ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মোটরসাইকেল দিয়ে অভিনব কায়দায় চলছে কামারের কাজ

মোসলেম উদ্দিন, দিনাজপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৪, ১৬ জুলাই ২০২৫   আপডেট: ১১:১৫, ১৬ জুলাই ২০২৫
মোটরসাইকেল দিয়ে অভিনব কায়দায় চলছে কামারের কাজ

মোটরসাইকেল থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করে তা দিয়ে কামারের কাজ চালানো হচ্ছে

মানুষ যেখানেই ঠেকে, সেখানেই শেখে। এক সপ্তাহ ধরে দিনাজপুরের হিলিতে চলছে ভয়াবহ লোডশেডিং চলছে। তাই অভিনব কায়দায় মোটরসাইকেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কামারের কাজ চালাচ্ছেন দিপু নামে এক কর্মকার। তার এই কর্মকাণ্ডে সকলেই অবাক।

গত এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুতের লোডশেডিং থাকায় মোটরসাইকেল দ্বারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কাজ করছেন দিপু কর্মকার। মোটরসাইকেল স্টার্ট দিয়ে সেখান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে তার দোকানের ভাটিতে সংযোগ নেয়, এতে ভাটি চলতে থাকে, আর ভাটির বাতাসে কয়লা জ্বলে ও লোহা পোড়ে। 

সেই পোড়া লোহা পিটিয়ে দা, বটি, চাকু সহ বিভিন্ন লোহার সরঞ্জাম তৈরি করছেন। দিপু কর্মকারের অভিনব কায়দা দেখতে তার দোকানে ভিড় করছে পথচারীসহ এলাকাবাসী।

রিয়াজুর নামের এক পথচারী বলেন, “এই কামারের কাণ্ড দেখে আমি অবাক হলাম। তার মাথায় এতো বুদ্ধি। কারেন্ট নেই তারপরও তার কামারের কাজ বন্ধ নেই। তার এই বুদ্ধি আমার ভাল লেগেছে। এর আগে কোথায় এমন বুদ্ধিয়ালা কামার দেখিনি।”

মোটরসাইকেল মেকার রাশেদুল ইসলাম বলেন, “কয়েকদিন থেকে হিলিতে লোডশেডিং চলছে। কারেন্ট না থাকলেও আমাদের কাজ তেমন থেমে থাকে না। তবে কামরের কাজ বর্তমান কারেন্ট ছাড়া হয় না। দিপু কর্মকার কারেন্ট না থাকায় কাজ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। সে আমাকে বলে তার মোটরসাইকেল দিয়ে তার ভাটি চালাবে। এরপর সে তার মাথায় থাকা বুদ্ধি দিয়ে আমি মোটরসাইকেল দিয়ে তার দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগটি তৈরি করে দেই। এখন আর দিপু কর্মকারের কোন সমস্যা নেই। সুন্দরভাবে চলছে তার কাজ।”

হিলি চারমাথা মোড়ের দিপু কর্মকার বলেন, “মানুষ যেখানেই ঠকে, সেখানেই সে শেখে। কয় দিনের কারেন্টের লোডশেডিংয়ে আমার কাজ প্রায় বন্ধের পথে। তাই কারেন্টের বিকল্প বুদ্ধি আঁটলাম। আমার একটা ছোট মোটরসাইকেল আছে। সেই মোটরসাইকেল দিয়ে আমি আমার কামারের কাজ করব। একটি টিফিন বক্স, স্প্রে মেশিন, একটা পাখা এবং একটা ছোট মটর দিয়ে হাওয়া মেশিন তৈরি করি। পরে মোটরসাইকেল স্টার্ট দিয়ে সেখান থেকে তার দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ভাটি চালার কাজ শুরু করি। আমার পার্শ্ববর্তী মোটরসাইকেল মেকার রাশেদুল ভাই এই কাজটি করতে আমাকে সহযোগিতা করেছেন।”

তিনি বলেন, এখন আমার আর কোন টেনশন নেই। কারেন্ট থাকলেও আমার কাজ চলে, না থাকলেও চলে। আমি আর বসে থাকি না।”

ঢাকা/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়