ফতুল্লা স্টেডিয়ামের জন্য আমিনুলের চার প্রতিশ্রুতি
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শাহরিয়ার নাফিসের সেঞ্চুরি কিংবা ২০১৬ সালে যুব ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়া। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ড্র কিংবা এশিয়া কাপে মুশফিকুর রহিমের ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি। নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পাশাপাশি পুরুষরাও স্বদর্পে ২২ গজে ছড়ি ঘুরিয়েছেন। সবকিছুর সাক্ষী হয়ে আছে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যা এখন শহীদ রিয়া গোপ নামে পরিচিত।
মূল মাঠের পাশাপাশি আউটডোরেও খেলা হতো নিয়মিত। অথচ পুরো স্টেডিয়াম এলাকা এখন পরিত্যক্ত। মাঠে বল গড়ানোর কোনো উপায় নেই। ২০১৬ সালের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়নি। ২০২০ সালে হয়েছে সবশেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। অবহেলায়, অযত্নে পুরো মাঠটাই হারিয়ে গেছে ক্রিকেট মানচিত্র থেকে। এর আগে নাজমুল হাসান পাপনের বোর্ড একাধিকবার মাঠ সংস্কার, খেলা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল থাকেনি।
রুগ্ন অবস্থায় থাকা এই মাঠ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। রোববার তিনি গিয়েছিলেন ফতুল্লা স্টেডিয়াম পরিদর্শনে। মাঠে প্রবেশদ্বারে পানি জমা। হাতের ডানপাশের মাঠ কচুরিপানার তলে। স্টেডিয়ামের মূল ফটক দেখে বোঝার উপায় নেই ভেতরে কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়েছে।
মূল স্টেডিয়াম খেলার অনুপযোগী। অবকাঠামো সব সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও ঢাকার এতো কাছের স্টেডিয়াম স্রেফ যত্নের অভাবে উপেক্ষিত। যা দেখে বোর্ড সভাপতির কান্নাও পাচ্ছিল।
‘‘ফতুল্লা মাঠটা দেখে এলাম। আমার খুব... আমার খুব কান্না পাচ্ছিল। এই মাঠে শাহরিয়ার নাফীস সেঞ্চুরি করেছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল হয়েছিল। এশিয়া কাপের খেলা হয়েছিল। সেই মাঠটার অবস্থা অত্যন্ত করুণ।’’
‘‘গতকালকে আপনাদের নারায়ণগঞ্জের ছেলে জিসান আলম একটা ফিফটি করেছে টপ এন্ড সিরিজে। আর আজকে দেখলাম জিসান যেখানে অনুশীলন করে, এটা আমি মেলাতে পারছি না। সে ওয়ার্ল্ড স্ট্যান্ডার্ডে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফিফটি করছে আর তার অনুশীলনের ব্যবস্থা এখানে কী!’’ - যোগ করেন তিনি।
স্থানীয় কোচ জাহাঙ্গীর তিনটি উইকেট নিয়ে অনুশীলন করাচ্ছেন স্থানীয়দের। যা আমিনুলের কাছে স্রেফ অবিশ্বাস্য। বোর্ডের কোষাগারে শত কোটি টাকা। অথচ আগামীর ক্রিকেটাররা তৈরি হচ্ছেন তিনটি উইকেটে?
এই মাঠে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেট ফেরার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমিনুল। এজন্য ৪টি কাজ করার ঘোষণাও দিয়েছেন, ‘‘জাহাঙ্গীর খুব গর্ব করছিল, আমার এখানে ৩টা উইকেট আছে। যখন একজন জেলার কোচ ৩টা উইকেটে খুশি হয়ে যায় এবং সেখান থেকে জিসান আলম বা রনি তালুকদারের মতো ক্রিকেটার উঠে আসে, এটা বলব অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। এখানে ৩টা কেন, ৩০টা উইকেট থাকা উচিত।’’
‘‘আমি কথা দিচ্ছি... আমার সঙ্গে বিসিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (নাজমুল আবেদিন ফাহিম) আছেন, আমরা প্রথম অনুশীলন সুবিধা বাড়ানোর কাজ করব। এখানে ৩টা উইকেট কেন থাকবে। অন্তত ১৫-২০টা উইকেট থাকা উচিত। সেই চেষ্টা আমরা করব।’’
‘‘এখানে যদি আমরা ইনডোর করতে পারি... জেলা প্রশাসক এখানে আছেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাসুদ ভাই আছেন, ফাহিম ভাই আছেন। আমরা যদি একটা ছোটখাটো কম খরচের ইনডোর করতে পারি এবং আউটডোর সুবিধা বাড়াতে পারি, তাহলে খুব অনায়াসে এখানে একটা হাই পারফরম্যান্স সেন্টার করা সম্ভব। তো এই ৪টা প্রতিশ্রুতি- ফ্যাসিলিটি, গ্রাউন্ড, কোচ ডেভেলপমেন্ট ও হাই পারফরম্যান্স সেন্টার, এই ৪টা কাজ আমরা ইনশাআল্লাহ্ শুরু করব।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল