ঢাকা     রোববার   ১৯ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

জাবির ডিন নির্বাচন: রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪৭, ৬ মে ২০২৪   আপডেট: ১১:১৩, ৭ মে ২০২৪
জাবির ডিন নির্বাচন: রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অনুষদগুলোর ডিন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু হাসানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। আবু হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে আছেন।

গতকাল রোববার (৫ মে) তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে এবং পক্ষপাতিত্বমূলক কার্যক্রমের প্রতিকার চেয়ে উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন এনেছেন বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের বৈধ প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়া চার শিক্ষক।

ওই শিক্ষকরা হলেন- বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের বর্তমান ডিন ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক নীলাঞ্জন কুমার সাহা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইউসুফ হারুন, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক কাশেদুল ওহাব তুহিন ও সহযোগী অধ্যাপক রাকিবুল হাসান।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের আসন্ন ডিন নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে গত ২৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিল করেন প্রার্থীরা। কিন্তু বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পূর্বে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য গত ৩০ এপ্রিল ইমেইলে এবং ১ মে সশরীরে রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করে আবেদনপত্র জমা দেন তারা। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করে প্রার্থীদের অনুপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র বাছাই করেন এবং তড়িঘড়ি করে গত ২ মে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করে। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে তা প্রার্থীকে অথবা মনোনীত প্রতিনিধিকে দেখানো এবং তা প্রতিকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেননি।

আরও জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এ মামুন কর্তৃক প্রস্তাবিত এবং সে সময়ে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ কর্তৃক সমর্থিত এক প্রস্তাব গ্রহণ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রস্তাবটি ছিল, মনোনয়নপত্রে কোনো ধরনের ভুল-ত্রুটি থাকলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের ডেকে তা প্রতিকার করে দাখিলকৃত সব মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে গ্রহণ করার। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার আইন এবং সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেননি। এছাড়া ঠিক কি কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে অথবা কি কারণে আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব হলো না, তা ওই শিক্ষকদের পক্ষে বোঝা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

আবু হাসানকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্রে বলা হয়, তফশিল ঘোষণার সময় থেকে এখন পর্যন্ত রিটার্নিং অফিসার ডিন নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা, আইন, বা প্রচলিত নিয়মসমূহের সংকলন লিখিত অথবা মৌখিকভাবে অবহিত করেননি। মনোনয়নপত্রেও এ ধরনের কোন নির্দেশনা বা বিশেষ দ্রষ্টব্য ছিল না। এ ছাড়া বৈধতালিকা প্রকাশের আগে প্রচারণা চালানো প্রার্থীদের প্রার্থিতাও বাতিল করা হয়নি।

উপাচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেখানে বলা হয়, বৈধ তালিকা প্রকাশের আগেই একজন যখন নিজেকে প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দেন, তা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবজ্ঞা করা অথবা রিটার্নিং কর্মকর্তার ওইসব প্রার্থীদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। এ অবস্থায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সংক্রান্ত সংবিধির ১.২৪ ধারা মোতাবেক এ বিষয়ে প্রতিকার প্রার্থনা করছি।

এছাড়া অভিযোগপত্রে অবৈধভাবে বাছাইকৃত প্রার্থী তালিকা বাতিল করে আইনানুগভাবে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান ওই শিক্ষকবৃন্দ।

রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু হাসান বলেন, নির্বাচনের সংবিধির ১.১২ ধারায় বলা আছে যে, একজন শিক্ষক একজন প্রার্থীকে প্রস্তাব করতে পারবে অথবা সমর্থন করতে পারবে। কিন্তু ওই ফ্যাকাল্টিতে একাধিক জনকে প্রস্তাব অথবা সমর্থন করা হয়েছে। তাই নির্বাচন সংবিধির ১.১২ ধারা লঙ্ঘিত হওয়ায় আইনানুগভাবেই তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এবারই প্রথম ওনারা এই ভুলটি করেছেন। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের মধ্যে থেকেই কাজ করেছি। উনারা হয়তো আমাকে ভুল বুঝছেন।

/আহসান/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