বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে কার্পেটিং 

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৬ কোটির টাকা ব্যয়ে সড়ক কার্পেটিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে মুষলধারা বৃষ্টির মধ্যে। বৃষ্টি ও কাদার মধ্যে কাজ করার কারণে এই সড়ক কতদিন টিকবে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।  

আর এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। 

গত শনিবার (২১ মে) প্রচণ্ড বৃষ্টির পানিতে ও কাদামাটিতে ঠিকাদার নিয়োজিত শ্রমিকরা সড়কের কার্পেটিং করেছেন- এমন
খবর ছড়িয়ে পড়লে তুমুল সমালোচনাে সৃষ্টি হয়। কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেন স্থানীয়রা।

জানা যায়, উপজেলার ওয়াহ্লা কারবারী পাড়ায় নির্মাণাধীন সড়কে মাটিযুক্ত ও অপরিষ্কার, গাছের পাতা, ডাল রাস্তায় পড়ে আছে তার উপর রাস্তায় কাপেটিংয়ের কাজ করেছেন শ্রমিকরা। উক্ত কাজে নিম্মমানের বিটুমিন, ময়লাযুক্ত বুজুরি ও অপরিষ্কার পাথরের সংমিশ্রণে রাস্তার কার্পেটিং করা হয়েছে। পাশে উপজেলা এলজিইডির অফিস সহায়ক দাঁড়িয়ে থাকলেও কোন প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি।

এলজিইডি আলীকদম অফিস সূত্রে জানা যায়, নয়াপাড়া ইউনিয়নের এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা’র ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে ৬ কোটি ১৮ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকায় ৫ প্যাকেজে সড়ক উন্ননের নামে কার্পেটিং কাজটি দেওয়া হলেও কার্পেটিংয়ের
কাজটি করছেন ঠিকাদার আবু বক্কর।

স্থানীয় ওচাইমং মার্মা ও মচিং মার্মা বলেন, রাস্তা কার্পেটিং করার আগে বিটুমিন ব্যবহারের কথা থাকলেও তা ব্যবহার করছেন নামমাত্র। শনিবার বৃষ্টির পানি ও কাদামাটিযুক্ত পানির উপর দিয়ে কার্পেটিং করেন ঠিকাদারের লোকজন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) লোকজনের উপস্থিতিতে ঠিকাদার নিজের মর্জিমত কাজ করেন। বৃষ্টিতে কাজ না করতে নিষেধ করলে আমাদেরও হুমকি দেওয়া হয়। 

এই ব্যাপারে ঠিকাদার আবু বক্কর বলেন, সকালে বৃষ্টি না থাকায় কাপেটিং কাজ চলেছে। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় কার্পেটিংয়ের মালামাল নষ্ট হয়ে যাবে তাই শ্রমিকরা রাস্তায় ব্যবহার করেছেন।

ময়লা ও কাদাপানিতে কিভাবে কার্পেটিং করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, হালকা ময়লা থাকবে বর্ষার দিনে। কাজ করার সময় অফিসের লোকজন থাকে তারা কেন বাধা দিচ্ছেন না।

আলীকদম উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ মাহমুদ বলেন, বৃষ্টিতে যতটুকু কার্পেটিং হয়েছে পরিদর্শনে গিয়ে সবটুকু তুলে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কার্পেটিং করার সময় রাস্তায় কোন ময়লা থাকতে পারবে না। বৃষ্টিতে কাজ বন্ধ রাখার জন্য প্রতি বছর এলজিইডি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের চিঠি দিলেও এখনও পর্যন্ত কোন চিঠি পাননি বলে জানান উপজেলা প্রকৌশলী।

তিনি আরও বলেন, সড়কের কাজ শতভাগ মান সম্মত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।