ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চট্টগ্রামে ২ জনের শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ৮ জুলাই ২০২৫   আপডেট: ১৯:১৬, ৮ জুলাই ২০২৫
চট্টগ্রামে ২ জনের শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত

প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো দুই রোগীর শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বেসরকারি একটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার পর তাদের শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দুই রোগীর নমুনা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় অবস্থিত এপিক হেলথ কেয়ার নামে একটি বেসরকারি ল্যাবে সোমবার (৭ জুলাই) রাতে নমুন পরীক্ষায় এক নারী ও এক পুরুষ রোগীর শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সংগত কারণে দুই রোগীর নাম পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

তিনি জানান, জিকা ভাইরাস যেহেতু অপ্রচলিত বিরল রোগ, তাই চূড়ান্ত ঘোষণা আইইডিসিআর প্রদান করবে।

জিকা কী:
জিকা ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় উগান্ডায় ১৯৪৭ সালে। ভাইরাসটি পাওয়া গিয়েছিল রেসাস ম্যাকাও বানরের শরীরে। পরবর্তী সময়ে পঞ্চাশের দশকে আফ্রিকান দেশগুলোয় মানুষের শরীরেও এই জীবাণু পাওয়া যায়। ভয়াবহ ব্যাপার হলো, ১৯৬০-১৯৮০ সালের মধ্যে আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশে এটি ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম ধরা পড়ে ২০১৪ সালে।

জিকা ভাইরাস ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। এই মশা দিনে বেশি কামড়ায়। আর এই মশা দিয়েই ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও পীতজ্বরও ছড়ায়। রক্ত পরিসঞ্চালন এবং অনিরাপদ যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও ছড়ায়। গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসের মধ্যে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে তা গর্ভের শিশুতেও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভস্থ শিশুর জন্য বিষয়টি মারাত্মক জটিলতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। জিকার দুটি ধরন—এশিয়ান ও আফ্রিকান।

জিকার লক্ষণ:
প্রতি পাঁচজন রোগীর মধ্যে একজনের মধ্যে হালকা জ্বর, চোখে লাল হওয়া বা কালশিটে দাগ পড়া, মাথা ব্যথা, হাড়ের গিঁটে ব্যথা ও চর্মরোগের লক্ষণ দেখা যায়। বিরল ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি গিলিয়ান-ব্যারি সিনড্রোমেও ভুগতে পারেন; এর ফলে সাময়িক পক্ষাঘাত কিংবা ‘নার্ভাস সিস্টেম ডিজঅর্ডারের’ মতো ঘটনা ঘটতে পারে। গর্ভবতী মা মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হলে তার অনাগত শিশুর মাথা স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হতে পারে, মস্তিষ্কের গঠন থাকতে পারে অপূর্ণ। এ রোগকে বলে মাইক্রোসেফালি। 

প্রতিরোধ ও প্রতিকার:
জিকা ভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক তৈরি হয়নি, তাই নিজেদের সচেতনতাই জরুরি। রাতে তো অবশ্যই, দিনেও মশারি ব্যবহারের অভ্যাস করতে হবে, প্রয়োজনে জানালায় মশানিরোধী জাল ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশুদের ক্ষেত্রে এটা বেশি প্রয়োজন। জিকায় আক্রান্ত হলে বিশ্রাম এবং বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে। গিঁটে বা শরীরে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খেতে হবে। নিজে থেকেই ব্যথার ওষুধ খেয়ে নিজের ক্ষতি করবেন না। জিকায় মৃত্যুর খবর খুব একটা পাওয়া না গেলেও ওপরে বর্ণিত মারাত্মক সমস্যাগুলো থেকে নিরাপদ থাকার জন্য সাবধান থাকা জরুরি।

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়