ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

তফসিল ঘোষণার পরও পাবনায় বিলবোর্ড-ব্যানার অপসারণ হয়নি

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ২৪ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৭:৩৫, ২৪ নভেম্বর ২০২৩
তফসিল ঘোষণার পরও পাবনায় বিলবোর্ড-ব্যানার অপসারণ হয়নি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এক সপ্তাহ পার হলেও পাবনায় এখনও অপসারণ হয়নি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিলবোর্ড, পোস্টার ও ফেস্টুন। এক্ষেত্রে এসব অপসারণের দায়িত্ব যাদের তারা এখনও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনাপত্র না পাওয়ায় কাজ শুরু করতে পারছেন না।

মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলছেন, তারা ঢাকায় দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যস্ত থাকায় সরাতে পারেননি। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করছেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা উপেক্ষিত হলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে স্বচ্ছতা।

আরো পড়ুন:

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পাবনা শহরের প্রধান আব্দুল হামিদ সড়কে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও সোনালী ব্যাংক এলাকা ঘিরে শোভা পাচ্ছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন।

শুধু এখানেই নয়, শহরের ট্রাফিক মোড়, জিরো পয়েন্ট, জেলা পরিষদ, পৌরসভার সামনে, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, গাছপাড়া বাইপাস, এডওয়ার্ড কলেজ গেটসহ পৌর সদরের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে এমন বহু ব্যানার, ফেস্টুন। এর বাইরে উপজেলা সদরের বিভিন্ন এলাকাতেও ঝোলানো রয়েছে আসনভিত্তিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিপুল সংখ্যক ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড।

আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে এলাকা। সবচেয়ে বেশি রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন। পাবনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, আরশাদ আদনান রনি, মাজহারুল ইসলাম মানিক, সোহেল হাসান শাহীন, জাতীয় পার্টির আব্দুল কাদের খান কদর, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির জাকির হোসেনসহ অনেকের ব্যানার, ফেস্টুন দেখা গেছে।

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ করতে স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এক সপ্তাহেও সে নির্দেশনা পাবনায় বাস্তবায়ন হয়নি।

পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাবনা-০৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী রেজাউল রহিম লাল বলেন, ‘দলীয় মনোনয়নের কাজে ঢাকায় ব্যস্ত থাকায় ব্যানার ফেস্টুন সরাতে পারেননি। ঢাকা থেকে ফিরে সরিয়ে নেবেন।’

জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও পাবনা-৫ আসনে জাপার মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুল কাদের খান কদর বলেন, ‘আমরা এখন সবাই দলীয় মনোনয়ন পাবার চেষ্টায় ঢাকায় রয়েছি। বড় দলগুলো তাদের ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ করুক। তারপর আমরা সরাবো। আর প্রশাসন চাইলে অপসারণ করে দিক।’

এই আসনে বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা অনেকে নির্বাচনি ফেস্টুন ব্যানার প্রদর্শন করেছি। স্থানীয় প্রশাসন এখনও অপসারণে উদ্যোগ নেয়নি। তাই আমাদেরও ঢিলেঢালাভাব রয়েছে। তবে দ্রুত সব অপসারণ করে ফেলব।’

জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আব্দুল মতীন খান বলেন, ‘হয়ত সবাই মনে করছে মনোনয়ন কনফার্ম হবার পর ব্যানার ফেস্টুন সরিয়ে নেবে। কিন্তু এটা ঠিক নয়। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যানার ফেস্টুন সরিয়ে ফেলা উচিত।’

সুশাসনের জন্য প্রচার অভিযান (সুপ্র) পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, ‘এখানে দলীয় প্রভাব কাজ করছে। যদি দ্রুত ব্যানার ফেস্টুন সরানো না হয় তাহলে নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সাধারণ মানুষও আস্থা হারাবে। নির্বাচন কমিশনের উচিত এটিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখে দলীয় ব্যানার ফেস্টুন অপসারণ করা।’

পাবনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে তারা দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার ও নির্বাচনী আচরণ বিধিভঙ্গ করছেন। এতে নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এটি প্রশাসন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের দেখে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

পাবনা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার চিঠি এখনও আমরা পাইনি। চিঠি পেলে দ্রুত ব্যানার ফেস্টুন বিলবোর্ড অপসারণে কাজ শুরু করা হবে।’
 

শাহীন/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

ঘটনাপ্রবাহ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়