ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রবির ডিপিপি’র দ্রুত অনুমোদনের দাবিতে মানববন্ধন

রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০২, ২৬ জুলাই ২০২৫  
রবির ডিপিপি’র দ্রুত অনুমোদনের দাবিতে মানববন্ধন

মানববন্ধনে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপি’র দ্রুত অনুমোদন ও পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। এর আগে, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের সব কর্মসূচি বয়কট করে।

শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১০টায় তারা পৃথকভাবে এ মানববন্ধন করেন।

আরো পড়ুন:

বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী অ্যাকাডেমিক ভবন-৩ এর সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপির অনুমোদন ও বাস্তবায়নে বিলম্বের বিষয়ে হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানান। 

কর্মকর্তাদের মধ্যে সহকারী রেজিস্ট্রার শেখ আল মাসুদ বলেন, “বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপি’র অনুমোদনের দাবিতে আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হয়েছে, এটি হতাশার। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করি।”

সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ইয়াতসিংহ শুভ বলেন, “এ পর্যন্ত এই ডিপিপি সাতবার সংশোধন করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগ যখন যে তথ্য-প্রমাণ চেয়েছে, আমরা সরবরাহ করেছি। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১০০ একর ভূমি ব্যবহারে অনাপত্তিপত্র ডিপিপি’র সঙ্গে সরবরাহ করা হয়েছে। এতকিছুর পরও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি’র অনুমোদন না হওয়ায় আমাদের মনে নানা শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। আমরা মনে করছি, এর পিছনে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল জড়িত আছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ও অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, “আজ প্রাণের প্রতিষ্ঠান রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিক। দিনটি উদযাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে আজ একটি আনন্দঘন দিন হতে পারত। অথচ আমরা আজ রাজপথে অবস্থান নিয়েছি।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অনুমোদনে সরকারের উদাসীনতা আমাদের আজ এখানে দাঁড় করিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করব না। আমরা দীর্ঘ ৯ বছর ধরে ধুঁকছি, আর নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে এমন টালবাহানা গ্রহণযোগ্য নয়।”

পৃথকভাবে আয়োজিত শিক্ষার্থীদের মানবন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বলেন, “আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভাড়া করা ভবনে চলছে। এটি কেবল আমাদের জন্য নয়, সমস্ত দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য লজ্জার। আমরা এর আগেও রাজপথে ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়েছি। সরকারের আশ্বাসে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরে এসেছিলাম। তবে এবার সমাধান না নিয়ে রাজপথ থেকে আমরা ফিরছি না। আমাদের কর্মসূচি কঠোর থেকে কঠোরতর হবে।”

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ বলেন, “বাংলাদেশের ব্যবস্থা হয়েছে ঠেলাগাড়ির মতো, ধাক্কা না দিলে চলে না। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যলয়ের ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামতে হয়, এটি সভ্য সমাজের জন্য লজ্জার। আমাদের ডিপিপি একনেকে অনুমোদন পায়নি উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানের জন্য। একনেক সভার সকলেই ডিপিপি অনুমোদনে সম্মত হলেও তিনি জানালেন, প্রস্তাবিত প্রকল্প অঞ্চল পরিদর্শন করে তার মত জানাবেন।”

তিনি বলেন, “উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান সরেজমিনে প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে গেলেন এবং প্রতিবেদন জমা দিলেন। এরপর একটির পর একটি একনেক সভা পেরিয়ে যায়, আমাদের ডিপিপি এজেন্ডাভুক্ত হয় না। এর জন্য এই উপদেষ্টাই দায়ী। আমরা ডিপিপি’র অনুমোদন চাই এবং এই উপদেষ্টার পদত্যাগ চাই।”

এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ডিপিপি’র দ্রুত অনুমোদন ও অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের পদত্যাগ চেয়ে স্নোগান দেন।

ঢাকা/হাবিবুর/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়