শহীদদের রক্তের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে তারা গাদ্দারি করেছে: সাদিক কায়েম
চবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
বক্তব্য প্রদান করছেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম বলেন, “অন্তবর্তীকালীন সরকারের যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল তারা শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে লালন করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে। কিন্তু আমরা দেখেছি, শহীদদের রক্তের উপর দিয়ে যারা ক্ষমতায়, তারা শহীদদের চেতনাকে লালন করেনি। শহীদদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করেছে।”
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত ‘জুলাই আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ: আমাদের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “তারা জুলাইয়ের স্পিড থেকে দূরে সরে গিয়ে ব্যক্তিগত আখের গুছিয়েছে। যেখানে দেশের আপামর ছাত্র-জনতা তাদের সমর্থন দিচ্ছিল, সেখানে তারা ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আপোষ করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। যেটা আমাদের সবচেয়ে বেশি ব্যথিত করেছে।”
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক মির্জা গালিব।
অন্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি এসএম আমজাদ হোসাইন, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি আসিফ আব্দুল্লাহ, চবি শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ পারভেজ, অর্থ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা গালিব বলেন, “বিভাজনের রাজনীতি বাদ দিতে না পারলে আমরা কখনোই সামনে যেতে পারব না। সব ধরনের বিভাজন বাদ দিয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্যকে সবার উপরে স্থান দিতে হবে। জাতীয় ঐক্যকে কোনোভাবেই ব্যাহত করা যাবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে বৈরিতা ভাব দূর করে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।”
মির্জা গালিব আরো বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর এ দেশের তরুণরা এখন রাজনীতি সচেতন। এটি অত্যন্ত ভালো, যেটি না হলে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানো সম্ভব হত না। তবে এটার একটা নেতিবাচক দিকও আছে। ছাত্রদের কাজ রাজনীতি নয়, পড়াশোনা করা ও নেতৃত্ব তৈরি করা। তাহলে ছাত্ররা কেনো রাজনীতিতে যেতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ সিনিয়র রাজনীতিবিদরা দেশটাকে ঠিকঠাকভাবে চালাতে পারছে না। এ অবস্থা থেকে কোনো না কোনোভাবে ফিরে গিয়ে ছাত্রদের নিয়ে যেতে হবে পড়াশোনায় ও দক্ষতা উন্নয়নে।”
তিনি বলেন, “জাতীয় ও ইসলামের বিষয়, আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদসহ বড় বড় ইস্যুত শিক্ষার্থীরা কথা বলবে। ছোটখাটো রাজনৈতিক ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের এক্টিভিজম করা উচিত নয়। মূলত তাদের দৃষ্টি দিতে হবে দক্ষতা উন্নয়নে।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাইয়ে রক্ত দেওয়া তরুণদের ঋণ ভুলে গেলে চলবে না। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে শিক্ষার্থী ও তরুণদের ভবিষ্যৎ রাজনীতি, রাষ্ট্রগঠন ও নেতৃত্বের স্বপ্ন স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হবে। জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী