প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ছক, ছেলেকে খুনির কাছে বিক্রি করেন মা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে প্রবাসী যুবককে মায়ের কাছ থেকে কিনে তাকে হত্যা করার মতো হৃদয়বিদারক ঘটনার চাঞ্চল্যকর সূত্র বেরিয়ে এসেছে সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের তদন্তে। সেই সূত্র ধরে পাঁচজন আসামিকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
নিহত প্রবাসী যুবক সিরাজুল ইসলাম (২৯) শাহজাদপুর উপজেলার পূর্ব চরকৈজুরী গ্রামের মৃত শাহাদত মণ্ডলের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় ছিলেন।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একরামুল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শাহজাদপুর উপজেলার পূর্ব চরকৈজুরী গ্রামের সানোয়ার মন্ডলের ছেলে সেলিম মন্ডল (৩২), শহিদ আলী মন্ডলের ছেলে আমিরুল ইসলাম (৩৩), মৃত আলহাজ ওয়াজেদ মন্ডলের ছেলে আল আমীন মন্ডল (৩৮), মৃত ইয়াছিন প্রামাণিকের ছেলে ওমর ফারুক (৩৮), মৃত আজগর প্রামাণিকের ছেলে ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল গফুর প্রামাণিক (৫৫)।
আসামিরা ডিবি পুলিশকে জানায়, চরকৈজুরী গ্রামের মুসা মন্ডল, গফুর প্রামাণিক এবং ইউপি চেয়ারম্যান খোকন মাস্টারের মধ্যে শত্রুতার জের ধরে মারামারি হয়। এ ঘটনায় মুসা মন্ডল ও গফুর প্রামাণিকের লোকজনকে আসামি করে ২০২১ সালে হত্যা মামলা দায়ের করে খোকন মাস্টার। পরে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় মামলাটি আপস হয়। আপসের ৫ লাখ টাকা খোকন মাস্টারকে দেওয়া হয়। বাকি টাকা না দেওয়ার জন্য এবং সেই হত্যা মামলায় বাদীপক্ষের লোকজনকে ফাঁসাতে আসামিরা সিরাজুল ইসলামকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
সিরাজুল ইসলাম মাদকাসক্ত হওয়ায় তার মা অতিষ্ঠ ছিলেন। আসামিরা সুযোগটি গ্রহণ করে। তারা মায়ের কাছে গিয়ে সিরাজুলকে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তাকে দেড় লাখ টাকা দেয়। টাকা পেয়ে মা সিরাজুলকে আসামিদের হাতে তুলে দেন।
এরপর গত ২৮ অক্টোবর রাতে সিরাজুলকে তুলে নিয়ে চরকৈজুরী গ্রামের মোহাম্মদ আলীর বাড়ির পাশে রাস্তার ওপর হত্যা করা হয়। ঘটনার পর নিহতের পরিবার শাহজাদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় গত ৩ নভেম্বর স্থানীয় ইউপি সদস্য ওমর ফারুকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরে তাদের আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়। আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একরামুল হোসাইন বলেন, ‘‘প্রবাসী যুবক হত্যার ঘটনায় পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে নিহতের মাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি।’’
ঢাকা/রাসেল//