ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নানা অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষককে ফেরাতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

যবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৮, ১৫ অক্টোবর ২০২৫  
নানা অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষককে ফেরাতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

বরখাস্ত হওয়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন (পিটিআর) বিভাগের শিক্ষক ড. ফিরোজ কবিরকে ফেরাতে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের সদস্য সচিব। তিনি জুলাই আন্দোলনে জুমার নামাজ পড়তে বাধা প্রদান, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারে নেতৃত্বদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হন।

আরো পড়ুন:

বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের নিচে পিটিআর বিভাগের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।

পিটিআর বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, ড. ফিরোজ কবির স্যার পিটিআর বিভাগের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া একজন শিক্ষক। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করায় আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। তাকে মব তৈরির মাধ্যমে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা ফিরোজ কবির স্যারকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত চাই, বিভাগে আলো চাই। তাছাড়া বিভাগে শিক্ষক সংকট, এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো মাথাব্যথা নেই।

এ সময় জুলাই আন্দোলন চলাকালে ড. ফিরোজ কবিরের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে বাধা প্রদানের অভিযোগ বানোয়াট দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভাগটির এক শিক্ষার্থী বলেন, “ফিরোজ কবির স্যার এমনিতেই নীল দলের সদস্য সচিব। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কয়জন আওয়ামী তোষণ করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম। এর বাইরে জুলাই বিপ্লবের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে নামাজে বাঁধা প্রদান করাটা খুবই স্পর্শকাতর একটি বিষয়। এটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের জুমার নামাজ রাস্তায় পড়াসহ এ সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর আগেই ভাইরাল হয়েছিল। আমি তার ছাত্র হলেও এর বিচার চাই।”

পিটিআর বিভাগের অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে তপু ইসলাম নামে যবিপ্রবির ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “অনেক শিক্ষার্থীর মনে প্রশ্ন জাগে, কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তন আসে না? কেন দুর্নীতিগ্রস্ত রাঘব বোয়ালদের কখনো শাস্তির আওতায় আনা হয় না? হয়তো এখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর ধীরে ধীরে পাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো, জুলাই আন্দোলনের সময় যে মানুষটা মসজিদে নামাজ পর্যন্ত পড়তে দেয়নি, যে ঘটনার চাক্ষুষ প্রমাণ ও ভিডিও প্রমাণ স্পষ্টভাবে রয়েছে, সেই ঘটনাকেই বলা হলো বানোয়াট। কিন্তু যখন নিজের সঙ্গে অন্যায় ঘটে, তখন তারাই আবার দেশকে দোষ দেয়, বাঙালি জাতিকে গালি দেয়।”

“যা হোক, আপনারা দুর্নীতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগের দোসরে বাঁচাতে যেয়ে, পুরো শিক্ষার্থীদের কাছে  ঘৃণিত হয়ে গেলেন। আশা করি আপনারা আপনাদের ভুল বুঝতে পারবেন,” যোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। 

এ বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, “ড. ফিরোজ কবিরকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই বরখাস্ত করেছে রিজেন্ট বোর্ড। এখানে কোনো মব বা কোনো প্রেশারে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”

তিনি বলেন, “একাডেমিক কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য পার্টটাইম শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য পিটিআর বিভাগের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। এছাড়া নভেম্বর- ডিসেম্বরের মধ্যে পিটিআর বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।”

গত ১৫ আগস্ট যবিপ্রবির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ১০৮তম সভায় জুলাই আন্দোলনে জুমার নামাজে বাধা প্রদান, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারে নেতৃত্বদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে নীল দলের সদস্য সচিব ড. ফিরোজ কবিরকে বরখাস্ত করে।

ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়