বকেয়া বেতনের দাবিতে সাবেক এমপি এনামুলের কারখানায় বিক্ষোভ
রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বকেয়া বেতন না পেয়ে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক এমপি এনামুল হকের সোয়েটার কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। রাজশাহী নগরের বিসিক এলাকায় সাকোয়াটেক্স লিমিটেড নামের এই কারখানার শ্রমিকেরা তিন থেকে আটমাস পর্যন্ত বেতন পাননি। মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে কারখানার প্রায় সাড়ে তিনশো শ্রমিক মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
সাকোয়াটেক্স লিমিটেড এনা গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। সাবেক এমপি এনামুল হক এনা গ্রুপের চেয়ারম্যান। তিনি নবম, দশম ও একাদশ সংসদে রাজশাহী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তিনি লাপাত্তা। দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর দুর্নীতি অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এনামুল হক দুর্নীতি করে হাজার কোটি টাকার মালিক হলেও কারখানার শ্রমিকদের ঠিকমতো বেতন দিতেন না। মাঝে মাঝেই এই কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেও তারা কারখানায় বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা কারখানায় গিয়ে ব্যবস্থাপক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে দুপুর ২টা পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
সাকোয়াটেক্স লিমিটেডের ট্রান্সপোর্ট শাখার কর্মচারী চন্দন তরফদার জানান, বেতন চাইলে চাকরিচ্যুত করার ভয় দেখানো হতো। অবশেষে গত মে মাসে একমাসের বেতন দেওয়া হয়। এরপর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এখনও তিনি আট মাসের বেতন পাবেন। তারা নিদারুণ আর্থিক কষ্টে আছেন। বকেয়া বেতন পরিশোধ না করলে তারা কারখানা থেকে যাবেন না।
শ্রমিকেরা জানান, কারখানায় মোট ৩৫০ জন শ্রমিক আছেন। কারও তিনমাস, কারও ছয়, সাত কিংবা আটমাস বেতন বকেয়া। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করার কারণে কয়েকমাস আগেই কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। এরপর গ্যাসে জেনারেটর চালিয়ে কারখানা চালু রাখা হয়েছিল। গ্যাসের বিল পরিশোধ না করায় বুধবার এই লাইনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন কারখানা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেখে বকেয়া আদায়ে তারা আন্দোলনে নেমেছেন। বকেয়া পাওনা টাকা ছাড়া তারা এবার ঘরে ফিরবেন না।
কারখানার আরেক শ্রমিক নাসিম পারভেজ বলেন, ‘আমি ছয়মাসের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাব। বেতন চাইলেই শুধু কালক্ষেপণ করা হয়েছে। সাবেক এমপি এনামুল শ্রমিকদের ভয়ে অনেক দিন ধরে কারাখানায় আসেন না। নির্বাহী পরিচালক দেখাশোনা করেন। তিনিও এখন ঢাকায় বসে আছেন। কারখানায় আসছেন না। তারা বেকায়দায় পড়েছেন।’
যোগাযোগ করা হলে কারখানার ব্যবস্থাপক সজল আহমেদ বলেন, ‘কারখানায় সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা এসেছেন। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। শ্রমিক, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। কী সমাধান হয় সেটা পরে জানানো হবে।’
কেয়া/ইমন