ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

নিজেই ভোট দিতে পারেননি কাউন্সিলর প্রার্থী

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩০, ২৭ জানুয়ারি ২০২১  
নিজেই ভোট দিতে পারেননি কাউন্সিলর প্রার্থী

ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও এজেন্টের যোগসাজসে ভোট কারচুপি করে পরাজিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কুষ্টিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর প্রার্থী। 

এদের মধ্যে একজনের অভিযোগ, তিনি খোদ নিজের ভোটই দিতে পারেননি। ওই ওয়ার্ডে তারা পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে দুই পরাজিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর পিয়ার আলী জোমারত ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক ভোট বাতিল করে নতুন করে ভোট গ্রহণ করতে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।

গত ২২ জানুয়ারি (সোমবার) বর্তমান কাউন্সিলর পিয়ার আলী জোমারতের দেওয়া লিখিত আবেদনে বলা হয়েছে- ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালিশংকরপুর হাজী মফিজ উদ্দিন নুরানী মাদ্রাসার ভোটকেন্দ্রে মোট ভোট পোল হয়েছে এক হাজার ১৫৯টি অথচ প্রিজাইডিং অফিসার ও সংশ্লিষ্টরা ২১৪ ভোট বেশি দিয়ে এক হাজার ৩৭৩ ভোট দেখিয়ে ব্রিজ প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন।

আবেদনে পরাজিত প্রার্থীর অভিযোগ, প্রিজাইডিং অফিসার কাউন্সিলর প্রার্থীর ফলাফল শিট না টানিয়ে তড়িঘড়ি করে শুধুমাত্র মেয়র ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীর ফলাফল শিট দিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করেন। প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও ব্রিজ প্রতীকের এজেন্ট একে অপরের যোগসাজসে ভোট কারচুপি করেছেন।

পৌরসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে গত ১৬ জানুয়ারি কুষ্টিয়া পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রিজ প্রতীকে ৮১০ ভোট পেয়ে এইচ এম তানভীর নবেল কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল মালেক পানির বোতল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৬৪ ভোট এবং বর্তমান কাউন্সিলর পিয়ার আলী জোমারত টেবিল ল্যাম্প প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬৭৮ ভোট।

পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী পিয়ার আলী জোমারত জানান, ভোটের পরের দিন কালিশংকরপুর হাজী মফিজ উদ্দিন নুরানী মাদ্রাসার ভোটকেন্দের ফলাফল শিটে পোল হওয়া ভোটের অতিরিক্ত ২১৪ ভোট দেখানো হয়েছে। মারা যাওয়া এবং বিদেশ অবস্থান করা ভোটারের ভোটগ্রহণ দেখিয়ে গণনা করা হয়েছে। 

৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালিশংকরপুর পশ্চিমপাড়া আনোয়ারা বেগম দীর্ঘদিন আমেরিকায় বসবাস করছেন। অথচ তার ২৮৪ নম্বর ভোটার ক্রমিক নম্বরে জালভোট প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়া মধ্যপাড়া এলাকার বেদানা বেগম গত তিনমাস আগে এবং একই এলাকার ফাতেমা খাতুন বছর খানেক আগে মারা গেছেন। তারপরও তাদের ভোট পড়েছে দেখানো হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘এসব কারণে আমি পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তাদের কাছে আবেদন করেছি।’

এদিকে অপর পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমি নিজেও একজন কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। অথচ আমার ভোট আমি নিজেই দিতে পারিনি। বিজয়ী প্রার্থী ও আমার ভোটের ব্যবধান ৪৬ ভোটের। আমি শতভাগ আত্মবিশ্বাসী, ভোটাররা আমাকেই বিজয়ী করেছেন। অথচ ভোট কারচুপির কারণে আমি অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি পৌর ৭ নম্বর ওয়ার্ডে পুনঃ ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়ে জেলা রিটানিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন জমা দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

জেলা রিটানিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লুৎফুননাহার বলেন, ‘পুনঃ ভোট গ্রহণের আবেদন করেছেন দুই প্রার্থী। তবে এ ব্যাপারে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’

কাঞ্চন কুমার/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়