ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কেউ পুরনোটা শান দিচ্ছেন, কেউ নতুন ছুরি-বটি কিনছেন 

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫৬, ৩ জুন ২০২৫  
কেউ পুরনোটা শান দিচ্ছেন, কেউ নতুন ছুরি-বটি কিনছেন 

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে কামারেরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন

গোপালগঞ্জের কামারেরা কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। প্রতিদিন তৈরি করছেন পশু কোরবানি দেয়ার বিভিন্ন অস্ত্র। ঈদের আগের কয়েক দিন কর্মব্যস্ত থাকেন তারা। মানুষও নতুন অস্ত্র কেনা ও পুরাতন অস্ত্রপাতি ধার করাতে ভিড় করছেন।

কয়েকটি কামারের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, কয়লার আগুনে লোহা পুড়িয়ে পিটানোর টুং টাং শব্দ শোনা যাচ্ছে। কামারদের কেউ হাঁপর টানছেন, কেউ হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে দা, বটি, ছুরিসহ কোরবানির গোশত কাটার সরঞ্জাম তৈরি করছেন। 

আরো পড়ুন:

কয়েক দিন পর কোরবানির ঈদ। কোরবানির পশু কাটতে ছোরা, চাপাতিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রের দরকার হবে। এর জন্য কামারদের দারস্থ হচ্ছে মানুষ। 

কামারের তৈরি করা ছোরা, চাপাতি ও ছুরিসহ বিভিন্ন অস্ত্র মান অনুযায়ী কেজি দরে, আবার পিস হিসাবেও বিক্রি করা হচ্ছে। প্রকারভেদে পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, দা ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, বটি ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এখন কামারদের আয়ও বেড়েছে।

মানুষজনও ছোরা, চাপাতি ও ছুরিসহ বিভিন্ন অস্ত্র কিনতে ভিড় করছে। আবার কেউ পুরনো অস্ত্র ধার দিতে নিয়ে আসছেন।

ছুরি বানাতে আসা হাবিবুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি প্রতি বছরই কোরবানি দেই। এ বছরেও দেবো। একটু আগেই চাপাতিতে শান দিতে এসেছি। এখন একটা ছুরি দরকার, তাও বানাবো।’’

ক্রেতা হায়াত আলী বলেন, ‘‘প্রতিবছর নতুন অস্ত্র বানানোর পাশাপশি পুরাতন অস্ত্র শান (ধারালো) দিতে আসি। জেলার চন্দ্রদিঘলীয় মাদ্রাসা, গোপীনাথপুর মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন মাদ্রাসায় পশু কোরবানি দেয়া হবে। এসব পশু কোরবানি দেয়ার জন্য অস্ত্র তৈরি করতে এসেছি।’’

কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া বাজারের কর্মকার কেশব ভক্ত বলেন, ‘‘এক সময় কামারদের কদর ছিল। বর্তমান আধুনিক মেশিনে যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে। ফলে আমাদের তৈরি যন্ত্রপাতির চাহিদা কমছে। কোরবানির ঈদের সময় কিছু কাজ হলেও সারা বছরই কষ্টে চলতে হয়। যে কারণে অনেকে অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন। তবে কোরবানির ঈদের সময় আমরা একটু আশাবাদী হই। এ সময় রোজগার ভালো হয়।’’ 

কামারপল্লীর খোকন কর্মকার জানান, ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ক্রেতার চাপও বাড়ছে। কেউ চাপাতি, কেউ ছোরা, কেউ দা-বটি বানাতে ভিড় করছেন। কাজের চাপ থাকায় খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম ছেড়ে দিতে হয়েছে। সময়মতো ক্রেতাদের হাতে তাদের অর্ডার দেয়া সরঞ্জাম তুলে দিতে হবে।

কানাই কর্মকার জানান, অনেকেই পুরনো অস্ত্র শান দেয়ার জন্য নিয়ে আসছেন। আর নতুন অস্ত্রও বিক্রি হচ্ছে। সারা বছর টুকটাক কাজ করে কোনোভাবে সংসার চলছে। ঈদে কিছুটা বাড়তি আয় হয়। 
 

ঢাকা/বাদল/বকুল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়