বাবার সাথে ঢাকার পথে মিন্নি

চিকিৎসা ও আইনি পরামর্শের জন্য বাবার সাথে ঢাকা রওনা দিয়েছেন আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। ঢাকাগামী এমভি শাহারুখ লঞ্চে শনিবার বিকেল ৪টায় বরগুনা লঞ্চঘাট থেকে মিন্নি রওনা দেন। সাথে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর, নানা জাকির সিকদার ও আরো একজন আত্মীয় রয়েছেন।

বাসা থেকে লঞ্চঘাট পর্যন্ত গোয়েন্দা বিভাগের দুজন কর্মকর্তা তাদের সাথে ছিলেন।

লঞ্চে কথা হয় মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের সাথে। তিনি জানান, ‘মিন্নির মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ। সেই সঙ্গে শরীরে নানা ধরনের রোগের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তার দ্রুত উন্নত চিকিৎসা জরুরি।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘রিমান্ডে নিয়ে তার মেয়ে মিন্নিকে পুলিশ নির্যাতন করেছে। তার দুই হাঁটুতে এখনো ব্যথা। তাছাড়া রিফাত হত্যার সাথে জড়িয়ে আসামি করে পুলিশ চার্জশিট দেয়ায় মিন্নি দুশ্চিন্তা ও হতাশায় ভুগছে। মিন্নি এখন মানসিক রোগী। তাই তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়া হচ্ছে।’

এছাড়াও মিন্নির জামিনের পর বিনা পারিশ্রমিকে উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই করা আইনজীবীদের সাথে দেখা করে তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন বলেও জানান তিনি। আগামীকাল মিন্নি সুপ্রিম কোর্টের চেম্বারে তার প্রধান আইনজীবী জেড আই খান পান্নাসহ তার পক্ষে লড়া সব আইনজীবীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। মিন্নিকে জড়িয়ে মিথ্যা চার্জশিটের ব্যাপারেও আইনজীবীদের পরামর্শ নেবেন। তবে আদালতের নিষেধ থাকায় মিডিয়ার সঙ্গে মিন্নি কোন কথা কথা বলবেন না।

রিফাত হত্যা মামলায় ২৪ জনকে আসামি করে দুটি পৃথক অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। ১৮ সেপ্টেম্বর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহন করে। ওই অভিযোগপত্রে মিন্নিকে ৭নং আসামি করা হয়েছে। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে হত্যার পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত ২৯ আগস্ট মিডিয়া সঙ্গে কথা না বলা এবং বাবার জিম্মায় থাকার শর্তে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। জামিন বাতিলে রাষ্ট্রের আবেদন নামঞ্জুর করে হাইকোর্টের দেয়া জামিন চেম্বার আদালত বহাল রাখায় ২ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান মিন্নি।

গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের বাবা দুলাল শরীফ বাদি হয়ে ২৭ জুন ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে মিন্নিকে তার বাবার নয়াকাটার বাসা থেকে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত ৯টায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।


বরগুনা/রুদ্র রুহান/সাজেদ