ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রাসিক নির্বাচন: নতুন ভোটারদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেবে আ.লীগ

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২২, ২৯ এপ্রিল ২০২৩   আপডেট: ১৬:২৩, ২৯ এপ্রিল ২০২৩
রাসিক নির্বাচন: নতুন ভোটারদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেবে আ.লীগ

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে এবার ৩০ হাজার ১৫৭ জন নতুন ভোটার প্রথম ভোট দেবেন। এই নবীন ভোটারদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেবে আওয়ামী লীগ। নবীন ভোটারদের মাঝেও এই নির্বাচন নিয়ে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। তারা আগামী ২১ জুন প্রথমবার ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বলে জানিয়েছেন।

রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী খাইরুন নাহার এবার প্রথমবার কোনো নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এবার নতুন ভোটার হয়েছি। আমার ভোটে শহরের মেয়র নির্বাচিত হবেন, এটি ভাবতেই ভালো লাগছে। ২১ জুন অবশ্যই কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেব।’

আরো পড়ুন:

ভোট দেওয়ার আগে প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতিগুলো ভালভাবে জেনে নিতে চান রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জীবনে প্রথমবার ভোট দেব, তাই এমন প্রার্থীকে ভোট দেব যিনি যোগ্য। প্রার্থী তরুণদের জন্য কী কী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, সেটিও হিসাব করব। মেয়রের কাছে তো তরুণ সমাজেরও অনেক প্রত্যাশা থাকে।’

এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় নেতা এবং বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকেই প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন। তবে ভোটের মাঠে দেখা যাচ্ছে না ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী ও জাতীয় পার্টির একাংশের ঘোষণা করা মেয়র প্রার্থী সাহাবুদ্দিন বাচ্চুকে। অন্য কোনো দলের পক্ষ থেকে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।

আওয়ামী লীগ নতুন ভোটারদের ভোট টানতে এবার তাদের কর্মসংস্থানের প্রতি জোর দিচ্ছে। মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘এবার আমাদের নির্বাচনি শ্লোগান হবে- উন্নয়ন দৃশ্যমান, এবার হবে কর্মসংস্থান। সুতরাং এটি তরুণদের জন্যই ভেবে ঠিক করা হয়েছে। আমরা তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি এবার খুব গুরুত্ব দেব। সেভাবেই নির্বাচনি ইস্তেহার হবে।’

জেলা নির্বাচন অফিস জানিয়েছে, সিটি করপোরেশন এলাকায় এবার ৩ লাখ ৫২ হাজার ১৫৭ জন ভোটার রয়েছেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ১৮৫ জন এবং নারী ১ লাখ ৮০ হাজার ৯৭২ জন। মোট ভোটারের মধ্যে এবার ৩০ হাজার ১৫৭ জন নতুন ভোটার হয়েছেন। এবার সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে সম্ভাব্য ১৫২টি ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ১৭৩টি কক্ষে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুজ্জামান লিটন ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৯৮ হাজার ৩৮০ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল সেবার ভোট পান ৭৪ হাজার ৫৫০টি। খায়রুজ্জামান লিটন ২৩ হাজার ৮১০ ভোটের ব্যবধানে মেয়র হন।

২০০৮ সালের ভোটের পর খায়রুজ্জামান লিটনের পাঁচ বছরে রাজশাহী শহরের উন্নয়ন ছিল দৃশ্যমান। তবে ২০১৩ সালের নির্বাচনে হেরে যান লিটন। সেই নির্বাচনে বুলবুল ভোট পান ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৯৬ ভোট। আর লিটনের বাক্সে পড়ে ৮৩ হাজার ৩৮৯ ভোট। তিনি পরাজিত হয়েছিলেন ৪৮ হাজার ৪০৭ ভোটে।

এরপর ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই ভোটে আবারও খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র নির্বাচিত হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩৩২ ভোট। ধানের শীষ প্রতীকে বুলবুল পান ৭৭ হাজার ৭০০ ভোট। মেয়র লিটন গত পাঁচ বছরে রাজশাহীকে দেশের সেরা শহর হিসেবে গড়ে তুলেছেন। এবার তিনি কর্মসংস্থানে জোর দিয়ে আরেকবার নির্বাচিত করার আহ্বান জানাচ্ছেন।

রাসিক নির্বাচনের প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আগামী ২৩ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। ২৩ মে অথবা এর আগে যে কোনো দিন (সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনসহ) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র গ্রহণের শেষ তারিখ ২৩ মে। এরপর মনোয়নপত্র বাছাই করা হবে ২৫ মে। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর বৈধ প্রার্থীরা ১ জুন পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারবেন। এরপর ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ জুন।

তবে শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত কোনো মেয়র কিংবা কাউন্সিলর প্রার্থী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ কিংবা দাখিল করেননি। রাসিক নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আহমেদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘অফিশিয়ালি বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল করার সময় শুরু হয়েছে। তবে শনিবার দুপুর পর্যন্ত কেউ আসেননি। এখনও সময় আছে। সেই জন্য হয়ত প্রার্থীরা এখনও আসছেন না। তবে আমরা প্রস্তুত আছি।’

কেয়া/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়