রেলপথ অবরোধের পর ব্যাংক-ট্রেজারি অফিসে তালা দিলেন বাকৃবি শিক্ষার্থীরা
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, বাকৃবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
দ্বিতীয় দিনের আন্দোলন চলাকালে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর অবস্থিত পূবালী ব্যাংকের শাখায় তালা দেন বাকৃবি শিক্ষার্থীরা
হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জব্বারের মোড়ে রেলপথ অবরোধ করেন তারা। পরে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর পূবালী ব্যাংকের শাখা এবং ট্রেজারি ভবনে গিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলের সদস্য ও পশু পালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এ এইচ এম হিমেল বলেন, “গতকাল সোমবার সকালে আমরা ৬ দফার আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোন সাড়া নেই। তাই বাধ্য হয়ে দাবি আদায়ে রেলপথ অবরোধের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থাকা ব্যাংক এবং ট্রেজারি ভবনে তালা দিয়েছি। কারণ, আমাদের আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রম চলতে দেওয়া হবে না।”
ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী রুপায়ন বলেন, “সমস্যা সমাধানের কার্যকারী কোনো আশ্বাস আমরা প্রশাসনের থেকে পাইনি। এজন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, কোষাধ্যক্ষ ভবন এবং এর মধ্যে চলমান পূবালী ব্যাংকে তালা লাগিয়ে দিয়েছি। আমাদের সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কোনো রকম সরকারি কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয় চলতে দেওয়া হবে না।”
আন্দোলনরত পশু পালন অনুষদের অপর শিক্ষার্থী শিবলী সাদী বলেন, “আমরা আমাদের ছয় দফা দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমরা দ্রুত সমাধান চাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ূন কবীর বলেন, “কোষাধ্যক্ষ কার্যালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। সেখানে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীরা আমাদের বের করে দিয়েছেন। ফলে সবাইকে খুব সমস্যায় পড়তে হবে। শিক্ষার্থীরা আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করছেন তা অপ্রত্যাশিত।”
তিনি বলেন, “তারা ১০ ঘণ্টা বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। বিষয়টি নিয়ে আমরা মর্মাহত। তারপর বহিরাগতদের হামলা, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ। ছাত্রদের আন্দোলনে বিষয়টি এখন আমাদের হাতে নেই। জেলা প্রশাসন দেখছে।”
অধ্যাপক ড. হুমায়ূন কবীর বলেন, “আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাংবাদিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বসতে পারে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসা হয় কি না, এবিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তবে শিক্ষার্থীরা যা করছে, তা ভুল করছে। আমরা চাই, তারা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক।”
ভেটেরিনারি অনুষদ এবং পশু পালন অনুষদের ডিগ্রিকে একীভূত করে একটি কম্বাইন্ড ডিগ্রি দেওয়ার দাবিতে ২৫১ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে গত রবিবার দিনভর অবরুদ্ধ করে রাখাকে কেন্দ্র করে বহিরাগতরা হামলা করে শিক্ষার্থীদের। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ওইদিন রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা/মিলন/ লিখন/মাসুদ