ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরেছে চা বাগানের

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ২৫ এপ্রিল ২০২৫   আপডেট: ২১:৪৪, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরেছে চা বাগানের

মৌলভীবাজারের একটি চা বাগান থেকে পাতা সংগ্রহ করছেন নারী শ্রমিকরা

টানা তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত মৌলভীবাজারের চা বাগানগুলো স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজছে। বৃষ্টির কারণে সতেজ হয়ে উঠতে শুরু করেছে চায়ের পাতা। ফলে নির্মল সবুজের দেখা মিলেছে সেখানে। গাছগুলোতে উঁকি দিতে শুরু করেছে নতুন কুঁড়ি। গত কয়েকদিন ধরে মৌলভীবাজারে কম-বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

চলতি মৌসুমের শুরুইে তাপদাহে ঝলসে গিয়েছিল বাগানের অধিকাংশ চা গাছ। বিভিন্ন বাগানে লাল রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। চা উৎপাদন মৌসুম শুরুতেই মৌলভীবাজার জেলার ৯২টি চা বাগানের উৎপাদনের গতি কমে যায়। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দ্রুত পরিবর্তন দেখা দিতে শুরু করে চা বাগানগুলোতে।

আরো পড়ুন:

চা শ্রমিকরা জানান, নব উদ্যোমে পাতা তোলার কাজ শুরু করছেন তারা। পাতা সংগ্রহের (নিরিখ) ওজন গণনা শুরু হয়েছে।

চা সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি মৌসুমে চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৩ মিলিয়ন কেজি। ২০২৩ সালে ১০৩ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়। ২০২৪ সাল এসে উৎপাদন কমে দাঁড়ায় ৯৩ মিলিয়ন কেজিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ মিলিয়ন কেজি কম।

দেশে মোট নিবন্ধনকৃত চা বাগান রয়েছে ১৬৮টি। পঞ্চগড়ে রয়েছে ক্ষুদ্রায়িত অনেকগুলো চা বাগান। পঞ্চগড় ও দেশের ১৬৮টি বাগান মিলিয়ে ২০২৫ সালের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধরণ করা হয়েছে ১০৩ মিলিয়ন কেজি।

চা প্রকৃতি নির্ভর একটি কৃষিজাত পণ্য। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চায়ের উৎপাদনও ভালো হয়। এর জন্য প্রয়োজন পরিমিত বৃষ্টি ও সূর্যের কিরণ। প্রায় চার মাস আগ থেকেই চা বাগানের সেকশনগুলোয় অধিক উৎপাদনের আশায় গাছ (প্রুনিং) ছাটাই করার কাজ হয়ে থাকে। এসময় চা বাগানের রুক্ষ-শুষ্কভাব দেখা দেয়।

চলতি বছর তাপমাত্রার তারতম্য ঘটায় বিপাকে পড়েন চা সংশ্লিষ্টরা। বৃষ্টির অভাবে রুক্ষ বাগানে নতুন পাতা কুঁড়ির খুব বেশি দেখা মিলছিল না। যে পাতা আসছিল, স গুলো আবার রোগান্ত হয়ে পড়ে। এ কারণে স্বস্তির বৃষ্টিতে বাগান মালিক ও শ্রমিকরা খুশি হয়েছেন। দুশ্চিন্তা কেটেছে তাদের। 

রাজনগর চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. শাহাবউদ্দিন বলেন, “বৃষ্টির আগে আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এখন সেই শঙ্কা কেটে গেছে। শ্রমিকরা নিয়মিত বাগান থেকে পাতা উত্তোলনের কাজ করছেন।"

উত্তরভাগ চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান মকসুদ বলেন, “চা উৎপাদনে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির পাশপাশি প্রকৃতির ওপর নির্ভর করতে হয়। চায়ের জন্য পরিমিত বৃষ্টি ও পর্যাপ্ত সূর্যের আলোর প্রয়োজন হয়।”

সিলেটের লাক্কারতুরা চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, “আমরা চা উৎপাদন নিয়ে মৌসুমের শুরুতেই বিপাকে পড়েছিলাম। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সব চা বাগানের প্রাণ ফিরে এসেছে।” 

বাংলাদেশ চা সংসদের (বিসিএস) সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান জি এম গোলাম মোহাম্মদ শিবলি বলেন, “দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় ও তাপমাত্রা বেশি থাকায় চায়ের উৎপাদন কমে গিয়েছিল। বৃষ্টির ফলে চা গাছগুলো সজিবতা ফিরে পেয়েছে। শ্রমিকরা বাগানগুলো থেকে পাতা তুলতে শুরু করেছেন।”

ঢাকা/আজিজ/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়