ঢাকা     মঙ্গলবার   ২০ মে ২০২৫ ||  জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩২

ছেলের পর নাতীকে হারিয়ে পাগলপ্রায় রাবেয়া বেগম

পটুয়াখালী (উপকূল) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৫, ২৭ এপ্রিল ২০২৫   আপডেট: ২১:৩০, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
ছেলের পর নাতীকে হারিয়ে পাগলপ্রায় রাবেয়া বেগম

ছেলে ও নাতীর শোকে কাতর রাবেয়া বেগম। শনিবার তার নাতী লামিয়া আক্তার মারা যান

ছেলে জসিম উদ্দীনকে হারিয়েছেন ৯ মাস আগে। গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গুলিতে আহত হয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মারা যান জসিম উদ্দিন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) নাতী লামিয়া আক্তারকে (১৭) হারিয়েছেন রাবেয়া বেগম (৬০)। ছেলে ও নাতীর শোকে এখন পাগলপ্রায় তিনি।

আরো পড়ুন: ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

শনিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার ৬ নম্বর রোডের একটি ভাড়া বাসা থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় লামিয়াকে উদ্ধার করা হয়। সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গত ১৮ মার্চ সংঘদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়ে মানসিক যন্ত্রনায় ভুগছিলেন লামিয়া বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

আরো পড়ুন:

আরো পড়ুন: পটুয়াখালীর সেই পরিবারটির সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ মার্চ পটুয়াখালীর পাংগাশিয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে লামিয়া সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। সাহসিকতার সঙ্গে নিজে থানায় গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেন লামিয়া। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন।

পরিবার জানায়, ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাকিব ও সিফাত নামে দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করেছে দুমকি থানা পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে লামিয়া মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিল। লজ্জা, অবহেলা এবং ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা তার মধ্যে চরম হতাশা তৈরি করে। সেই হতাশা থেকেই সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে বলে পরিবারের ধারণা।

আরো পড়ুন: কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার

ছেলে ও নাতীর শোকে কাতর রাবেয়া বেগম বলেন, “আমার নাতী তার বাবার শোক ও ধর্ষণের ঘটনা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। আমি ধর্ষকদের ফাঁসি চাই।”

শহীদ জসিম উদ্দিনের চাচাতো ভাই মো. কালাম হাওলাদার বলেন, “আমাদের লামিয়া অত্যন্ত সাহসী মেয়ে ছিল। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সে লড়ােই করেছে। বিচার না পাওয়ার ভয়, সমাজের অবজ্ঞা ও মানসিক চাপ শেষ পর্যন্ত তাকে ভেঙে দিল। আজ সে চলে গেছে। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা এবং ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি।”

আরো পড়ুন: জুলাই বিপ্লবে শহীদ জসিমের মেয়েকে ‌সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ১

দুমকি থানার ওসি মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লামিয়ার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়