ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

‘হে তার কথা রাখছে’

সাইফুল ইসলাম আকাশ, শরীয়তপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৮, ৬ এপ্রিল ২০২৪  
‘হে তার কথা রাখছে’

নতুন ঘর পেয়ে আনন্দিত রানু বেগম

‘এমপি কথা দিছিলো, আমাকে ছাপড়া ঘরে ঝড় বৃষ্টিতে আর কষ্ট করতে হইবো না। এইবার নতুন ঘরেই ঈদ করতে পারমু। হে তার কথা রাখছে। ঈদের আগেই আমাকে নতুন ঘর করে দিছে। দোয়া করি আল্লাহ হেরে অনেক ভালো রাখুন।’ নতুন ঘর পেয়ে এভাবেই খুশিতে কথাগুলো বলছিলেন কলাগাছের ঝোপের আড়ালে পলিথিন মোড়ানো ছাপড়া ঘরে বসবাস করা রানু বেগম। 

জানা যায়, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের পূর্ব নলতা এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব রানু বেগম। ৫০ বছর আগে তার বিয়ে হয় একই উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর এলাকায়। একাধিকবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সহায়সম্বল সব হারিয়ে স্বামী সন্তানদের সঙ্গে চলে যান রাজধানী ঢাকায়। অর্থ কষ্টের সংসারে সন্তানের কাছে বোঝা হয়ে চার বছর আগে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন রানু বেগম।

আরও পড়ুন: এই হলো রানুর ঘর-সংসার

ভাইদের অবস্থা তেমন ভালো না হওয়ায় অন্যের বাড়িতে দুমুঠো খাবারের বিনিময়ে কাজ করার পাশাপাশি রাস্তার ধারে এক টুকরো জমিতে পলিথিন আর কাপড় দিয়ে মোড়ানো খুপরি ঘর বানিয়ে জীবনযাপন করছিলেন তিনি। তাকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে বিষয়টি সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীমের নজরে আসে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন তিনি। নড়িয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. পারভেজ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন গিয়ে রানু বেগমের ঘর করার জন্য জায়গা নির্ধারণ করেন। এরপর শুরু হয় ঘর তৈরির কাজ।  শনিবার (৬ এপ্রিল) নতুন ঘরে ওঠেন রানু বেগম। পাশাপাশি তার জন্য ঈদ সামগ্রী উপহার পাঠিয়েছেন সংসদ সদস্য। নতুন ঘরে উঠে ভিডিওকলে স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক শামীমের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রানু বেগম।

মোবাইলের ভিডিও কলে এমপি একেএম এনামুল হক শামীমের সঙ্গে কথা বলেন রানু বেগম

আবেগে আপ্লুত হয়ে রানু বেগম বলেন, ‘এক সময় রাস্তার ধারে কলাগাছের মধ্যে খুপরি ঘরে থাকতে অনেক কষ্ট হয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে চুপচুপা হয়ে গেছি। শীতে একটা কাথা গায় দিয়া রাইত পাড় করছি। সাংবাদিকরা নিউজ করার পরে এমপি ভাই নিজে আমাকে দেখতে আসছে। তিনি আমাকে নতুন ঘর করে দিয়েছে। আমি আজ ভীষণ খুশি।’ 

রানু বেগমের ভাই নূর হক ছৈয়াল বলেন, ‘এমপি সাব নিজে আমার বইনের জন্য বড় একটা ঘর করে দিছে। ঈদের জন্য উপহার পাঠাইছে। আমরা সবাই এমপি সাবের জন্য দোয়া করি।’

ভুমখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীমকে জানাই। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঈদের আগেই রানু বেগমের জন্য নতুন ঘর করে দেওয়া হবে। আজ রানু বেগম নিজ ঘরে উঠেছেন। এমপি সাহেব তার কথা রেখেছেন। নতুন ঘর পেয়ে রানু বেগম খুব খুশি হয়েছেন।’ 

সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, ‘গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমি সংবাদটি দেখতে পেয়ে  নিজে রানু বেগমকে দেখতে যাই। ঈদের আগে রানু বেগমের জন্য আমার মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘বেগম আশ্রাফুন নেছা ফাউন্ডেশনের’ পক্ষ থেকে নতুন ঘর করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। ঈদের আগেই আমরা রানু বেগমকে নতুন ঘরটি উপহার দিতে পেরেছি। আমি সব সময় তার পাশে রয়েছি।’ 

মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়