ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বিদায়বেলা কাঁদলেন, কাঁদালেন!

নাজমুল হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০৭, ২১ মার্চ ২০২৩   আপডেট: ২০:১৪, ২১ মার্চ ২০২৩
বিদায়বেলা কাঁদলেন, কাঁদালেন!

প্রফেসর মোর্শেদা বেগমের বিদায় সংবর্ধনা

ঘড়িতে সময় সকাল ১১টা, ফুলের আবরণে সজ্জিত টেবিল, রুমভর্তি শিক্ষার্থী। উদ্দেশ্য ‘বিদায় দেওয়া’। জীবনের দুটি কঠিন সময়ের একটি প্রথমবারের জন্য ‘হ্যালো’ আর শেষবারের জন্য ‘বিদায়’। তবে এ বিদায় কর্মজীবনে ইতি টানার। তাতে-ও কী, যেকোনও বিদায় বেদনার। সহকর্মী আর শিক্ষার্থীদের চোখের জলে বিদায় নিলেন সরকারি বাঙলা কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোর্শেদা বেগম। অশ্রুসিক্ত নয়ন আর বেদনাবিধুর অনুভূতিতে এদিন তিনি বুঝলেন, শিক্ষার্থী-সহকর্মীরা তাঁকে কতটাই-না ভালোবাসেন!

উদ্ভিদবিজ্ঞানের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধানে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিভাগীয় প্রধানের পিআরএল গমন উপলক্ষে ‘বিদায় সংবর্ধনা’ আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একই বিভাগের প্রফেসর ফেরদৌসী বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাঙলা কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ফেরদৌসী খান ও উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

আয়োজনের শুরুতেই প্রাক্তন শিক্ষার্থী জিএম মহসিনের উপস্থাপনায় ছাত্র-ছাত্রীরা একে একে বিদায়ী শিক্ষককে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। তাদের বক্তব্যে উঠে আসে প্রিয় শিক্ষককে বলতে ‘না’ পারা অব্যক্ত কথা। 

কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শরিফুল ইসলাম সাগর প্রিয় শিক্ষকের জন্য স্মৃতির ঝাঁপি খুলে দেন। বলেন, ‘নিয়মের ধারাবাহিকতায় অনেকে আসবেন-যাবেন, তবে মোর্শেদা ম্যাম সবার চেয়ে আলাদা হয়ে থাকবেন। এই বিভাগ অন্যান্যগুলোর চেয়ে অবহেলিত থাকলেও, উনি দায়িত্বে আসার পরই অবকাঠামো খাতে বেশকিছু উন্নতি লক্ষ করা গেছে। কলেজ ফান্ড ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সোর্স থেকে অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। আমরা আশা করছি, সামনেও উনার অবর্তমানে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।’

এরপরই মাইক হাতে নেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সোলায়মান খান। বলেন, ‘‘এই বিভাগের উন্নয়ন-অগ্রগতির নেপথ্যের কারিগর মুর্শেদা ম্যাম। শিক্ষার্থীদের যেকোনও দাবিতে তাঁর কাছে নির্ধিদায় যাওয়া যেত। কখনও নিরাশ করেননি তিনি। সবাই যখন না করেছেন, উনিই তখন বলেন ‘হ্যাঁ’। ম্যামকে শেষ বেলা একটা কথা-ই বলবো, আমরা আপনাকে অনেক ভালোবাসি।’’

এর আগে, সহকর্মীদের স্মৃতিচারণে উঠে আসে প্রফেসর মোর্শেদা বেগমের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের কথা। অনেক শিক্ষক ‘বিদায়’ বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এমন সময় নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি খোদ বিভাগীয় প্রধান। বিদায়ী বক্তব্যে তিনিও স্বীকার করেন, এই ভালোবাসার কাছে আজীবন ঋণী তিনি। বলেন, ‘চলার পথে যখন দেখা হবে, ভেবে নিও আমিও তোমাদের একজন ছিলাম’।

এত সুন্দর ‘সংবর্ধনা’ আয়োজনে প্রফেসর মোর্শেদা আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। এ ছাড়া, সহকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারদের এই ভালোবাসা ভুলবার নয়’।

বিদায় বলতে যদিও কষ্ট হয়, তবুও বিদায় বলে দিতেই হয়। সবশেষে বিভাগের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নিয়ে বিদায় নেন বিভাগীয় প্রধান।

ঢাকা/এনএইচ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়