ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২০ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ৭ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়নের ছবি হৃদয়ে আঁকছেন তারা

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৫, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২২:৫৮, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
চ্যাম্পিয়নের ছবি হৃদয়ে আঁকছেন তারা

আট দল, ১৫ ম্যাচ, একটি শিরোপা; ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। আটটি দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে লড়বে মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত এই আসরে। দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল উঠবে সেমিফাইনালে। এরপর ৯ মার্চ ফাইনাল।

আট দলের আট অধিনায়ক হৃদয়ে আঁকছেন চ্যাম্পিয়নের ছবি। নিজেদের দিনে সেরা ক্রিকেট উপহার দিয়ে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়ার রণকৌশল প্রত্যেকের। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে আট অধিনায়কের ভাবনা মিশে গেছে এক বিন্দুতে, চ্যাম্পিয়নশিপে।

হাশমতউল্লাহ শাহীদি (আফগানিস্তান):
২০২৩ বিশ্বকাপ থেকে আফগানিস্তান নিশ্চিতভাবেই আত্মবিশ্বাস খুঁজে বেড়াতে চাইবে। ভারতে সেবার ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তারা চমক দেখিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়াকেও প্রায় তারা মাটিতে নামিয়ে এনেছিল। সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনাও জাগিয়ে তুলেছিল। ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা সেমিফাইনাল খেলেছিল। তারা অস্ট্রেলিয়াকেও হারিয়েছিল। সবশেষ দুই আইসিসি ইভেন্টে তারা দুর্দান্ত পারফর্ম করায় এবারও তারা ডাকহর্স হিসেবেই থাকবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে।

আরো পড়ুন:

হাশমতউল্লাহ শাহীদি, ‘‘আমরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। কারণ, আমাদের কাছে প্রতিটি ফরম্যাটে প্রতিটি দলকে হারানোর প্রতিভা আছে। আমাদের পরবর্তী বড় চ্যালেঞ্জ হলো চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, এটি আমাদের জন্য একটি বড় টুর্নামেন্ট এবং আমরা এটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’’

স্টিভেন স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া):
২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন স্টিভেন স্মিথ। এবার কাকতালীয়ভাবে আবার অসিদের দায়িত্বে তিনি। প্যাট কামিন্স চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে না থাকায় স্মিথ পেয়েছেন দলকে পরিচালনার দায়িত্বে। সেবার সেমিফাইনালে তুলতে পারেননি দলকে। এবার নিশ্চিতভাবেই বড় কিছুর খোঁজে থাকবেন।

‘‘আমার জন্য অধিনায়কত্ব করা মানে দলের প্রত্যেকের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সঠিক ব্যক্তিকে কাজে লাগানো। আমি বিশ্বাস করি দলের প্রত্যেকেরই সেই সামর্থ্য রয়েছে।’’

নাজমুল হোসেন শান্ত (বাংলাদেশ):
আইসিসি ইভেন্টে তৃতীয়বারের মতো নাজমুল হোসেন শান্ত দলকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন। ২৬ বছর বয়সী শান্ত প্রথম শিরোপার খোঁজে আছেন, ‘‘শিরোপা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আসার আগে, আমরা সবাই এবার ট্রফি জিততে চেয়েছিলাম। কারণ, গত কয়েকটি টুর্নামেন্টে আমরা ভালো করতে পারিনি। এবার আমরা ট্রফি জেতার কথা ভাবতে পারি। কারণ, আমাদের একটি খুব ভালো দল আছে। আমরা জানি কাজটা কঠিন। কিন্তু আমরা যদি নিজেদের কাজটা নিজেদের দিনে করতে পারি তাহলে আমরা জিততেও পারব।’’

জস বাটলার (ইংল্যান্ড):
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর কোনো শিরোপা জেতেনি ইংল‌্যান্ড। অধিনায়ক জস বাটলার অপেক্ষার পালা শেষ করতে চান পাকিস্তানেই, ‘‘আমি মনে করি আমরা এখনও আমাদের সম্ভাবনার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারিনি অথবা আমরা যেখানে থাকতে পারি সেখানে ব্যক্তিগতভাবে বা সম্মিলিতভাবে যেতে পারিনি। আমাদের প্রত‌্যাশা অনেক উচুঁতে। আমরা বিশ্বাস করি আমরা সেখানে পৌঁছাতে পারি এবং চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে একটি বিপজ্জনক দল হতে পারি।’’

