ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘আপনার সঙ্গে কথা বলার সময় নেই, কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করব’

সাইফুল্লাহ হাসান, মৌলভীবাজার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ৩০ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১২:৩২, ৩০ অক্টোবর ২০২০
‘আপনার সঙ্গে কথা বলার সময় নেই, কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করব’

নানা সংকটে  মৌলভীবাজারে পরিবার পরিকল্পনা সেবা থেকে বঞ্চিত জেলার সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন,সেবা বা কেন্দ্রের বিষয়ে স্থানীয়দের পর্যাপ্ত ধারণা নেই। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ বলছে, জনবল সংকট, মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের দায়িত্বহীনতা ও আন্তরিকতার অভাবে পর্যাপ্ত সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় পরিবার কল্যাণ সহকারী রয়েছেন ২৩৮ জন, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক আছে ৪৯ জন ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ৪৩টি। জনগণের কাছে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে জেলার গুরুত্বপূর্ণ ৪৩টি পয়েন্টে ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। 

সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র খোলা থাকার কথা। তবে সরেজমিন জেলা সদরের বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, সকাল ১০ টার পরও অনেক কেন্দ্র খোলা হয়নি। সেবা গ্রহীতাদের এসে অপেক্ষা করতে হয়। জেলার অন্যান্য উপজেলার বেশিরভাগ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের চিত্র এমনই। 

জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের রাশেদা আক্তার রুমি বলেন, অনেক সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে কোনো ধরনের সেবা নিতে গেলে সঠিক সেবা পাইনি। সেখানে দায়িত্বরতরা রোগীদের গুরুত্ব দেন না।  তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন এখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন। তিনি বলেন, কিছু লোক আছে যারা অন্যের ভালো চায় না। তারাই এ ধরনের অভিযোগ করে। আমরা সাধ্য অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছি। 

এদিকে, একই উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের বটনীঘাট, ভরাডহর ও পতিলাসাঙ্গন ইউনিট পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ঘুরে একই অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক  দম্পতি বলেন, মাঝে মধ্যে একজন মহিলা এসে শিশুদের ঠিকা দেওয়ার জন্য বলেন। এছাড়া আর কেউ আসে না। 

এ বিষয়ে জানতে পরিবার কল্যাণ সহকারী রোকেয়া বেগম বলেন, আপনার সঙ্গে কথা বলার আমার সময় নেই। প্রয়োজনে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করব। 

গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের লাঠিটিলা ও কচুরগুল এলাকায় গিয়ে জানা যায়, যিনি পরিবার কল্যাণ সহকারী রয়েছেন তিনি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেন না। রোগীরা বাধ্য হয়ে ওনার বাড়িতে সেবা নিতে যান। 

কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল গ্রামের নব দম্পতি ইমা বেগম বলেন, বিয়ের ৬ মাস হলেও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কেউ যোগাযোগ করেনি।

রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের ফাতেমা বেগম বলেন, গত এক বছরে তারা কেউ আসেনি। করোনার আগে একবার সুখী পরিবারের তথ্য নেওয়ার জন্য দুজন মহিলা এসেছিলেন। 

সার্বিক বিষয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক সেবা ঘাটতির কথা স্বীকার করে রাইজিংবিডিকে বলেন, জনবল সংকটের কারণে পর্যাপ্ত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। তবে অনেক পরিবার কল্যাণ সহকারী, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ এসেছে। ইতিমধ্যে অনেককে শোকজও করেছি। আবার কাউকে কাউকে মৌখিকভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। 

মৌলভীবাজার/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়