ভিক্ষা নয়, সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চান প্রতিবন্ধী যুবক শহিদ
ঝালকাঠি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

সড়কের পাশে বসে মানুষের ওজন মেপে সংসার চালান শহিদ খান
মাত্র চার বছর বয়সে জ্বর হওয়ার পর দুই পা অচল হয়ে যায় শহিদ খানের (৩৫)। অনেক চিকিৎসার পরও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে তেমন কিছু করতেও পারেন না। এ কারণে রাস্তা কিংবা বাজারের পাশে বসে মানুষের ওজন মাপার কাজ করছেন এই যুবক। এ থেকে যা উপার্জন করেন তা দিয়েই চলে তার ৫ সদস্যের সংসার।
ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভার পরমপাশা এলাকার মৃত সুলতান খানের ছেলে শহিদ খান। তার একমাত্র আয়ের ভরসা ওজন মাপার মেশিন।
এলাকাবাসী জানান, শহিদ খানের এক ভাই ও দুই বোন আছে। ভাই রিকশা চালিয়ে তার সংসার চালান। বোনদের অবস্থাও তেমন ভালো না। যে কারণে তারা শহিদ খানের দেখভাল করতে পারেছেন না। শহিদ খানেরও রয়েছে দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে মাদরাসায় পড়ে, মেয়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
শহিদ খান বলেন, “আমার এই মেশিনে কেউ দাঁড়িয়ে ওজন মেপে যদি কিছু টাকা দেন, তাহলে সেটাই আমার জন্য বিশাল বিষয়।আমি চাই, সবাই যেন আমাকে একজন শ্রমজীবী মানুষ হিসেবে দেখেন, ভিক্ষুক হিসেবে নয়। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে বেশি কাজ করতে পারি না, কিন্তু একটু সহায়তা পেলে আমি স্বাবলম্বী হতে পারব।”
পৌর এলাকার বাসিন্দা সমাজসেবক নাসির খান বলেন, “শহিদ খানের মতো মানুষ আমাদের সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা। সমাজের বিত্তবানদের উচিত শহিদ খানদের মতো উদ্যোগী মানুষদের পাশে দাঁড়ানো।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, “মাঝে মধ্যে শহিদের মেশিনে ওজন মেপে টাকা দিয়ে সাহায্য করি। আমরা যদি সবাই একটু সহযোগিতা করি, তাহলে সে সত্যি স্বাবলম্বী হতে পারবে।”
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “এমন উদ্যোগ খুবই ভালো লাগার বিষয়। সরকারি কোনো সুবিধা এলে শহিদ খানকে দেওয়া হবে।”
ঢাকা/অলোক/মাসুদ