ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চরম ব্যাটিং ধসে বিব্রতকর পরাজয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫৩, ২ জুলাই ২০২৫   আপডেট: ২৩:৩০, ২ জুলাই ২০২৫
চরম ব্যাটিং ধসে বিব্রতকর পরাজয়

১ উইকেটে বাংলাদেশের রান ১০০। ২৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে তখন স্বাগতিকদের কড়া জবাব দিচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। যে ছন্দপতনে স্কোরবোর্ডের চিত্রটা হয়ে যায় এরকম, ৮ উইকেটে ১০৫।

স্কোরাবোর্ডে মাত্র ৫ রান যোগ করতেই নেই ৭ উইকেট। চরম এই ব্যাটিং ধসে বিব্রতকর পরাজয়কে সঙ্গী করেছে বাংলাদেশ। ১৬৭ রানে অলআউট হয়ে ৭৭ রানে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে শ্রীলঙ্কা এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।

আরো পড়ুন:

লম্বা সময় পর ব্যাটিংয়ে এমন ধস দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। ২০০২ সালের ১০ অক্টোবর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও বাংলাদেশের এমন কিছু হয়েছিল। সেবারের অভিজ্ঞতা আরো ভয়ংকর। ৩ উইকেটে ৮০ রান থেকে ৮৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

আজকের উইকেট আহামরি কঠিন ছিল না। কিন্তু স্পিন বিষে নীল হয়েছে বাংলাদেশ। পারভেজ হোসেন ইমন শুরুতে ১৩ রানে আউট হন। অভিষেকের ইনিংস রাঙাতে পারেননি তিনি। সেখান থেকে ৭১ বলে ৭১ রানের জুটি গড়েন শান্ত ও তানজীদ। দুজন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন। তানজিদ তুলে নেন তার ক্যারিয়ারে চতুর্থ ফিফটি। বাংলাদেশের দলীয় রানও তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলে। এর পরপরই সব ওলটপালট।

বিপদটা নাজমুল হোসেন নিজেই ডাকেন। বেশ ছন্দে যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন ডাবল রান নিতে গিয়ে রান আউট হন। শান্তর বিদায়ের পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। 

লিটন ৪ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি। যা তার ওয়ানডে ক‌্যারিয়ারের ষোলোতম ডাক। বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ।  ওপেনার তানজিদ দারুণ এক ক্যাচে ফেরেন। ৬২ রানে আউট তানজিদ। সেঞ্চুরির জন‌্য আরো অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাকে। দুজনকেই আউট করেন স্পিনার হাসারাঙ্গা।

পরের ওভারে বল হাতে নেন কামিন্দু মেন্ডিস। এসেই তাওহীদ হৃদয়ের উইকেট উপচে ফেললেন। হাসারাঙ্গা পরের ওভারে সাজঘরে পাঠান বাংলাদেশের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকে। তাওহীদ ১, মিরাজ শূন‌্য রানে আউট। এরপর তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ সতীর্থদের দেখানো পথেই হাঁটেন।

নিশ্চিত পরাজয়ের ম‌্যাচে তখন কেবল জাকের আলীর পরাজয়ের ব‌্যবধান কমানোর লড়াই। ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৫১ রান তুলে দলের স্কোর ১৬৭ রানে নিয়ে যান। তার আউটেই নিশ্চিত হয়ে যায় করুণ পরাজয়। ৭.৫ ওভারে ২ মেডেনে ১০ রানে ৪ উইকেট নেন হাসারাঙ্গা। তার বোলিং স্পেলে ৪০টিই ছিল ডট বল। এছাড়া মেন্ডিস ১৯ রানে নেন ৩ উইকেট।

এর আগে টস হেরে বোলিংয়ের শুরুটা ভালো করেছিল বাংলাদেশ। ২৯ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা তাসকিন সাজঘরে ফেরত পাঠান নিশান মাদুশঙ্কা (৬) ও কামিন্দু মেন্ডিস (০)। আরেকপ্রান্তে পেসার তানজিম হাসান সাকিব আউট করেন পাথুম নিশাঙ্কাকে (০)।

তৃতীয় উইকেটে শ্রীলঙ্কা প্রতিরোধ পায় কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কার ব্যাটে। ৭৭ বলে ৬০ রান যোগ করেন তারা। প্রতি আক্রমণে গিয়ে রান করায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। তাদেরকে লড়াইয়ে ফেরান স্পিনার তানভীর। অভিষিক্ত এই স্পিনার মেন্ডিসকে এলবিডব্লিউ করেন।

এরপর আসালাঙ্কা ও লিয়ানাগে জুটি বেঁধে ৬৪ রান যোগ করেন। যা ছিল শ্রীলঙ্কার ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের জুটি। মনে হচ্ছিল তাদের ব্যাটে বড় কিছুই করবে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তাদের পথ আটকে দেন শান্ত। নিয়মিত বোলাররা যখন উইকেট পাচ্ছিলেন না তখন অধিনায়ক মিরাজ শান্তকে বোলিংয়ে এনে জুটি ভাঙেন। 

লিয়ানাগে ২৯ রানে ক্যাচ দেন সীমানায়। সেখান থেকে আসালাঙ্কার একার লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কা আড়াইশ রানের কাছাকাছি পুঁজি পায়। লঙ্কান অধিনায়ক ১২৩ বলে ১০৬ রান করেন ৬ চার ও ৪ ছক্কায়। শেষ দিকে মিলান রত্নায়েকের ও হাসারাঙ্গার ২২ রানের দুটি ইনিংসে আড়াইশ রানের কাছাকাছি পুঁজি পায় লঙ্কানরা।

দলে ফিরে ৪৭ রানে ৪ উইকেট নেন তাসকিন। ২ মেডেন ছিল তার বোলিং স্পেলে। ৩ উইকেট পেয়েছেন তানজিম হাসান। ১টি করে উইকেট নেন তানভীর ও শান্ত। মিরাজ ও মোস্তাফিজ ছিলেন উইকেটশূন্য। 

সেঞ্চুরি করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন আসালাঙ্কা।

অসহায় আত্মসমর্পণে বাংলাদেশ সিরিজে পিছিয়ে গেল। ৫ জুলাই একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। মিরাজের অধিনায়কত্বের যাত্রাটা শুরু হলো পরাজয় দিয়ে। সিরিজে টিকে থাকতে পারবে তো বাংলাদেশ?

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়