ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সুন্দরবনে রাসপূজায় যেতে বন বিভাগের ৫ রুট, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৫, ১৯ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ২২:৪২, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
সুন্দরবনে রাসপূজায় যেতে বন বিভাগের ৫ রুট, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

ফাইল ফটো

সুন্দরবনের দুবলারচরে রাসপূর্ণিমা উপলক্ষে আগামী ৩ থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ‘রাসপূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান’ অনুষ্ঠিত হবে। তিন দিনব্যাপী এই পুণ্যস্নান উৎসবে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি পথ নির্ধারণ করেছে।

এ সকল পথে বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল দল তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। এ পূজায় শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

আরো পড়ুন:

রবিবার (১৯ অক্টোবর) বন বিভাগ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

সুন্দরবন বন বিভাগের সূত্র জানিয়েছে, পূজা ও পুণ্যস্নানে  তীর্থযাত্রীরা বিভিন্ন নদী পথে লঞ্চ, ট্রলার, স্পিডবোট ও দেশি নৌকাযোগে গমন করে থাকেন। এক্ষেত্রে অনুমোদিত পাঁচটি পথের প্রথমটি- বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার চর; দ্বিতীয়টি- কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা অতঃপর শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর; তৃতীয়টি- নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর; চতুর্থটি- ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ-বরাবর পশুর নদী হয়ে দুবলার চর; পঞ্চমটি হলো- বগী-বলেশ্বর-সুপতি-কচিখালী-শেলারচর হয়ে সুন্দরবনের বাইরে দিয়ে দুবলার চর।

পুণ্যস্নানে অংশ নিতে দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের ৩ থেকে ৫ নভেম্বর-এ তিন দিনের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে এবং প্রবেশের সময় এন্ট্রি পয়েন্টে লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকার প্রবেশ ফি, অবস্থান ফি এবং লোকের সংখ্যা অনুযায়ী বিধি মোতাবেক রাজস্ব আদায়পূর্বক পাশ প্রদান করা হবে। অনুমতি পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ তীর্থযাত্রীদের আবেদন করতে হবে।

প্রতিটি অনুমতিপত্রে সিল মেরে পথ/রুট উল্লেখ করা হবে এবং তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীগণ পছন্দমত একটি রুট বা পথ ব্যবহার করবেন। ৩ নভেম্বর দিনের ভাটায় যাত্রা আরম্ভ করতে হবে। রাসপূর্ণিমা পুণ্যস্নানের উদ্দেশ্যে নৌযান নির্ধারিত রুটে শুধু দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবে। বন বিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া কোথাও লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা থামানো যাবে না। ট্রলারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক লাইফ জ্যাকেট বা বয়া সংরক্ষণ করতে হবে।

প্রতিটি জলযানের গায়ে রঙ অথবা স্টিকার দিয়ে বিএলসি/সিরিয়াল নম্বর, তীর্থযাত্রী/পুণ্যার্থীর সংখ্যা উল্লেখ করা হবে। সুন্দরবনে প্রবেশকালে প্রত্যেক তীর্থযাত্রী/পুণ্যার্থীকে একটি করে টিকেট বা টোকেন প্রদান করা হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালে টোকেন বা টিকেট সর্বদা নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। প্রতিটি লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলারকে আলোরকোলে স্থাপিত কন্টোলরুমে আবশ্যিকভাবে রিপোর্ট করতে হবে। এর ব্যত্যয় করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

সুন্দরবন বন বিভাগ সূত্র আরো জানায়, রাসপূর্ণিমা পুণ্যস্নানের সময় কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও বহন নিষিদ্ধ। কারো কাছে কোন আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, হরিণ মারার ফাঁদ, দড়ি, গাছ কাটার কুড়াল, করাত ইত্যাদি অবৈধ কিছু পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো অবস্থায়ই সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক যেমন প্লাস্টিকের প্লেট, পানির বোতল, গ্লাস বা চামচ বহন করা যাবে না।

লঞ্চ, ট্রলার, নৌকায় এবং পুণ্যস্নান স্থলে মাইক বাজানো, পটকা, বাজি ইত্যাদি ফোটানোসহ সব ধরনের শব্দ দূষণ নিষিদ্ধ। রাসপূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রাপ্ত সনদের মূলকপি সঙ্গে রাখতে হবে।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, “তীর্থযাত্রীদের উল্লিখিত নিদের্শনা মেনে চলার জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে কেউ এ নির্দেশনা অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়