেও একসাথে। এই মোরালটা আসলে আমাদেরকে শক্তিশালী করে তোলে।’

জয়ের নায়ককে নিয়ে অধিনায়ক বলেছেন, ‘স্বর্ণা যেভাবে বোলিং করেছে ওই জায়গায়, ও কিন্তু প্রতিনিয়ত এতো বেশি বল করে না ওই জায়গায়। আমার অপশন বোলার। মেইন বোলার সে না। কিন্তু ব্রিলিয়ান্ট বোলিং সে করেছে। ’ নিজের পরিকল্পনা কাজে দেওয়ায় দারুণ উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক জ্যোতি, ‘আমার জন্য একটু কঠিন ছিল। কারণ রাবেয়া আমার মূল বোলার। ওকে রেখে স্বর্ণাকে ওই ওভারে নিয়ে আসছি। যেটা দেখলাম ও জোরের ওপর বল করে। ধারাবাহিক একটা জায়গায় বল করতে পারে। ওই ফাঁদ পেতে আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের আটকানোর চেষ্টা করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে আমি যেই গ্যাম্বলিংটা করেছি ওটা কাজে দিয়েছে।’

সঙ্গে দলীয় পারফরম্যান্সের ছবিও আঁকছেন জ্যোতি, ‘সব কিছু সম্ভব হয়েছে টিম এফোর্টের কারণে। যখন আমরা ব্যাটিং করেছিলাম আমাদের পরিকল্পনা ছিল ১৪০ রানের বেশি করবো। সেটা করেছি। বোলিংয়ে একটু ল্যাকিংস তো ছিল। এটা হয়। তারপরও বোলাররা ভালো ক্যারেক্টার শো করেছে। ‍ফিল্ডিংয়ে প্রতিটি সুযোগ নিতে পেরেছি। দলীয় এফোর্টে এই জয় এসেছে।’

বাংলাদেশের দেওয়া ১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ উইকেটে ১৩৬ রানের বেশি করতে পারেনি। ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় ১৮তম ওভারে। ওই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৮ বলে লাগত ২৮ রান। ওই সময়ে স্বর্ণা ২ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ বাংলাদেশের পক্ষে নিয়ে আসেন। এর আগে ৩ নেন ৩ উইকেট। 

১৯তম ওভারে নাহিদা আক্তার বোলিংয়ে ফিরে তুলে নেন মার্কসের উইকেট। ওই ওভারে রান হয় মাত্র ২। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে ধারাবাহিক উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকা আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখায় জয়ের পথ সহজ হয়েছিলে বলে মনে করছেন জ্যোতি, ‘এসব উইকেটে যদি ১৫০ রানের মতো না করেন তাহলে ভিন্ন ম্যাচ হয়ে যাবে। এজন্য সব ক্রেডিট বোলারদের দিতে চাই। ওদের ব্যাটিং গ্রুপটা কিন্তু অনেক বেশি শক্তিশালী। তারপরও যেভাবে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি, পুরো দল বিশ্বাস রেখেছিল…এক বারের জন্য ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছি এমন মনে হয়নি। সবাই অনুভব করেছি, ম্যাচ আমাদের পক্ষে আছে।’

সিরিজ জিততে মুখিয়ে থাকা জ্যোতি ভুল শুধরে এগিয়ে যেতে চান, ‘দল হিসেবে আমরা ভালো খেলেছি এবং ফল পেয়েছি। তবুও আমরা কিছু ভুল করেছি যেগুলো করা উচিত হয়নি। সামনের ম্যাচে আমাদের আরো ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। অনেক দূর চিন্তা করবো না সিরিজ নিয়ে। আমাদের সামনে যে দিনটি আসছে, যে ম্যাচটি আসছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সেদিন যে ভুলগুলো করেছি, ব্যাটিং আমরা ৪০টির বেশি ডট বল খেলেছি সেগুলো কমাতে হবে। বোলাররা আরো শৃঙ্খল হতে হবে। তাহলে ভালো কিছু হবে। আমরা আমাদেরকে কিভাবে আরো ভালোভাবে শো করাতে পারি সেজন্য কষ্ট করতে হবে।’

প্রথম ম্যাচে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দলকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমর্থন জুগিয়েছেন। এজন্য তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অধিনায়ক আরো বলেন,‘আমি খুবই বিস্মিত হয়েছি এতো দর্শক দেখে। তারা যেভাবে বাংলাদেশ বাংলাদেশ করছিল এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেভাবে সমর্থন জুগিয়েছে, আনকন্ডিশনাল সাপোর্ট। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। বাংলাদেশের বাইরে এসেও এতো ভালোবাসা ও সাপোর্ট পাওয়ার জন্য।’ ৬ ডিসেম্বর কিম্বারলিতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/বিজয়

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়