ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘ককটেল’ সেবনে ৩ বন্ধুর মৃত্যু 

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৮, ২৯ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৩:০২, ২৯ ডিসেম্বর ২০২১
‘ককটেল’ সেবনে ৩ বন্ধুর মৃত্যু 

পাবনা শহরের চক ছাতিয়ানী মোল্লাপাড়া মহল্লার ৩ বন্ধুর মৃত্যু ককটেল মদ (বিভিন্ন ধরনের মাদক মিশ্রনে নেশা) সেবন করে হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তে ও হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ দুইজনের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

অতিরিক্ত মদপানে তিন বন্ধুর মৃত্যু ও দুইজন গুরুতর অসুস্থ হওয়ার খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি থাকা শহিদুল ইসলামের জবানবন্দি গ্রহণ করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পাবনা সদর সার্কেলের পরিদর্শক মো. শাহ জালাল খান।

শহিদুলের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পরিদর্শক শাহ জালাল খান বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে এ প্রতিবেদককে জানান, তারা মদ পান করেননি। তিনি রুমনের সঙ্গে শহরের বড় বাজার যান। তাকে মোড়ে দাঁড় করিয়ে রেখে ভেতর থেকে একটি পলিথিনে স্প্রিট আনে রুমন। এরপরে তারা ৫ জন ঘুমের বড়ি, কোক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট পানির সঙ্গে মিশিয়ে ককটেল মদ  (বিভিন্ন ধরনের মাদক মিশ্রনে নেশা) বানিয়ে সেবন করেন। পরে বিরানী ও চিপস খাওয়ায় গ্যাসের কারণে বুক জ্যাম হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান শহিদুল।

অপরদিকে, রাজশাহী বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী পরিচালক রওনক আক্তার মিতু জানান, রাজশাহী মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা সবুজ হোসেনের জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন তিনি।

সবুজের জবানবন্দির বরাত দিয়ে রওনক আক্তার মিতু জানান, রুমন পাবনার বড় বাজার থেকে একটি পলিথিনে ৫শ মিলিগ্রাম সাদা এক ধরনের লিকুইড নিয়ে আসে, সম্ভবত এটা ‘স্প্রিট’ হবে। এরপরে তারা চক ছাতিয়ানীর মোল্লাপাড়ার শিল্পীর নির্মাণাধীন বাড়িতে এক সঙ্গে হয়ে ঘুমের বড়ি, কোক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট অল্প পরিমাণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে (ককটেল) বানিয়ে সেবন করে। পরে বিরানী ও চিপস খায়। এরপর থেকে অসুস্থতা বোধ করেন তারা।

হাসপাতালে বিছানায় শুয়েই রুমন, জনি ও রুবেলের মৃত্যুর কথা শুনে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন শহিদুল ও সবুজ। জবানবন্দিতে তারা আরও বলেন, ‘কেউ যেনো এমনভাবে ককটেল বানিয়ে না খায়। খুব কষ্ট পেয়েছি, মৃত্যুর যন্ত্রণা যে কি, তা খুব কাছ থেকে দেখেছি।’

তিন বন্ধুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়। যেখানে অসুস্থদের জবানবন্দি থেকে উঠে এসেছে এসব তথ্য। ইতোমধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জবানবন্দিসহ তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলে জানান পরিদর্শক শাহজালাল খান।

উল্লেখ্য, গত ২৫ ডিসেম্বর ভোররাতে পাঁচ বন্ধু মাদক সেবন করে। তার মধ্যে চক ছাতিয়ানি মহল্লর রবিউল ইসলাম রুমন (৩৫), জনি হোসেন (৩০) ও রুবেল হোসেন (৩২) মারা যায়। সবুজ হোসেন ও শহিদুল ইসলাম এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

শাহীন/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়