ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চাহিদা বাড়ছে নড়াইলে প্রস্তুতকৃত দেশি মাছের শুঁটকির

নড়াইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৪, ১৯ নভেম্বর ২০২৫  
চাহিদা বাড়ছে নড়াইলে প্রস্তুতকৃত দেশি মাছের শুঁটকির

বিভিন্ন জাতের দেশীয় মাছ শুনানো হচ্ছে।

নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নে শলুয়া এবং শোলপুর গ্রামে শীত মৌসুমের শুরুতেই প্রস্তুত হচ্ছে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছের শুঁটকি। বিষমুক্ত ও নিরাপদ পরিবেশে প্রস্তুত হওয়ায় দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শলুয়া বিলের ধারে খোলা জায়গায় মাচা তৈরি করে তাতে পলিথিন বিছিয়ে চলছে শুঁটকি তৈরির কাজ। খাল, বিল ও নদী থেকে প্রতি দিন দেশি মাছ সংগ্রহ করে শুকানোর কাজ চলে এখানটায়। 

ভালো করে শুকানোর পর মাছগুলো বস্তায় ভরে সংরক্ষণ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছে এখান থেকে। 

তিন থেকে চার মণ কাঁচা মাছ শুকালে এক মণ শুঁটকি পাওয়া যায়। প্রকারভেদের ওপর ভিত্তি করে এক মণ শুঁটকি সাত থেকে আট হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এখানে মাছ শুকানোর কাজে কোনো ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না, শুধুমাত্র লবণ দিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলে ১৫টি পরিবার শুঁটকি তৈরির পেশায় যুক্ত রয়েছে। এ বছর ৮০ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে মাইজপাড়া ইউনিয়নে তিন থেকে চারটি জায়গায় গড়ে উঠেছে শুঁটকি পল্লী। মৌসুমে খাল, বিল ও নদীর পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জালে ধরা পড়ে দেশীয় প্রজাতির ছোট ও বড় মাছ। এসময় মাছগুলো দিয়ে শুটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেন এলাকার মৎস্যজীবীরা। 

টাকি, শোল, কই, চাঁদা, পুঁটিসহ হরেক রকম মাছের শুঁটকি তৈরি হয় এখানে। এখানে সবচেয়ে বেশি তৈরি হয় পুঁটি মাছের শুঁটকি যা চ্যাপা শুটকি নামে বহুল পরিচিত। 

মাইজপাড়া ইউনিয়নের শলুয়া গ্রামের অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘১৫ বছর ধরে শলুয়া বিলে মাচা পেতে শুঁটকি তৈরির কাজ করছি। আমার পরিবারের ছয় সদস্য এই কাজে জড়িত রয়েছে। আমাদের শুঁটকি সম্পূর্ণ রাসায়নিক মুক্ত। এটি মানসম্মত হওয়ায় দেশের বাইরে এর চাহিদা রয়েছে।’’

শোলপুর গ্রামের কানাই বিশ্বাস বলেন, ‘‘শীত মৌসুমে খাল ও বিল থেকে পানি কমে যাওয়ায় জেলেদের জালে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে। সেই মাছ কম দামে কিনে আমরা শুঁটকি তৈরি করি। মৌসুমে এ ব্যবসায় আমাদের ভালো লাভ হয়।’’

নড়াইল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, “মাইজপাড়া ইউনিয়নের শোলপুর এবং শলুয়া গ্রামের মৎস্যজীবীরা শীত মৌসুমে শুঁটকি তৈরি করেন। তাদের শুঁটকি রাসায়নিক মুক্ত হওয়ায় জেলার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য জেলায় এর চাহিদা রয়েছে। জেলা মৎস্য অফিস এসব ব্যবসায়ীদের মানসম্মত শুঁটকি প্রস্তত করতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে।”

ঢাকা/শরিফুল/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়