হামজা ও শমিতের পর লাল-সবুজের জার্সি পরতে যাচ্ছেন সান্ডারল্যান্ডের মিচেল
নাভিদ হাসান || রাইজিংবিডি.কম

দেশের ফুটবলে আরেকটি রোমাঞ্চকর অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বিএফএফ) প্রবাসী প্রতিশ্রুতিশীল মিডফিল্ডার কিউবা রাউল মিচেলকে দলে ভেড়ানোর ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ১৯ বছর বয়সী ফুটবলার বর্তমানে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ক্লাব সান্ডারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে খেলছেন। এই ফুটবলারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলার ব্যাপারটা নিশ্চিত করেছেন বিএফএফের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান ও প্রবাসী খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করা ফুটবল সমর্থক গোষ্ঠী ‘সেভ বাংলাদেশ ফুটবল’।
আগামী জুন থেকে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেলার ব্যাপারে মিচেলের মতামত জানতে, তার এজেন্ট বেন ডারকেলের সঙ্গে শনিবার অনুষ্ঠানিকভাবে ই-মেইলে যোগাযোগ করেন ইমরুল। রবিবার (২০ এপ্রিল) সেই ইমেলের জবাবে মিচেলের এজেন্ট ছিলেন ইতিবাচক।
বাংলাদেশের হয়ে খেলতে গেলে সামনে কি ধরনের ধাপ পেরুতে হবে এবং অর্থিক কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবে সেই ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন মিচেলের এজেন্ট ডারকেল। ইমরুল সকল তথ্যই সরবরাহ করেছেন।
ডারকেলের সঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের মধ্যে যোগসূত্র হিসেবে কাজ করে বাংলাদেশের কনফিয়াঞ্জা স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট। তারা মার্চের শেষদিকে এই আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে।
ইমরুল আশা করছেন, দুই একদিনের মধ্যে মিচেলের কাছ থেকে একটি চূড়ান্ত উত্তর পাওয়া যাবে, ‘‘যদি সে সম্মতি দেয়, তাহলে আমরা জুনের ম্যাচের জন্য তাকে পাওয়ার আশায় থাকতে পারি।’’
এদিকে ‘সেভ বাংলাদেশ ফুটবল’ গোষ্ঠীকে মিচেল জানিয়েছেন, ‘‘আমি বাংলাদেশের প্রতি আমার আনুগত্য প্রকাশ করেছি। আমি বেঙ্গল টাইগারদের প্রতিনিধিত্ব করতে এবং সকল ভক্তরা আমাকে বরণ করে নেওয়ার দিকেই নজর দিচ্ছি।’’
হামজা চৌধুরী এবং শমিত শোম যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ব্যাপারটা প্রথম আবিষ্কার করেন বাংলাদেশ ফুটবল সমর্থক গোষ্ঠী ‘ওয়াকিং অ্যারাউন্ড দ্যা ড্রিমে’র প্রতিষ্ঠাতা আরফিন জিসান। এই তরুণ ফুটবল সংগঠকের সঙ্গে মিচেলের ব্যাপারে রাইজিংবিডির আলাপ হয়। জিসান জানান, ‘‘ব্যাপারটা শতভাগ ইতিবাচক দিকেই এগুচ্ছে।’’
২০০৫ সালে বাংলাদেশি মা ও জ্যামাইকান বাবার ঘরে জন্ম নেওয়া কিউবার সামনে রয়েছে ইংল্যান্ড বা বাংলাদেশ অথবা জ্যামাইকার হয়ে খেলার বিরল সুযোগ। তবে বার্মিংহ্যামের একাডেমিতে বেড়ে উঠা মিচেল ইংল্যান্ডের কিংবা জ্যামাইকার বয়সভিত্তিক দলে কখনো খেলেননি। তাই মিচেলকে পাওয়ার প্রক্রিয়াটি হামজা ও শমিতের শোমের তুলনায় অপেক্ষাকৃত সহজ হবে।
বার্মিংহামের একাডেমিতে বেড়ে ওঠার সময়, মিচেল সপ্তাহে অন্তত একদিন প্র্যাকটিস করতেন একাডেমির সিনিয়রদের সাথে। সেই সিনিয়র দলে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ এবং ইংল্যান্ডের তারকা জুড বেলিংহ্যামকে। বাংলাদেশের হয়ে খেলার সুযোগ পেলে সেই অভিজ্ঞতার ঝুড়ি নিশ্চিতভাবে বয়ে নিয়ে আসবেন মিচেল।
এদিকে শেফিল্ড ইউনাইটেডের হামজার অভিষেক হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের জার্সিতে। শমিতের অন্তর্ভুক্তির আলোচনা এগিয়েছে বহু দূর। এসব থেকে একটা ব্যাপার স্পষ্ট যে, আসন্ন জুনে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচকে সামনে রেখে তাবিথ আওয়ালের নেতৃত্বাধীন বিএফএফ বাংলাদেশ দলকে শক্তিশালী করতে বদ্ধপরিকর।
ঢাকা/নাভিদ/আমিনুল