ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘পানিফল’ নদীভাঙা মানুষের ‘ভাগ্যের কল’

শোয়েব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৬, ২৬ অক্টোবর ২০১৩   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘পানিফল’ নদীভাঙা মানুষের ‘ভাগ্যের কল’

নদীভাঙা মানুষের ভাগ্যের পানিফল

জেলা প্রতিবেদক
জামালপুর, ২৬ অক্টোবর: খাল, বিল, ডোবা আর বদ্ধ জলাশয়ে পানিফল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার অনেক হতদরিদ্র মানুষ। অল্পপুঁজি ব্যয় করে পানিফল চাষের মাধ্যমে দু’পয়সা বাড়তি আয় করে অভাবের সংসারে সচ্ছলতা এনেছে প্রায় দেড়  শতাধিক পরিবার।

ওই এলাকার লোকমুখে এখন শোনা যায়, পানিফল নদীভাঙা মানুষের ভাগ্যের কল। সত্যিই তাই? তারই তথ্য নিতে আমাদের জামালপুর প্রতিনিধি ঘুরেছেন দেওয়ানগঞ্জের যমুনা পাড়ে। যমুনা তীরের উপজেলা দেওয়ানগঞ্জে নদী ভাঙনে প্রতিবছরই নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য মানুষ।

ঘর-বাড়ি, সহায়-সম্বল হারিয়ে নদীভাঙ্গা এসব মানুষ কাজের সন্ধানে ছুটে যায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড়ো শহরগুলোতে। আর যারা যেতে পারে না দারিদ্র্যের সঙ্গে নিয়ত লড়াই করে তাদের টিকে থাকতে হয়। এমনি কিছু নিঃস্ব মানুষ উপজেলার খাল, বিল, ডোবা আর বদ্ধ জলাশয়ে পানিফল চাষ করে খুঁজে পেয়েছে নিজেদের বেঁচে থাকার অবলম্বন।  

স্থানীয়ভাবে পানিফল সিঙ্গারা নামে পরিচিত। সুস্বাদু পানিফলের কদর শুধু জামালপুরে নয়, সারাদেশেই রয়েছে। এই পানিফলের চাষ পদ্ধতিও খুবই সহজ। বদ্ধ জলাশয়ে জৈষ্ঠ্য মাসে ১০/১২টি পানিফল ফেলে রাখলে কিছুদিন পর তা থেকে বেশ কয়েকটি গাছ হয় আর সেই গাছ টুকরো করে ছড়িয়ে দিলে তা  মাত্র কয়েক মাসে শাপলা গাছের মতো প্রায় পুরো একবিঘা জলাশয় ছেয়ে যায় পানি ফলে। শুরু থেকে পানিফল ওঠা পর্যন্ত সবমিলিয়ে সময় লাগে ৬ মাস।

আর একবিঘা জমির জলাশয়ে খরচ হয় মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। প্রতি মন পানিফল বিক্রি হয় তিন থেকে সাড়ে তিন শত টাকা। সবমিলিয়ে খরচ বাদ দিয়ে এক বিঘা জমির জলাশয় থেকে আয় হয় ১৫ হাজার টাকা।

দানেছ আলী, মির্জা বদি উজ্জামান, বিপ্লব আলী, তারা মিয়াসহ পানিফল চাষীরা জানিয়েছে, সরকারী বা বেসরকারী খাত থেকে ঋণ সহায়তা পেলে আরো অনেক মানুষ পানি ফল চাষ করে একদিকে নিজেরা যেমন স্বাবলম্বী হতে পারে তেমনি গ্রামীণ অর্থনীতিতেও অবদান রাখা সম্ভব হবে।

 

রাইজিংবিডি / শোয়েব / রাপা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়