ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘এক বছরেও বিচার হলো না, হলে শান্তি পেতাম’

আরিফুল ইসলাম সাব্বির, সাভার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ৬ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ০৯:১২, ৬ আগস্ট ২০২৫
‘এক বছরেও বিচার হলো না, হলে শান্তি পেতাম’

সাফওয়ান আখতার সদ্যর মা খাদিজা বিন জুবায়েদ।

সাভারের সিআরপি রোডের ডগরমোড়ায় সাফওয়ান আখতার সদ্যর (১৫) ঘরটিতে আজও আছে তার চাঞ্চল্যময় জীবনের নানা চিহ্ন। দেয়ালে ঝোলানো টেবিল টেনিসের ব্যাট, কোণায় রাখা ক্রিকেট ব্যাট, তবলা আর হারমোনিয়াম। পড়ার টেবিলে বইখাতা, কিছু পুরোনো ডায়েরি। প্রতিদিন এসব স্পর্শ করে সন্তানের অস্তিত্ব খোঁজেন মা খাদিজা বিন জুবায়েদ।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন সদ্য। সেদিন দুপুরে বাবার সঙ্গে বের হয়েছিলেন, যোগ দেন সাভারের পাকিজা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আয়োজিত মিছিলে। বিকেল সোয়া ৩টার পর মা ফোন করে জানালেন, খেয়ে যেতে। সদ্য বন্ধুদের সঙ্গে থেকে যায়।

রাত সোয়া ৯টার দিকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে স্ট্রেচারে শোয়ানো অবস্থায় ছেলের মৃতদেহ পান বাবা। মা খাদিজা বলেন, “রাত ৯টার দিকে ওর বাবা ফোন করে বললো, ‘তোমার ছেলেকে জীবিত পাই নাই, আমি তো একটা লাশ পেয়েছি।’”

শহীদ সদ্যের বাবা মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, “আমি ওকে বাবা ডাকতাম, ও আমাকে বাবা ডাকত। সেই ডাকটা আর কেউ দেয় না। আমাদের বাসায় শব্দ নেই, নিঃশব্দ এক শোকের হাওয়া বইছে। খাওয়ার সময়, ঘুমানোর সময়—সবসময় ওর কথা মনে পড়ে।”

তিনি বলেন, “এই জীবনে যতদিন বাঁচবো, ততদিন কোনো দিবস লাগবে না। ছেলের কথা প্রতিদিন মনে পড়ে, প্রতিটি মুহূর্তে।”

সন্তানের স্মৃতি ধরে রাখতে গড়ে তুলেছেন ‘শহীদ সদ্য ফাউন্ডেশন’। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী, বেকার ও দুঃস্থদের নিয়ে কাজ করছেন তারা।

তবে এক বছর পেরিয়ে গেলেও সদ্যর হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়নি। মা খাদিজা বিন জুবায়েদ বলেন, “এক বছরেও যারা আমাদের সন্তানদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার হলো না। বিচার হলে অন্তত তার আত্মা শান্তি পেত, আমরাও শান্তি পেতাম।”

তিনি আরও বলেন, “আমার ছেলে দেশ স্বাধীন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছে। কিন্তু যে সরকার প্রতিষ্ঠিত হলো, তারা তো কখনো জানতে চাইল না আমরা কী চাই, একবারও খোঁজ নেয়নি।”

ঢাকা/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়