ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানা আয়োজন

ক্যাম্পাস ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০০, ৫ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ২০:০২, ৫ আগস্ট ২০২৫
ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানা আয়োজন

জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার পলায়ন ও ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নানা আয়োজন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকে পৃথকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসব কর্মসূচি পালন করেন। রাইজিংবিডির বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-

আরো পড়ুন:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)

দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর আনন্দ শোভাযাত্রা শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে মেয়েদের হল প্রদক্ষিণ করে ‘অদম্য ২৪’ স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে দোয়া ও মোনজাত শেষে সকলের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান আনন্দ শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন।

সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও ‘৩৬ জুলাই স্বৈরাচার হাসিনার পতন দিবস উদযাপন-২০২৫’ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রবসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)

সকাল ৯টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বেরোবিতে দিনব্যাপী ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস-২০২৫’ শুরু হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলীর নের্তৃত্বে সকাল পৌনে ১০টায় বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়। ‎এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। র‌্যালি শেষে প্রীতি খেলার আয়োজন করা হয়।

পরে বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জুলাই শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, ‎সন্ধ্যা ৭টায় আতশবাজি প্রদর্শন এবং সাড়ে ৭টায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে স্মরণ করে গান, কবিতা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়েছে।

‎এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)

কুবি প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল ১০টায় গোল চত্ত্বর থেকে র‍্যালি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক প্রদক্ষিণ করে মুক্তমঞ্চে গিয়ে কেক কাটা হয়। ১১টার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা সভা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামালের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী।

বর্ণাঢ্য আয়োজনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপিত হয়েছে। এসময় গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।

ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারিন বিনতে এনাম এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম।

আলোচনা সভার শুরুতে জুলাই যোদ্ধারা বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংকট নিরসন এবং আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিচারের দাবি জানান। 

সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই আহতদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যের উদ্যোগে ও প্রশাসনের সহযোগিতায় ৩৬টি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। সর্বশেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৫৬টি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

অন্যদিকে, বিকাল ৫টায় গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

‎মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি)

গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির সকল পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন।

গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে সাড়ে সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবন থেকে বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালি শুরু হয়। র‍্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে একাডেমিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

পরে দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা  হয়। সেখানে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এবং আহতদের জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এছাড়া বিকেল সাড়ে ৫টায় মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংগীত, কবিতা ও নাট্য পরিবেশনা এবং বিখ্যাত ব্যান্ডদল ‘কুঁড়েঘর’ গণআন্দোলনের চেতনা তুলে ধরে গান পরিবেশন করেন।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় (রবি)

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আত্মাহুতি দানকারী আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধসহ সব বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী অ্যাকাডেমিক ভবন-৩ এর শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। 

এরপর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. হাসান তালুকদার জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের কর্মসূচির শুভ সূচনা ঘোষণা করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাবলি নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুমন কান্তি বড়ুয়া, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমদ, প্রক্টর নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (হকৃবি)

দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, র‍্যালি এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

দিবসটির তাৎপর্য নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ। 

পরে বাদ জোহর ভাঙ্গাপুলে ভাদৈ মসজিদে গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহী কলেজে

সারা দেশের ন্যায় রাজশাহী কলেজেও পালিত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস। সকাল ৯টায়  রাজশাহী কলেজের উদ্যোগে প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে রাজশাহী শহরের সি অ্যান্ড বি মোড়ের উদ্দেশ্য র‍্যালি বের হয়। সি অ্যান্ড বি মোড়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে র‍্যালি শেষ হয়।

এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু. যহুর আলী, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইব্রাহীম আলী, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. সেরাজ উদ্দীনসহ বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)

দিবসটি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও জুলাই বিপ্লব প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ইবি প্রশাসন। এসময় প্রশানসের উদ্যোগে সম্পাদিত ‘জুলাই স্মৃতিকথা’ নামক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। 

এছাড়া জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার ও অতিথিদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। পরে টিএসসিসিতে জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা উদ্ধোধন করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন দৈনিক আমার দেশ প্রত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন। 

