ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

হলমার্ক কেলেঙ্কারি

কারসাজি স্বীকার জনতা ব্যাংক কর্মকর্তাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৮, ১৮ নভেম্বর ২০১২   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কারসাজি স্বীকার জনতা ব্যাংক কর্মকর্তাদের

ঢাকা: হলমার্কের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় ‘নন ফান্ডেড’ ঋণে কারসাজির বিষয়টি স্বীকার করেছেন জনতা ব্যাংকের মতিঝিল লোকাল ব্রাঞ্চের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আমিনুল ইসলামসহ অপর ছয় কর্মকর্তা।

রোববার বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত তাদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত টিম।

সোনালী ব্যাংকের গ্যারান্টিতে হলমার্ককে ঋণ দেয় জনতা ব্যাংক। এ টাকা দিয়ে এখন হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে ফেঁসে যাচ্ছে জনতা ব্যাংকের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

দুদক জানায়, জালিয়াতির মাধ্যমে হলমার্ক গ্রুপ প্রায় দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা নেয় তার মধ্যে সরাসরি সোনালী ব্যাংক থেকে নেয় প্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বাকি টাকা নেয় সোনালী ব্যাংকে খোলা এলসি দেখিয়ে জনতা ব্যাংক থেকে।

এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার জনতা ব্যাংকের মতিঝিল লোকাল ব্রাঞ্চের জিএম আমিনুল ইসলাম, উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জয়নাল আবেদীন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রুহুল আমিন খান, ব্যবস্থাপক (এক্সপোর্ট) আলাউদ্দিন আকন্দ, এক্সপোর্ট শাখার ইনচার্জ আবদুল গফুর, এলিফ্যান্ট রোড শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার আবুল কালাম আজাদ ও শাহবাগ শাখার এম এম শোয়েবুল কবিরকে ডেকে নেয় দুদক।

দুদকের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক মীর জয়নাল আবেদীন শিবলী ও আবদুল্লাহ আল জাহিদের নেতৃত্বে একটি তদন্ত টিম তাদের জবানবন্দি নেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের সময় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সামনে ঋণপত্র (এলসি) কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয় এবং এতে তাদের করা স্বাক্ষর সঠিক কিনা তা জিজ্ঞাস করা হয়। এতে তারা ‘স্বাক্ষর করেছেন মর্মে স্বীকারোক্তি দেন। তবে তারা দুদকের তদন্ত টিমকে জানিয়েছেন এ কাজে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তারা স্বাক্ষর করেছেন। স্বাক্ষরের কারণে দায়বদ্ধতা থাকলেও কারসাজির ঘটনায় তারা জড়িত নন বলে দাবি করেন।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় উপস্থিত থাকা দুদকের একজন তদন্ত কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘নিয়ম ভেঙে জনতা ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা ঋণপত্রে স্বাক্ষর করেন। ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে এদেরও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।’’
 
এদিকে, এ কেলেঙ্কারির বিষয়ে সোমবার একই ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখার জিএম আবদুস সালাম আজাদ, ডিজিএম এসএম আবু হেনা মোস্তফা কামাল, এজিএম মুসতাক আহমেদ খান, বৈদিশিক শাখার ডিজিএম শেখ হায়দার হোসেন ও এজিএম মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

উল্লেখ্য, সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখা থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত হলমার্ক গ্রুপসহ ছয় প্রতিষ্ঠান ও ২৬ ব্যাংকের ৬১টি শাখার কর্মকর্তারা জড়িত থাকার বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য পায় দুদক কর্মকর্তারা। এর মধ্যে স্বীকৃত বিলের বিপরীতে পরিশোধিত (ফান্ডেড) অর্থ হচ্ছে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৭ টাকা। এ বিষয়ে ফান্ডেড ঋণে কারসাজির ঘটনায় হলমার্কের মালিকপক্ষ ও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় হলমার্কের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, এমডি তানভীর মাহমুদ, জিএম তুষার আহমেদ ও সোনালী ব্যাংকের জিএম (সাময়িক বরখাস্ত) একেএম আজিজুর রহমানকে গ্রেফতারের পর কারাবন্দী রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নন-ফান্ডেড ঋণে কারসাজির বিষয়ে চলমান অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে জনতা ব্যাংকের সাত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়