ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘জোবায়েদ হত্যায় জড়িতরা আইনের ফাঁক দিয়ে যেন বেরিয়ে না যায়’ 

জবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ২২ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ২০:১৫, ২২ অক্টোবর ২০২৫
‘জোবায়েদ হত্যায় জড়িতরা আইনের ফাঁক দিয়ে যেন বেরিয়ে না যায়’ 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, “ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে না যায়।”

বুধবার (২২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় রফিক ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জোবায়েদ হত্যাকাণ্ডের অগ্রগতি এবং প্রশাসনের অবস্থানের বিষয়ে জানাতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, “আমরা আজ শোকে বিহ্বল। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিবস যেখানে উদ্‌যাপন করতে চেয়েছিলাম, সেখানে জোবায়েদের স্মরণে শোকসভা করেছি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস তাকে উৎসর্গ করা হবে।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “মামলার এজাহারে ঘটনার মূল হোতা হিসেবে ছাত্রী বর্ষার ভূমিকা উপেক্ষা করা হয়েছে। হত্যার দিন গৃহশিক্ষক জোবায়েদকে বাসায় ডেকে নিয়েছিল বর্ষা। অথচ সেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি এজাহারে উল্লেখ করা হয়নি, যা দুঃখজনক। বর্ষাই খুনীদের লোকেশন দিয়েছে—এসব তথ্য বাদ পড়েছে কেন?”

তিনি আরো বলেন, “ত্রিভুজ প্রেমের কল্পকাহিনি বানিয়ে এই হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—জোবায়েদের চরিত্রহানি করে কেউ পার পাবে না। মাহির যদি চাকু দিয়ে খুন করে থাকে, সে তো জোবায়েদের চাইতে সাইজে ছোট, তাহলে সেটা কিভাবে সম্ভব?”

অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, “পুলিশ বলছে ধস্তাধস্তি হয়েছে। ধস্তাধস্তি হলে শব্দ হওয়ার কথা, তাহলে পাশের বাসার কেউ কিছু শুনল না কেন? ওই বাসার সবাই কি বধির? পুলিশ কি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে?”

অধ্যাপক রইছ উদ্দীন আরো বলেন, “বর্ষার বাবা-মা কি জানতেন ঘটনাটা? পুলিশ কি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে? যদি জানতেন, তাহলে তারাও জড়িত।”

অধ্যাপক রইছ উদ্দীন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তিনি জানান, জোবায়েদের পরিবার দূর গ্রামের হওয়ায় মামলা চালানো তাদের পক্ষে কঠিন হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে মামলাটি চালানো হবে।

তিনি বলেন, “ঘটনার তিনদিনের মাথায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়েছে, জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে। তবে এখানেই থেমে গেলে চলবে না। প্রকৃত অপরাধীরা যেন আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে না যায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”

“আমরা চাই সত্য বেরিয়ে আসুক, নিরপরাধ কেউ যেন শাস্তি না পায়। সুষ্ঠু বিচার হলে আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না। বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করি,” যোগ করেন অধ্যাপক রইছ।

নিহত জোবায়েদ হোসাইন ছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি একইসঙ্গে জবি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সংসদের সভাপতি এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

গত ১ বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানিটোলার ১৫, নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলা নামের বাসায় আসামি বর্ষাকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। ওই ছাত্রীর বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকালে ছাত্রীর বাসার তিন তলায় উঠতে গিয়ে সিঁড়িতে তিনি খুন হন। বাসার নিচ তলার সিঁড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত রক্ত পড়েছিল।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়