ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বিআরডিবির হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে ৩৬ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ

 রুমন চক্রবর্তী, কিশোরগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০১, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১  
বিআরডিবির হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে ৩৬ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ

চেক জালিয়াতির মাধ‌্যমে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)-এর হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজের বিরুদ্ধে।  অভিযোগে বলা হয়েছে,  তিনি ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিআরডিবি-এর ১০৬টি চেক জালিয়াতি করে এই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। 

অভিযোগ পেয়ে বিআরডিবির উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।  একইসঙ্গে চেক জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের  অভিযোগে আরও ৪ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।  এরপর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখতে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি  বোর্ডের একজন যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিআরডিবি-সূত্রের অভিযোগ—কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে আদায় করা ঋণের কিস্তির টাকা কটিয়াদী উপজেলার অগ্রণী, কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে জমা রাখা হতো। সেই টাকা হিসাবরক্ষক ফেরদৌস দীর্ঘদিন ধরে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে সেই তুলে নিতেন। এই ঘটনায় চেক বই বাতিলের জন্য কটিয়াদি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিআরডিবি যুগ্ম পরিচালক ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা অভিযোগের সত্যতা খুঁজে দেখছি। যেহেতু অভিযোগের সঙ্গে যাবতীয় বিল ভাউচার, ব্যাংকের স্টেটমেন্ট ও চেকের বিভিন্ন বিষয় জড়িত, তাই সেগুলোও যাচাই করছি। আপাতত অভিযুক্তকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ’

কিশোরগঞ্জ বিআরডিবি’র উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রথমে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার চেক জালিয়াতির অভিযোগ পাই।  তদন্ত করে এর সত্যতাও পেয়ছি। পরে আরও অনিয়ম যাচাই করতে বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি পাঠাই।  সেখান থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সব বিষয় তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলাসহ বিভাগীয় ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে চেক জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাতের প্রধান অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে রাইজিং বিডিকে বলেন, ‘অফিসের প্রধান কর্মকর্তা ও আমার যৌথ স্বাক্ষরেই টাকা উঠানো হয়। বিভিন্ন সময় খরচ দেখিয়ে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তারা চেকে আমার সই নিয়ে টাকা তুলেছেন।  তারা কিভাবে সেই টাকা খরচ করেছেন, সে হিসাবও কখনো দেননি। ব্যাংকের চেকবই ও সব কাগজপত্র সঠিকভাবে যাচাই করলে নির্দোষ প্রমাণিত হবো। ’

কটিয়াদি উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, ‘মহাপরিচালকের কাছে অভিযোগ যাওয়ার পর আমাকেও এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। আমিও এই ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছি।  আমিসহ ৪ জন কর্মকর্তার সাক্ষর জাল করেছেন হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজ।  তিনি ইউএনও’র স্বাক্ষর পর্যন্ত জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছেন। এর সম্পূর্ণ দায়ভার হিসাবরক্ষকের।’ তদন্ত শেষেই প্রকৃত রহস্য জানা যাবে বলেও তিনি মন্তব‌্য করেন।

/এনই/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়