এ সময় জুলাই বিপ্লব প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যাপক ড.এমতাজ হোসেন, ইবি সাদা দলের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড.  ফারুকুজ্জামান খান, ইউট্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন, গ্রীন ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. শহীদ মুহাম্মদ রেজওয়ান উপস্থিত ছিলেন। ধর্মত্বত্ত অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি উপস্থিত ছিলেন। 

অন্যদিকে, আলোচনা সভায় ইবির স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়েছে ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নেতারা।

ছাত্র নেতারা জানান, যারা স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনকে জঙ্গি কার্যক্রম হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা হত্যাকাণ্ডের পক্ষে ছিল তাদের সঙ্গে কোনো আপোষ করা চলবে না। এক সপ্তাহের মধ্যে বিচার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন, শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান, ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এসএম সুইট, ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি নুর আলম ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত, জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার সভাপতি ও  বাংলাদেশ খেলাফতে ছাত্র মজলিশ ইবি শাখার সভাপতি।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি)

বেলা ১১টায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল-আওয়ালের নেতৃত্বে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিজয় র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‎বুধবার (৫ আগস্ট) এ র‍্যালির আয়োজন করা হয়। র‍্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা অতিক্রম করে কনভেনশন হলে গিয়ে শেষ হয়।

‎এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান, রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম ও জুলাই অভ্যুত্থান বর্ষপূর্তির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। 

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)

শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিজয় শোভাযাত্রা, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, আলোচনা সভা, শহীদ পরিবারকে সম্মাননা প্রদান, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, ভিডিও প্রদর্শনী, দেয়ালিকা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নোবিপ্রবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস। 

দিবসটির সূচনা হয় শহীদ মিনারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাঈল-এর নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিজয় শোভাযাত্রা বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

এরপর বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাঈল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ, অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর সরকার। সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক।

এছাড়াও নোয়াখালীর ২৩ শহীদ পরিবারকে উপহার, অনুদান ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)

সকাল ১০টা থেকে পতাকা উত্তোলন, বিজয় র‌্যালি, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, আলোচনা সভা, কেক কাটা, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫ উদযাপন করা হয়েছে। 

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ।

যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুনের সভাপতিত্বে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও রিজেন্ট বোর্ড সদস্য অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ আসমা বেগম, রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. মো. ওমর ফারুক, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. রাফিউল হাসান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়াম্যান ড. মো. মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)

দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনার ও আলোচনায় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী। 

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, চবির সিন্ডিকেট সদস্য ড. আবুল কালাম আজাদ। প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেছেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী ও লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আমির মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
অনুষ্ঠানে আরো স্মৃতিচারণ করেন চবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার বাবা এবং শহীদ মো. ফরহাদ হোসেনের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া। 

সোমবার (৪ জুলাই) বিকাল সাড়ে চারটায় চবির শহীদ মিনার চত্বরে শাখা ছাত্রশিবিরের সাংস্কৃতিক সংগঠন দুর্নিবার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদের উদ্যোগে জুলাই দ্রোহে মুক্তির পয়গাম শীর্ষক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ও শহীদদের স্মরণে তারা এ আয়োজন করে।

এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্যাহ পাটওয়ারী এবং যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও তথ্য শাখার প্রশাসক ড. শহিদুল হক। এছাড়া, শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ পারভেজসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চবির ৬ আহত যোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে নাটিকা, গান-গজল, পুঁথি পাঠ, অভিনয়, কাওয়ালী সঙ্গীত ও কবিতা পরিবেশন করা হয়। 

এ সময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয় দুর্নিবার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদ, পারাবার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদ, কলরল থিয়েটার, চবি আবৃত্তি সংসদসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন।

অন্যদিকে, ইতিহাস বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী শহীদ ফরহাদ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে চবির শহীদ ফরহাদ হোসেন হল শাখা ছাত্রশিবির। সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলের সভা কক্ষে তারা এ আয়োজন করে।

ঢাকা/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়