রোহিত শর্মা (ভারত):
ভারতের জন‌্য এই আসরটা বেশ চ‌্যালেঞ্জিং। কেননা তাদের জন্য আইসিসি এই প্রতিযোগিতাকে বিভাজন করেছে পাকিস্তান ও দুবাইয়ে। সরকার থেকে সবুজ সংকেত না পাওয়ায় ভারত দল পাঠায়নি পাকিস্তানে। এজন‌্য তাদের ম‌্যাচগুলো হবে দুবাইয়ে। স্বাগতিক হয়েও পাকিস্তানকে খেলতে হবে দুবাইয়ে। ২০২৩ বিশ্বকাপে ভারত শিরোপা জিততে পারেনি। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে নিজেদের অপেক্ষা দূর করে। এবার তাদের চোখ শিরোপায়। রোহিত শর্মা বলেছেন, ‘‘দলে কিছুটা স্বাধীনতা আছে। ছেলেরা যেভাবে খেলতে চায় সেভাবেই যেন খেলতে পারে। বিশ্বকাপ তার একটি নিখুঁত উদাহরণ ছিল এবং আমরা এটি চালিয়ে যেতে চাই এবং এর উপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে চাই। এমন সময় আসবে যখন সবকিছু ঠিকঠাক থাকবে না, তবে তা ঠিক হয়ে যাবে।’’

মিচেল স্যান্টনার (নিউ জিল্যান্ড):
যেকোনো আইসিসি ইভেন্টেই নিউ জিল্যান্ড অপ্রতিরোধ্য। নকআউট পর্ব তো বটেই প্রতিযোগিতার ফাইনালও খেলে তারা। সবশেষ ২০২৩ বিশ্বকাপের দারুণ পারফরম্যান্সে সেমিফাইনাল খেলেছিল দলটি। এবার দলটির নেতৃত্ব নতুন কাঁধ মিচেল স্ট্যানারের কাছে। ভালো শুরুর অপেক্ষায় তিনি, ‘‘এটা দারুণ জয় ছিল (ত্রিদেশীয় সিরিজ)। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন খেলোয়াড়রা এগিয়ে এসে পারফর্ম করেছে। আমরা এখন প্রথম ম্যাচটি খেলার অপেক্ষায় আছি।’’  

মোহাম্মদ রিজওয়ান (পাকিস্তান):
ঘরের মাঠে ১৯৯৬ সালের পর প্রথম কোনো আইসিসি ইভেন্ট আয়োজন করছে পাকিস্তান। এর আগে একাধিকবার সুযোগ আসলেও তারা পারেনি। সেজন্য পাকিস্তানের কাছে প্রত্যাশা আকাশচুম্বি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সবশেষ আসরে তারা চ্যাম্পিয়ন। এবারও শিরোপা ধরে রাখতে চান তারা।

পাকিস্তান দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান বলেছেন, ‘‘ক্রিকেটপ্রেমী দেশ হিসেবে, আমরা সবাই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ আয়োজনের জন্য খুবই রোমাঞ্চিত। সম্প্রতি ওয়ানডেতে ভালো পারফর্ম করায় এই মেগা-ইভেন্টের প্রতি আমাদের আবেগ এবং উৎসাহ বাড়িয়েছে, এবং আমরা আমাদের ঘরের দর্শকদের সামনে খেলার এবং আট দলের টুর্নামেন্টে সেরা হওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।”

টেম্বা বাভুমা (দক্ষিণ আফ্রিকা):
২০২৩ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা শিরোপার ছোঁয়া পায়নি। ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম আসরে তারাই জিতেছিল শিরোপা। ২৭ বছর পর আরেকটি শিরোপার অপেক্ষায় তারা, ‘‘বিশ্বকাপে, আপনার কাছে পর্যালোচনা করার এবং এগিয়ে যাওয়ার সময় আছে। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে, আপনি তা করতে পারবেন না। তবে আমরা টুর্নামেন্টে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার আশাবাদী।’’

ইয়াসিন/আমিনুল


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়